রাঙামাটির ২৯৯ নং আসনের নির্বাচিত সাংসদ উষাতন তালুকদার পার্বত্যাঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে পার্বত্য চুক্তির যথাযথভাবে বাস্তবায়নের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, শুধু খেতে না পাওয়ার কারণে আপনারা( পাহাড়ী শ্রমিক) চট্টগ্রামে এসেছেন তা নয়, পার্বত্যাঞ্চলের বিরাজমান সমস্যার কারনে আপনাদের এখানে আসতে হয়েছে। পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন হয়েছে কিন্তু এখনো পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলোর মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদকে ক্ষমতায়ন,স্থানীয় প্রশাসন, জেলা পরিষদ ক্ষমতায়ন কোন টিরই এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি।
শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দরস্থ পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের এক যুগ পূর্তি অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৩৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন।
পরে সমাবেশে পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের সভাপতি সুমন চাকমার সভাপতিত্বে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ এর প্রতিনিধি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ চট্টগ্রাম মহনগরের উপদেষ্টা মন্ডলী সদস্য শেখ মো. ইছহাক মিয়া, ব্যারিস্টার কলেজের অধ্যক্ষ এহতেশামুল হক,বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা,পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়কারী শরৎ জ্যোতি চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম,কক্সবাজার জেলার সাধারণ সম্পাদক মংথেনহ্লা রাখাইন, ব্যারিস্টার কলেজ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ইব্রাহিম খলিল বাদশা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চাকমা,পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের সহ-সভাপতি পূর্ণ বিকাশ চাকমা, শান্তি রানী চাকমা ও সাংগঠনিক সম্পাদক দিশান তনচংগ্যা প্রমুখ।
এর আগে পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে বর্নাঢ্য র্যালী বের করা হয়। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার এমপি আরো বলেন, শহরে বাস করতে হলে অনেক অর্থের প্রয়োজন। তাই মালিক পক্ষ যাতে শ্রমিকদের সুবিধা প্রদান করে তার জন্য সকলকে সচেতন থাকতে হবে। শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করার জন্য তিনি জাতীয় সংসদে কথা বলার প্রতিশ্রুতি দেন।
উদ্বোধকের বক্তব্যে জিয়াউল হক সুমন বলেন, তিনি দীর্ঘ সময় ধরে পাহাড়ী শ্রমিকদের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন এবং আগামীতেও এই সর্ম্পক বজায় থাকবে।
ব্যারিস্টার কলেজের অধ্যক্ষ এহতেশামুল হক বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ তাদের অধিকার আদায় করেই নেবে। তারা সংগ্রাম করছেন। তিনি আশা করেন সরকার চুক্তি করেছে এবং বাস্তবায়নও করবে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলের পাহাড়ী মানুষ বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়িত হচ্ছে না। চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। যত দিন পাহাড়ী মানুষের অস্তিত্ব থাকবে তত দিন চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সংগ্রাম চলতে থাকবে।
বক্তারা আদিবাসী শ্রকিমসহ শ্রমজীবী মানুষের জীবনের সার্বিক নিরাপত্তা বিধান ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের লড়াই সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।
সভা শেষে সুমন চাকমাকে সভাপতি,অনিল বিকাশ চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক এবং দিশান তনচংগ্যাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.