চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু হলো খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ২নং চেংগী ইউনিয়নে স্থাপিত চেংগী সারিবালা স্মৃতি কলেজের পথচলা।
এতে উপজেলার দুর্গম লোগাং, চেংগী ও পানছড়ি ইউনিয়নের উত্তর অংশের গরীব শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়ার সুযোগ পেল। পানছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমা গেল ১০জুলাই কলেজটির পথচলার পাঠদানের কার্যক্রম শুভ উদ্ধোধন করেন।
জানা যায়, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ৩৯জন শিক্ষার্থী নিয়ে বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছে। ১জন অধ্যক্ষ,১১ জন প্রভাষক, ১ জন অফিস সহকারী ও ৩ জন এমএলএসএস রয়েছেন এ কলেজে। ৩টি অফিস কক্ষ ও ৬টি শ্রেণি কক্ষসহ এল সাইজের অত্যাধুনিক কলেজ ক্যাম্পাস। দেখতে অনেকটা নয়নাভিরাম আর মনোমুগ্ধকর।
সরেজমিনে দেখা যায় শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠ দিচ্ছেন অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক রুবেল চাকমা। তিনি বলেন তারা সবাই নতুন। তাই সাধ্যমতো পাঠদানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষের সুনিদিষ্ট দিক নির্দেশনা রয়েছে।
কলেজের শিক্ষার্থী কাজী জুলি আক্তার, মাসুদা আক্তার, চুমকি চাকমা, প্রিয়সী চাকমা, তুকি চাকমাসহ জান্নাতুল ফেরদৌস জানায়, নতুন কলেজ। পাঠদান ভালো। কলেজটি বাড়ির পাশেই অবস্থিত। তাই নিয়মিত ক্লাশ করা যায়। আসা-যাওয়ার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এ আশায় এ কলেজে ভর্তি হয়েছি। আশাকরি আমাদের আশা পূরণ হবে। স্কুলের মতো নিয়মিত ক্লাশ হচ্ছে। মনে হচ্ছে না কলেজে পড়ছি। স্যারেরা খুবই আন্তরিকতার সহিত পাঠদান করছেন। তাঁদের আন্তরিকতায় আমরা মুগ্ধ।
খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বোধিসত্ব দেওয়ান এ কলেজের অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, আমার বয়স হয়েছে। এলাকাবাসীর অনুরোধে কলেজটি একটি অত্যাধুনিক কলেজ রুপে প্রতিষ্ঠা করে দিতে পারলে এখানাকার হাজার হাজার মানুষ সুশিক্ষার আলো পাবে এ আশা নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছেন। আশা করি সফল হতে পারবো।
তিনি আরো বলেন,পানছড়ি উপজেলার একটি মাত্র কলেজ রয়েছে। সেজন্য উপজেলা চেয়ারম্যানের একান্ত প্রচেষ্টার কারনে এ কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কলেজটি পানছড়ি ডিগ্রী কলেজ থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে। সম্প্রতি পানছড়ি ডিগ্রী কলেজটি সরকারীকরণ হয়েছে। সরকারী বিধি মোতাবেক পানছড়ি কলেজের আসন সংখ্যা সীমিত হবে। তখন শতশত শিক্ষার্থী কলেজে পড়া থেকে বঞ্চিত হবে। এ কলেজটি স্থাপিত হওয়ায় সরকারী কলেজে ভর্তি বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা এ কলেজে পড়ার সুযোগ পাবে এবং ভালো ফলাফল করতে পারবে। আমরা সঠিক নির্দেশনা মোতাবেক নিয়মিত পাঠদানের ব্যাবস্থা নিয়েছি যাতে মানসম্মত ও যথাযথ পাঠদানের মাধ্যমে আদর্শ কলেজ হিসেবে দ্রুত পরিচিতি লাভ করতে পারে।
কলেজ প্রতিষ্ঠিাতা, কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও পানছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমা বলেন, কলেজটি প্রতিষ্ঠার জন্য অনেকেই আর্থিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা কলেজটির ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন, আর্থিকভাবে আর ডিও লেটার দিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন।
তিনি কৃজ্ঞতা প্রকাশ করে আরো বলেন, স্থানীয় এমপির একান্ত সহযোগিতার কারনে কলেজটি ইতোমধ্যে পাঠদানের অনুমতি পেয়েছে। ফলে আগামী ২০১৮ সালে প্রথমবারের নিজ কলেজের নামে শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবো।
খাগড়াছড়ির মহাজন পাড়ার নিবাসী প্রমোদ রঞ্জন চাকমার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন তাঁর মায়ের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তিনি কলেজে ১৫ লাখ টাকা দান করেছেন। তাঁর মায়ের নামে কলেজটির নাম রাখা হয়েছে চেংগী সারিবালা স্মৃতি মহাবিদ্যালয়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.