পর্যটন নগরী রাঙামাটি শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবেই পরিচিত বৃহত্তর বনরুপার ৭নং ওয়ার্ডকে মাদকমুক্ত ঘোষনা করেছেন ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ও প্যানেল মেয়র জামাল উদ্দিন। এধরনের প্রসংশনীয় কাজের জন্য প্যানেল মেয়রকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞা জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
জানা যায়, মাদককে না বলুন, মাদককে ঘৃণা করুণসহ বিভিন্ন শ্লোগান নিয়ে রাঙামাটি পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে স্থানীয়দের সহযোগিতায় দিন-রাত মাদক বিক্রি হয় এমন এলাকাগুলোতে স্থানীয় বাসিন্দারা বিভিন্ন অভিযান ও এলাকাতে প্রবেশ মুখে অবস্থানের মাধ্যমে, মাদক ব্যবসা বন্ধ ও মাদকসেবীদের বিতাড়িত করেছেন। এলাকার মাদকব্যবসায়িরা ঘর ছাড়া হয়ে রয়েছেন অনেক দিন ধরে। এমনকি মানবসেবীরাও আর আসতে পারছে না এলাকায়।
স্থানীয়দের সাথে নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে এই গ্রহীত পদক্ষেপ নেওয়ার পর এখন মাদকসেবী ও মাদক বিক্রেতাদের আনাগোনা নেই, এমন দাবি করে ওয়ার্ডটিকে ‘মাদকমুক্ত’ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছেন ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ও প্যানেল মেয়র জামাল উদ্দিন।
সূত্র মতে, ৭নং ওয়ার্ডটির ধোপা পাড়াসহ আশেপাশের বিভিন্ন অলিতে-গলিতে বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পয়েন্টে মাদক ব্যবসা ও মাদকসেবীদের উৎপাতে এলাকাটি ছিল জনগণের অস্থিরতায় ভরপুর। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিন অভিযোগের পর প্রশাসনিকভাবে বিভিন্ন ধরনের সাড়াশি অভিযান ও ব্যবস্থা গ্রহন নেওয়া হলেও পুরোপুরি এলাকাটিতে মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে পারেনি প্রশাসন।
সম্পতি সাংবাদিক ও সুশীল সমাজদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায়, রাঙামাটিতে নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশীদ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ও মাদকের ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাড়ানোর আহব্বার জানিয়েছেন।
এধরনের প্রসংশনীয় কাজের জন্য প্যানেল মেয়রকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞা জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। ৭নং ওয়ার্ডের ধোপাপাড়ার বাসিন্দা জাহিদ জানান,দিনরাত তারা আতঙ্কে থাকতেন। মাদকসেবীদের কারণে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে ভয় করতো। এলাকার মানুষ রাতে ঘুমাতে পারতো না মাদকসেবীদের হড্ডগোলের কারণে। প্রায় দিন রাত পাড়াটিতে উচ্চস্বরে কথা এবং মারামারি লেগেই থাকতো। এছাড়া অনেকে মোটর বাইক নিয়ে অকারণে হরণ বাজাতো, এতে করে এলাকার বৃদ্ধ লোক ও বিভিন্ন স্কুল কলেজে পড়া ছেলে মেয়েদের সমস্যা সৃষ্টি হতো। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করার পর তারা এ সব সমস্যা থেকে এখন মুক্তি পেয়েছেন।
একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর জানান, আগে ধোপাপাড়া ও এর আশেপাশে স্থানগুলোতে মাদক ব্যবসা ও মাদকসেবীদের উৎপাত ছিল। এ নিযে অনেক বছর যন্ত্রণা পেয়েছেন। কিন্তু এখন তাদের পৌর প্যানেল মেয়রের নেতৃত্বে অভিযানের মাধ্যমে এই মাদক ব্যবসা বন্ধ হওয়ার পর থেকে এ যন্ত্রণাময় জনজীবন থেকে আমরা পরিত্রাণ পেয়েছেন।
ধোপা পাড়ার বাসিন্দা সেলিম জানান,তিনি ৭নং ওয়ার্ডের ধোপা পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা। এলাকায় মাদকসেবি ও মাদক ব্যবসায়িদের আখড়া ছিলো । তারা প্রতিদিন এখানে মাদকসেবন করে বিশৃঙ্খলা করতো। অতিষ্ট ছিলাম তাদের কর্মকান্ডে, কিন্তু আমাদের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র জামাল উদ্দীন ও তার সহযোগীদের পদক্ষেপ নেওয়ার পর থেকে এখন আর মাদকসেবী ও ব্যবসায়িরা ডুকতে পারে না। এতে করে তারা এখন শান্তিতে বসবাস করছি। কারণ এখন আর মাদকসেবীরা এখানে আসতে পারে না। আর যারা মাদক ব্যবসা করে তারা এখন গৃহহারা।
মাদক নিয়ন্ত্রণ কাজে নিযুক্ত থাকা জাবেদ উদ্দিন জানান, তারা এলাকাগুলো মাদকমুক্ত রাখার জন্যে প্রতিদিন পাহারা দিচ্ছেন। মাদকসেবীরা এলাকার প্রবেশমুখে তাদের অবস্থান দেখে পিছু হাটতো। প্যানেল মেয়রের নেতৃত্বে বর্তমানে এলাগুলো এখন মাদক মুক্ত।
রাঙামাটি পৌর প্যানেল মেয়র ও ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার জামাল উদ্দিন বলেন, ৭নং ওয়ার্ডের ধোপা পাড়া এলাকায় সুমন ও সজল নামের দুই মাদক ব্যবসায়ির জন্যে ধোপা পাড়ার এলাকার মানুষ অতিষ্ট ছিল। এরা এলাকায় মাদক ব্যবসা করে এবং এদের কারণে এলাকায় মাদকসেবীদের আনাগোনা ছিল। এমতাবস্থায় এলাকার কিছু তরুণ যুবকদের সাথে নিয়ে এলাকায় অবস্থান নেয়া হয়। দিন রাত এখানে পাহাড়া দেয়া হয় এলাকার মানুষদেরকে সাথে নিয়ে। সবাইকে সচেতন করার মাধ্যমে এলাকার মানুষ এখন ভয় না পেয়ে প্রতিরোধ করা শুরু করেছেন। এতে করে সম্পূর্ণ ৭নং ওয়ার্ডের মানুষ এখন সচেতন হয়েছে এবং এ ওয়ার্ডে মাদক মুক্ত ওয়ার্ড হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে। এখন সকলের সহযোগিতায় এলাকাগুলো মাদক মুক্ত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, শুধু মাদক নিয়ে থাকলে হবে না। এলাকায় অহেতুক ঘোরাফেরা এবং অসামাজিক কাজ করতে দেখলেই তাদের ধরা হবে এবং তাদের আইনে সোপর্দ করা হবে। া জঙ্গিবাদ, মাদক, ইভটিজিং এর ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তিনি এলাকার সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে আহবাবন জানান।
তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জঙ্গিবাদ, মাদক ও ইভটিজিং এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলেই রাঙামাটি জেলাকে একটি সুন্দর পর্যটন নগরী ও সমৃদ্ধ জেলায় রূপ দেয়া সম্ভব হবে। আমরা কেউ যেন কারো অনৈতিক সুপারিশ না করি। মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে প্রতিটি কাউন্সিলারের উদ্যোগে সহযোগিতা করতে প্রত্যেক শ্রেণির নাগরিককে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.