ঈদের ছুটিতে রাঙামাটির সবকটি পর্যটন স্পট এখন পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, পবিত্র ঈদ-উল-আযহার ছুটি থাকায় এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক বিরাজ করায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে রাঙামাটির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে দল বেধে ছুটে আসছেন। ঈদের দিন ও ঈদের পরদিন বৃষ্টিপাতের কারণে রাঙামাটির পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকের সংখ্যা কিছুটা কম ছিল। কিন্তু ঈদের তৃতীয় দিন থেকে রাঙামাটির পর্যটনের ঝুলন্ত সেতু থেকে অন্যান্য বেসরকারী পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের পদাভারে মূখরিত হয়ে উঠেছে। সোমবার সরকারী পর্যটন স্পট ঝুলন্ত সেতু ও ডেয়ারপার্কে গিয়ে দেখা গেছে সব বয়সী পর্যটকরা পরিবার কিংবা প্রিয়জনদের সাথে নিয়ে ঘুরাফেরা ও আনন্দ পূর্তিতে মেতে উঠেছেন। পর্যটকদের আগনকে কেন্দ্র করে পর্যটন এলাকায় স্থানীয়ভাবে তৈরী প্লাষ্টিকেরসহ অনান্য খাবারের দোকানের পসরা বসানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি জেলায় কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টি হওয়ার কারণে রাঙামাটিতে গড়ে উঠে আকর্ষনীয় পর্যটন স্পট। সত্তর দশকের শেষের দিকে সরকার রাঙামাটি জেলাকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষনা এবং পর্যটন কর্পোরেশন পর্যটকদের সুবিধার্থে আকর্ষনীয় দুই পাহাড়ের মাঝখানে তৈরী করা হয় আকর্ষনীয় ঝুলন্ত সেতু। এছাড়া পর্যটকদের জন্য আকর্যনীয় স্পট হিসেবে রয়েছে শুভলং এর মনোমুগ্ধকর ঝর্ণা, রাজ বন বিহার, পেদা টিং টিং, জেলা প্রশাসনের বাংলো, বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধি সৌধ, বালুখালী কৃষি খামার, টুক টুক ইকোভিলেজ এবং আদিবাসী শান্ত সবুজ গ্রাম ও তাদের জীবনযাত্রা।
এদিকে, শহরের হোটেল-মোটেল ও গেষ্ট হাউসগুলোতে অধিকাংশ রুম বকুড রয়েছে। গত বছর রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ঈদের ছুটিতে পর্যটকের সংখ্যা কম হলেও এ বছর পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে বর্যা মৌসুমে রাঙামাটির অন্যতম পর্যটন স্পট শুভলং ঝর্ণায় সেই আগের রুপ ফিরে পাওয়ায় সেখানে পর্যটকদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
ঢাকা থেকে রেজাউল করিম সুমন, আজাদসহ অনেক পর্যটক জানিয়েছেন রাঙামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উভভোগ করতে পেরে তারা খুবই আনন্দিত। তবে রাঙামাটি পর্যটন স্পটগুলোতে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে আরও পর্যটনের অবকাঠামো সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করা দরকার।
চট্টগ্রাম থেকে আসা হাবিুল ইসলাম, জাহিদ ও আলমসহ অনেক পর্যটকরা অভিযোগ করেছেন, কাপ্তাই হ্রদে নৌ ভ্রমনের জন্য কান্ট্রি বোটের অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে। অনেকের পক্ষে অতিরিক্ত ভাড়ার জন্য হ্রদে নৌ ভ্রমনের ইচ্ছা থাকা সত্বেও তাদের সম্ভব হচ্ছে না। পর্যটন ঝূলন্ত সেতুর প্রবেশের টিকিটের মূল্য বৃদ্ধি করা হলেও পর্যটকদের কোন সুযোগ-সুবিধা নেই বলে অনেক পর্যটক অভিযোগ করেছেন।
রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স নৌ ঘাটের ম্যানেজার রমজান আলী জানান, বৃষ্টির কারণে পর্যটক কম ছিল। তবে ঈদের দ্বিতীয় দিনে প্রচুর পর্যটক এসেছেন। ইতোমধ্যে অনেক পর্যটক বোট ভাড়া করে নৌভ্রমনে বেরিয়েছেন। আশা করা যাচ্ছে দুএকদিনের মধ্যে আরও পর্যটকরা ঘুরতে আসবেন।
রাঙামাটি সরকারী পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স-এর ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান,যে কোন বছরের তুলনায় এ বছর রাঙামাটিতে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটকের আগমণ ঘটেছে। সোমবার থেকে রাঙামাটির অন্যতম পর্যটন স্পট ঝুলন্ত সেতুসহ সবকটি পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের পদাভারে মখূরিত হয়েছে উঠেছে। তিনি আরো জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমানের পুলিশী নিরাপত্তা রয়েছে। এছাড়া বোটে নৌ ভ্রমনের আগে পর্যটকদের লাইফ জাকেট সাথে রাখাসহ ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিমহূর্তে মাইকিং-এর মাধ্যমে সর্তকতা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.