রাঙামাটির রাজ বন বিহারে আগামী ১০ ও ১১ নভেম্বর ৪৩তম কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা পরিষদ সন্মেলন কক্ষে প্রস্তুতি সভার সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা। এ সময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য সবির কুমার চাকমা, নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদ, পুলিশ প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) চিত্ত রঞ্জন পাল, স্বাস্থ্য বিভাগের সিভিল সার্জন (ভাঃ) ডাঃ স্নেহ কান্তি চাকমা, জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহমেদ, রাঙামাটির রাজ বনবিহার পরিচালনা কমিটির সদস্য উদয়ন চাকমা, টিটু চাকমা, রনেল চাকমা, রনেন্দ্র চাকমা রিন্টু’সহ সেনা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, বিদ্যুৎ বিতরণ, উন্নয়ন বোর্ড, পৌরসভা, গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা।
সভায় বিগত বছরের কার্যবিবরণী পর্যালোচনা এবং উত্থাপিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার পর কঠিন চীবর দানোৎসব সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় রাজ বন বিহার পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে গৃহীত প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম সম্পর্কে সভায় উপস্থাপন করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে পরিষদ চেয়ারম্যান বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের বৃহৎ এ উৎসব কঠিন চীবন দান সুস্থ ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে এবং আগত পূর্ণার্থীদের সুবিধার্থে আইন শৃংখলা বাহিনীকে সড়ক ও নৌ পথের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রয়োজন অনুযায়ী টহল ব্যবস্থা গ্রহণ ও মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেক করা, যানজট নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ট্রাফিক মোতায়েন, সমগ্র এলাকায় আইনশৃংখলা রক্ষার স্বার্থে পুলিশ বাহিনীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, স্বাস্থ্য বিভাগকে মেডিকেল টিম ও এম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা, সুষ্ঠভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা, পানি সরবরাহের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, সেনিটারী লেট্রিনসমূহের দ্বারা বায়ু দুষণ এর বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য উপস্থিত সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের প্রধানকে বিহার পরিচালনা কমিটিকে সহযোগিতা প্রদানের জন্য অনুরোধ জানান।
তিনি বৃহৎ এ ধর্মীয় অনুষ্ঠানটি সুস্থ ও সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য রাঙ্গামাটির রাজ বনবিহার পরিচালনা কমিটিকে পরিষদ হতে ১লক্ষ ৯০হাজার টাকার আর্থিক অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
দুদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে নভেম্বর দুপুর ১টায় বেইন কর্মীদের পঞ্চশীল গ্রহণ, ৩টা ১মিনিটে বেইন ঘর উদ্ধোধন, ৩টা ১১মিনিটে চর্কায় সুতা কাটা উদ্ধোধন, বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে সুতা লাগানো শুরু, সন্ধ্যা ৬টা ১মিনিটে সুতা সিদ্ধ ও রং করা শুরু, ৭টা ১মিনিটে সুতা টিয়ানো শুরু, রাত ৮টায় সুতা শুকানো শুরু, ৮টা ৩০মিনিটে সুতা তুম ও নীল করা শুরু এবং রাত ১০টা ১মিনিট থেকে ১১নভেম্বর শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বেইন টানা ও বেইন বুনা।
আগামী ১১নভেম্বর সকাল ৬টায় বুদ্ধ পতাকা উত্তেলন, ৬টা ১মিনিট থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত কঠিন চীবর সেলাই, সকাল ৬টা ১০মিনিটে পূজনীয় ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশ, সকাল ৯টায় পরম পূজ্য বনভন্তের প্রতিচ্ছবিসহ পূচনীয় ভিক্ষুসংঘের মঞ্চে আগমন ও আসন গ্রহণ, ৯টা ১০মিনিটে ধর্মীয় সংগীত পরিবেশন, ৯টা ২০মিনিটে পঞ্চশীল গ্রহণসহ বুদ্ধমুত্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান, ১১টায় ভিক্ষুসংঘকে পিন্ডদান, দুপুর ১২টা ৩০মিনিটে শোভাযাত্রা সহকারে কঠিন চীবর ও কল্পতরু মঞ্চে আনায়ন, বেলা ২টায় অতিথিবৃন্দের অনুষ্ঠান মঞ্চে আসন গ্রহণ, ২টা ২০মিনিটেভিক্ষুসংঘ মঞ্চে আগমন ও আসন গ্রহণ, ২টা ২৫মিনিটে ধর্মীয় সংগতি পরিবেশন, ২টা ৩০মিনিটে পঞ্চশীল গ্রহণ, ২টা ৫০মিনিটে বুদ্ধমূর্তিদান, অষ্টপরিস্কার দান, কল্পতরু দান, কঠিনচীবরদান ও দানোৎসর্গ, বিকাল ৩টায় বিশ্বশান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা,
৩টা ১০মিনিটে বনবিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের স্বাগত বক্তব্য, ৩টা ২০মিনিটে অতিথিবৃন্দ ও প্রধান পৃষ্টপোষক (চাকমা রাজা)’র বক্তব্য, ৩টা ৪০মিনিটে পূজনীয় ভিক্ষুসংঘের ধর্মদেশনা, বিকাল ৪টায় পরম পূজ্য শ্রাবকবুদ্ধ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভন্তের ধর্মদেশনা (ক্যাসেট হতে) ও সন্ধ্যা ৬টায় প্রদীপ পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.