ইউরোপীয় ইউনিয়নের(ইইউ) উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলটি বুধবার রাঙামাটি পার্বত্যজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন।
ইইউ প্রতিনিধি দলটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কক্ষে সৌজন্য সাক্ষাত করতে গেলে এসময় তাদেরকে স্বাগত জানান পরিষদেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অংশি প্রু চৌধুরী। সাক্ষাতে প্রতিনিধি দলের হেড অব ডেলিগেশন এবং রাষ্ট্রদূত পিয়ারে মায়াউধন তাদের সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে পরিষদ চেয়ারম্যানকে অবগত করেন। এসময় তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পরবর্তী সময়ে ইউএনডিপির মাধ্যমে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে যে সমস্ত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সেগুলোর অগ্রগতি সম্পর্কে জানার জন্যে তাদের এ সফর। ২০১৫ সালে ইউএনডিপির বর্তমান কার্যক্রম শেষ হবে। এ ১০ বছরে ইউএনডিপির কার্যক্রমের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের সামগ্রিক জীবনযাত্রায় কি পরিবর্তন এসেছে এবং ভবিষ্যতে নতুন কার্যক্রম গ্রহণ করলে কি প্রভাব পড়বে এই বিষয়ে জানার এবং বুঝার জন্যে দাতা দেশগুলোর পক্ষে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর করছেন। তারা ভবিষ্যতে পুনরায় ইউএনডিপির মাধ্যমে কারিগরী শিক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রামে কাজ করবেন বলে তিনি জানান।
আলোচনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট উইনিংটন গিবসন,ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত হ্যানে ফুকলেক্যাসার, স্পেন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মিস কারিন মেকডোনাল্ড, ইতালীর রাষ্ট্রদূত মিস মারিও পালমা এবং ইইউ ডেলিগেশনের এ্যাটাশে ফেব্রিজিও অংশ নেন। তারা রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে সক্ষমতা, পরিষদগুলির কার্যপ্রণালী, হস্তান্তরিত বিভাগগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক এবং পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচনের ব্যাপারে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন।
পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী প্রতিনিধি দলকে বলেন, ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফ এবং রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন, প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন, কৃষি এবং পরিষদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যথেষ্ট অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। সিএইচটিডিএফ-এর অর্থায়নে পরিচালিত কমুনিটি হেলথ সার্ভিস ওয়ার্কার এর ৩৬৮টি পদ রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ৬৮টি স্কুল জাতীয়করণের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে এবং পরিষদের সক্ষমতা বৃদ্ধি হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির কারণে বিভিন্ন দাতাসংস্থা পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে এগিয়ে এসেছে। তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন, পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী ভূমি, পুলিশ পরিষদে হস্তান্তর এবং পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহের নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ জেলার প্রকৃত উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব।
তিনি এ জেলায় দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচি এবং সামগ্রীক আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা কামনা করেন। সাক্ষাতকালে এসময় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বুধবার থেকে দুদিনের সফরে ইইউ’র উচ্চ পর্যায়ের ১৫ সদস্যর প্রতিনিধি দলটি রাঙামাটি সফরে আসেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.