টানা ভারী বর্ষনে ও সীমান্তের ওপাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় রাঙামাটির সিম্বল অফ খ্যাত পর্যটনের সেতুটি ঝুলন্ত সেতুটি পানিতে ডুবে গেছে। বুধবার সকালের দিকে সেতুর পাটাতন থেকে প্রায় চার ইঞ্চি পানি উঠায় পর্যটন কর্তৃপক্ষ সেতুর উপর দিয়ে চলাচলের জন্য সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা আকর্ষনীয় ঝুলন্ত সেতুর সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে বঞ্চিত হচ্ছেন।
পর্যটন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৭০ দশকের শেষের দিকে সরকার রাঙামাটি জেলাকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষনা করে। ১৯৮৪ সালের দিকে পর্যটন কর্পোরেশন পর্যটকদের সুবিধার্থে ও মনোরঞ্জনের জন্য দুই পাহাড়ের মাঝখানে তৈরী করে আকর্ষনীয় এ ঝুলন্ত সেতু। এ ঝুলন্ত সেতুর পূর্বের দিকে তাকালে দেখা মিলে অপূর্ব স্বচ্ছ জলরাশিসহ ছোটবড় বি¯তৃর্ণ নৈসর্গিক সবুজ পাহাড়। গত কয়েক দিনে টানা ভারী বৃষ্টিপাতে ও সীমান্তের ওপাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঝুলন্ত সেতুটি প্রায় চার ইঞ্চি পানিতে ডুবে গেছে। এতে ঝুকি এড়াতে বুধবার সকাল থেকে পর্যটকদের চলাচলের জন্য সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে পর্যটন কর্তৃপক্ষ। অনেক পর্যটক সেতুতে ভ্রমনে আসলেও সেতুর উপর পানি উঠায় ফিরে যাচ্ছেন। এতে অনেকে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তাদের দাবি প্রতি বর্ষা মৌসুমের সময় ঝুলন্ত সেতুটি পানিতে ডুবে যায়। বর্ষা মৌসুমে ঝুলন্ত সেতুর সৌন্দর্য্য উপভোগ করাটা আলাদা মজার ব্যাপার। তাই পর্যটকদের চলাচল ও সৌন্দর্য্য উপভোগ করার স্বার্থে সেতুটি আরো উচ্চতা বাড়িতে সেতুটি নির্মাণ করা উচিত।
এদিকে, ভারী বৃষ্টিপাতে ও সীমান্তের ওপাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদের পানি উচ্চতা রয়েছে ১০৫.৫৪ ফুট মিন সী লেভেল (এমএসএল)। হ্রদে বর্তমানে রুককার্ভ অনুযায়ী পানি থাকার কথা রয়েছে ৮৮ এমএসএল। হ্রদে সর্বোচ্চ পানি ধারণ ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট এমএসএল। ১০৮ ফুট এমএসএলে পৌঁছালে ঝুঁকি হিসেবে ধরা হয়। বর্তমানে ৫টি ইউনিট থেকে ২২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্নফুলি পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প।
রাঙামাটি সরকারী পর্যটন কমপ্লেক্সে ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, হ্রদে পানির উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে পর্যটনের ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন থেকে প্রায় চার ইঞ্চি পানিতে ডুবে গেছে। তাই উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সেতুর উপর দিয়ে চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে পানি কমে গেলে পর্যটকদের চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। তিনি আরো জানান, পর্যটনের ঝুলন্ত সেতু পর্যটকদের ভ্রমনে বন্ধ থাকায় আবার পর্যটনের অব সিশন থাকায় সবমিলিয়ে প্রতিদিন পর্যটনে আট থেকে দশ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.