রাঙামাটির বরকল উপজেলার ১৭টি সরকারী দফতরের মধ্যে ৮টি দপ্তরে কর্মকর্তা না থাকায় বর্তমানে দাপ্তরিক কর্মকান্ডে চরম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
সরকারী ৮টি দপ্তরে অন্য উপজেলার কর্মকর্তাদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে চালানো হচ্ছে দাপ্তরিক কর্মকান্ড। এতে একদিকে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মচারীরা যেমনি দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তেমনি সরকারী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার সাধারন মানুষ।
একাধিক সূত্রে জানা যায়,দীর্ঘ দিন ধরে বরকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সমাজ সেবা কর্মকর্তা,কৃষি কর্মকর্তা,প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী,উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার পদ খালি রয়েছে। বর্তমানে এসব দফতরে অন্য উপজেলার কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে চালানো হচ্ছে উপজেলার সরকারী কার্যক্রম। কর্মকর্তা না থাকায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মচারী ও এলাকার সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ।
সূত্র মতে,চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পদটি শুন্য রয়েছে। বর্তমানে জেলার সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার সুমনী আক্তারকে অতিরিক্ত দায়িত্বে রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বর্তমানে ওই কর্মকর্তা দুটি উপজেলার দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারী থেকে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদটি শুন্য রয়েছে। সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আলতাব হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
গত ২০১০ সালের আগষ্ট মাসে সমাজ সেবা কর্মকর্তা প্রীতিময় চাকমা বদলীর পরে কর্মকর্তার পদটি শুন্য রয়েছে। বর্তমানে জেলা সদর উপজেলার কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চাকমাকে অতিরিক্ত দায়িত্বে রাখা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা জেলা সদর,বরকল উপজেলা ছাড়া ও বিলাইছড়ি উপজেলার দায়িত্বে রয়েছেন।
গত ২০১৫ সালের মে মাসে কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ বাছিরুল আলম বদলী হওয়ার পর কর্মকর্তার পদটি শুন্য রয়েছে। সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুক্তা চাকমাকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে দপ্তরের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
গত ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ হুমায়ন কবির বদলির পর কর্মকর্তার পদটি শুন্য রয়েছে। বর্তমানে ভেটেরিনারী সার্জন পলি রানী ঘোষ কে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
গত ২০১৫ সালের মাসে উপজেলা প্রকৌশলী খন্ডকার মাহমুদুল আশরাফ বদলির পরে উপজেলা প্রকৌশলীর পদটি শুন্য হয়। বর্তমানে সহকারী প্রকৌশলী এসএম মাহাবুবুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
এর পরে বিগত ২০০২ সালের জুলাই থেকে উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তার পদটি শুন্য রয়েছে। বর্তমানে জেলার উপ-পরিচালক মানবেন্দ্র নারায়ন দেওয়ান অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। ওই কর্মকর্তা বরকল উপজেলা ছাড়া ও জেলার সদর উপজেলা,কাপ্তাই, জুরাইছড়ি,বিলাইছড়ি,কাউখালী রাজস্থলী ও নানিয়ারচর উপজেলা সহ ৯টি উপজেলায় এক কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া উপজেলায় কোন মৎস্য অফিস না থাকায় জুরাইছড়ি উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা দীপন চাকমাকে উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে দপ্তরের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নিবার্হী অফিসার সুমনী আক্তার জানান, বরকল উপজেলায় যোগাযোগের দূর্গমতা ও সুযোগ সুবিধা না থাকার কারণে কোন কর্মকর্তা আসতে চান না। কোন কারণে আসলেও নানান তদবীর করে বদলী হয়ে চলে যান। কর্মকর্তাদের সুযোগ-সুবিধা থাকলে দফতর গুলোর শুন্যতা পূরণ করা সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.