খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি মিলনপুর বন বিহারে মাস ব্যাপী আকাশ প্রদীপি প্রজ্জ্বলনের সমাপনী অনুষ্ঠান শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এই উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯ টায় ধর্মীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সারাদিন ব্যাপি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিলো সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, বুদ্ধ মূর্তি দান, হাজার প্রদীপ দান, ফানুস প্রদীপ দান ও ভিক্ষু সংঘকে পিন্ড দান সহ বিবিধ দান। এছাড়া বিকাল ৩ টার সময় হাজার বাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্যে দিয়ে মাস ব্যাপী আকাশ বাত্তি প্রজ্জ্বলনের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন সংঘ প্রধান শ্রীমৎ ভদন্ত ধর্মতিষ্য মহাস্থবির, মিলন পুর বন বিহারাধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভদন্ত ধর্মতিষ্য মহাস্থবির, প্রধান উপাসক মহালছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কান্তি চাকমা সহ বিভিন্ন এলাকার শত শত ধর্মপ্রান দায়ক-দায়িকারা।
উল্লেখ্য, গেল ১৩ নভেম্বর মহালছড়ি মিলনপুর বন বিহারের দায়ক-দায়িকাদের আয়োজনে এই বাত্তি প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রতি বছর কঠিন চীবর দানোৎসব শেষে কার্তিকী পূর্ণিমা থেকে পরবর্তী পূর্ণিমা পর্যন্ত এক মাস ব্যাপী প্রতিদিন এই বাত্তি প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠান হয়।
কথিত আছে সিদ্ধার্থ গৌতম গৃহত্যাগ করার পর অনোমা নদীর তীরে এসে পৌঁছলে সেখানেই এক হাতে নিজের চুল ও অন্য হাতে তলোয়ার ধরে চুল কেটে পেলেন এবং অধিষ্ঠান করলেন যে যদি এই জন্মে বুদ্ধ হতে পারি, তাহলে আমার চুল আকাশে নিক্ষেপ করা হলে আকাশে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকুক, মাটিতে আর পতিত না হোক। এই অধিষ্ঠান করে তিনি তার কর্তিত চুল আকাশে নিক্ষেপ করে দিলেন। অন্য দিকে দেবরাজ ইন্দ্র সিদ্ধার্থ গৌতমের মনের অবস্থা জানতে পেরে সেখানে উপস্থিত হয়ে সিদ্ধার্থের কর্তিত চুল স্বর্ণের ঝুড়িতে করে নিয়ে গেলেন তাবতিংস স্বর্গে। সেখানেই চুলকে নিয়ে তৈরি করলেন একটি জাদী, যেটিকে চুলামনি জাদী বলে। স্বর্গের দেবতারা এখন ও সেই জাদীকে পূজা করে। সেই চুলামনি জাদীকে উদ্দেশ্য করে বিশেষ প্রাথর্নার মাধ্যমে বৌদ্ধরা এক মাস ব্যাপি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে আকাশে উড়ায়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.