খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার লোগাং বাজার ঘাট বালুমহালের ইজারাদারে ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে ক্ষতিমুখে আশেরপাশের বাগান ও কৃষি জমি। স্থানীয়দের দাবী শর্ত না মেনে বালু উত্তোলনের ফলে এলাকার ক্ষতি হচ্ছে। এতে অসহনীয় পরিস্থিতি ও অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এর সুরাহা কামনা করেছে।
নতুন এই বালু মহালটি ২০২২ সালে ভাবে অনুমোদন দেয়া হয়। এই বালু মহালের ইজারা পায় মেসার্স ফনি এন্টারপ্রাইজ। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক পানছড়ি উপজেলার ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী এক পরিবারের। বালু মহালটি ইজারা পাওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দুইটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। এবং এই বালুমহাল থাকে প্রতিদিন ১০-১৫টি ডাম্ব ট্রাকে (১০ চাকার ট্রাক) করে বালু নেয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি ওই বালুমহাল ঘুরে দেখা গেছে, দুইটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ড্রেজার মেশিন দিয়ে লোগাং ছড়া থেকে বালু উত্তোলনের কাজ করছে শ্রমিকরা। অপদিকে দুইটি স্কেভেটর দিয়ে (আরো দুইটি স্কেভেটর মজুদ রাখা হয়েছে। মোট চারটি স্কেভেটর) ডাম্ব ট্রাকে বালু তোলা হচ্ছে। লোগাং ছড়ার যে স্থান থেকে বালু তোলা হচ্ছে, সেখানে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ছড়ার আশেপাশের জমি ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। লোগাং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জয় কুমার চাকমা, উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান চন্দ্রদেব চাকমা ও স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন বালু তোলার কারণে অন্তত ২০-২৫ টি পরিবার ভাঙনের সন্মুখীন হয়েছে। বালুমহালে ট্রাক চলাচলের কারনে পার্শ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কেন্দ্রের কার্যক্রমে অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। লোগাং বাজারের মাঝখান দিয়ে এসব ট্রাক চলাচল করছে।
খাগড়াছড়ি পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এই বালু মহালটির আয়তন ১.৩৮ একর। কিন্তু এর তিন চারগুণ বেশী আয়তনের জায়গা থেকে বালু তোলা হচ্ছে। বালুমহাল অনুমোদনের আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে মতামত চাওয়া হয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড এই বালুমহাল থেকে অযান্ত্রিক (সনাতন) পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করা যেতে পারে বলে মতামত দেয়। আশেপাশের জমি ভাঙনের সন্মুখীন না হয় এমন শর্তে বালুমহাল ইজারা দেয়া হয়। কিন্তু ইজারাদার সেই শর্ত ভঙ্গ করে চলেছে।
পানছড়ি উপজেলার লোগাং ছড়াটি প্রাকৃতিকগত ভাবে খড় স্রোতা ছড়া। এই ছড়ায় কোথাও গভীর খাদ নেই। কিন্তু বর্তমান বালুমহাল এলাকাটি গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। বালুমহাল স্থানে ছড়ার গভীরতা এখন ১০ ফুটের বেশী। এ কারনে স্থানীয় লোকজন ভাঙনের আশঙ্কা করছেন।
ইজারাদারের পক্ষের লোক তৌহিদুল ইসলাম বলেন স্থানীয় জনগনের কথা বলে আর যাতে কোন ক্ষতি না হয় সে ব্যবস্থা করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এদিকে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, ইজারাদার যদি কোন শর্ত ভঙ্গ করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
---হিলবিডি২৪/সম্পদনা/এ,ই