প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় রাঙামাটির পর্যটনের ঝুলন্ত সেতু ১ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফলে পর্যটন ঝুলন্ত সেতুর সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে না পারছেন না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সপ্তাহব্যাপী প্রবল বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাঙামাটির পর্যটন ঝুলন্ত সেতুটি গত রোববার সন্ধ্যা থেকে এক ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে সোমবার সকাল থেকে পর্যটকদের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পর্যটন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সেতুর রক্ষার্থে ও দুর্ঘটনা থেকে এড়াতে সেতুর দুই পার্শ্বে প্রবেশ পথে গাছের ঢাল দিয়ে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ও লাল পতাকা চিহৃ দিয়ে সতর্ককতা জারী করা হয়েছে। সোমবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কিছু কিছু পর্যটক ঝুলন্ত সেতুর সৌর্ন্দয্য উপভোগের জন্য সেখানে গেলেও তারা পানিতে ডুবে যাওয়া সেতু দেখে বিমুখ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
এদিকে,টানা বর্ষনে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হ্রদের পাশ্ববর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি পাহাড়ী ঢলের তোড়ে ভেসে আসা কচুরীপানার স্তুপে হ্রদে নৌ চলাচল মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, পাকিস্তান শাসনামলে ১৯৬০ সালের দিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে জল বিদ্যূৎ প্রকল্প স্থাপিত হয়। এ প্রকল্প স্থাপনের জন্য কর্নফূলী নদীর উপর বাঁধ দেয়ার ফলে ২৫৬ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে বিশাল জলধারা সৃষ্টি হয় । মানব সৃষ্ট দক্ষিন-পুর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ এ হ্রদ সৃষ্টির ফলে পার্বত্য এলাকায় ৫৪ হাজার কৃষি জমি পানিতে ডুবে যায়। এ বাঁেধর কারণে এক লক্ষের বেশী লোকজন উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়। পরবর্তীতে ৭০ দশকের শেষের দিকে সরকার রাঙামাটি জেলাকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষনা এবং পর্যটন কর্পোরেশন পর্যটকদের সুবিধার্থে আকর্ষনীয় স্পট স্থাপন করে। এর মধ্যে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য দুই পাহাড়ের মাঝখানে তৈরী করা হয় আকর্ষনীয় ঝুলন্ত সেতু। এই ঝুলন্ত সেতুর পূর্বের দিকে তাকালে দেখা মিলে অপূর্ব স্বচ্ছ জলরাশিসহ ছোটবড় বি¯তৃর্ন নৈসর্গিক সবুজ পাহাড়।
সরকারী পর্যটন কর্পোরেশন রাঙামাটির ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝুলন্ত সেতুটি পুরো পুরি পানিতে ডুবে আছে। তাই পর্যটকদের জন্য এই সেতুর উপর পাড়াপাড় সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। দুই পাশে লাল পতাকা দিয়ে সতর্ককতা জারী করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যাওয়ার কারণে টিকিট বিক্রি বন্ধ করা হয়েছে। হ্রদে পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে সেতুর পাতাটন চলাচলের উপযোগী কিনা তা পরীক্ষানীরিক্ষা করে পর্যটকদের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
তিনি আরও জানান, গত ঈদের ছুটিতে শুধুমাত্র এ পর্যটন ঝুলন্ত সেতু থেকে টিকিট বিক্রি করে তিন লাখ টাকার অধিক রাজস্ব আয় হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.