পার্বত্য চট্টগ্রামের বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা জুম ফাউন্ডেশন রাঙামাটিতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের আত্ম-সামাজিক উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, জুম ফাউন্ডেশন হচ্ছে একটি সৃজনশীল ও প্রতিশ্রুতিশীল সমাজসেবী ও উন্নয়ন কর্মীর সমন্বয়ে গঠিত একটি স্বেচ্ছাসেবী ও অলাভজনক সংগঠন। এটি মূলতঃ এলাকার পশ্চাদপদ ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সহায়ক ভুমিকা রাখার লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করে। সূত্র জানায়, জাতীয় পর্যায়ের উন্নয়ন সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এর “ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ টু প্রোমোট ট্রান্সফরমিং অফ ইয়াং ওমেন (দীপ্ত)” প্রকল্পের আওতায় সংস্থাটি দলীয়ভাবে নারীদের “দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ” প্রদান করে আসছে। দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি দলীয় সভায় মানবাধিকার সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সমন্বিত উদ্যোগ হিসেবে মানবাধিকার ও তথ্য অধিকার বিষয়ে সম্যক ধারণা দেওয়া হয়। দেশের সকল নাগরিকের জন্য মানবাধিকারের বিষয়ে জাতিসংঘের সার্বজনীন ঘোষনা সম্পর্কে দলীয় সভায় আলোচনা করা হয়। প্রশিক্ষণ প্রদানের প্রাক্কালেও প্রশিক্ষনার্থীদের আগ্রহ ও সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অধিকার বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখা হয় এবং প্রশিক্ষন গ্রহণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্যক ধারণা দেয়ার প্রচেষ্টা করে চলেছে জুম ফাউন্ডেশন। জুম ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সুজল কান্তি চাকমা জানান, দীপ্ত প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা সম্ভব হয়েছে। প্রকল্পের পরিকল্পনা ও লক্ষ্যানুযায়ী দল গঠনের মধ্য দিয়ে চাহিদানুসারে বিষয় নির্বাচন করে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ আরম্ভ করা হয়েছে। পরিকল্পনানুসারে আমাদের সেলাই ৬০ জন, ব্লক বাটিক ৮০ জন এবং মাশরুম ৪০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। লক্ষ্যমাত্রানুসারে দলীয় ভিত্তিতে উপকারভোগীদের সেলাই ও ব্লক বাটিক প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু করা হয়। কিন্তু চাহিদার তুলনায় তা অত্যন্ত অপ্রতুল। প্রশিক্ষণের বিষয়সমুহ নতুন ও চাহিদানুসারে এলাকায় সময়োপযোগী হওয়ায় প্রশিক্ষণ শুরুর করার পর সেলাই ও ব্লক বাটিক উভয়ই বিষয়ে অধিকাংশ উপকারভোগী প্রশিক্ষন দেয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, এ ধরনের প্রশিক্ষণ নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালনে অত্যন্ত সহায়ক হবে এবং আরও নতুন নতুন বিষয় নির্বাচন করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের “দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ” প্রদানের মধ্য দিয়ে নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করা সম্ভবপর হবে। বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুমিতা চাকমা বলেন, সংস্থাটি এ উপজেলায় উপজেলা পরিষদের সাথে সমন্বয় রেখে এ এলাকায় আত্ম-সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। তার মতে, সংস্থাটি মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এর দীপ্ত প্রকল্পের সহায়তায় নারীদের ‘দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ’ প্রদানের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে অবদান সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে। তাই, প্রকল্পভুক্ত নারী দলসমুহকে আরও গতিশীল ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে উপজেলা পরিষদ থেকে জুম ফাউন্ডেশন-এর চাহিদা মোতাবেক প্রতি দলের জন্য একটি করে ৯টি দলের জন্য ৯টি, একজন প্রতিবন্ধী প্রশিক্ষনার্থীর জন্য ১ টি এবং ২ জন বিধবা প্রশিক্ষনার্থীর জন্য ২টি সেলাই মেশিন বরাদ্ধ প্রদান করা হয়েছে।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.