বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনার মধ্য দিয়ে বিলাইছড়ি উপজেলার হিজাছড়ি আর্যরত্ন বন বিহারে সোমবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো তৃতীয় বারের মত দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব।
হিজাছড়ি আর্যরত্ন বন বিহার পরিচালনা কমিটি কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রথম পর্বে ধর্ম দেশনা দেন ভদন্ত প্রজ্ঞাবোধি মহাস্থবির ও পূর্ণজ্যোতি মহাস্থবির ভিক্ষু ধর্মদেশনা প্রদান করেন। এর আগে রবিন চাকমা ও রবিনা চাকমার প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিঝু চাকমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ড মেম্বার ক্যাহলা প্রু মার্মা। এর আগে ভিক্ষু সংঘের প্রাতঃরাশ, বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন, ধর্মীয় সঙ্গীত পরিবেশন, ত্রিশরণসহ পঞ্চশীল প্রার্থনা, বুদ্ধমূ্র্তি দান, সংঘ দান, অষ্টপরিষ্কার দানসহ নানাবিধ দান ও উৎসর্গ করা হয়।
দ্বিতীয় পর্বে শুরুতে শোভাযাত্রা সহকারে কঠিন চীবর এবং কল্পতরু মঞ্চে আনা হয়। পরে পূজনীয় ভিক্ষু সংঘ মঞ্চে আসন গ্রহণ করার পর তাদেরকে ফুলের তোরা দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। ধর্মীয় সংগীত পরিবশেন করেন শিল্পী নোভেল চাকমা। এরপর দানোত্তম কঠিন চীবর দান, কল্পতরু দান, হাজার প্রদীপ দান উৎসর্গ করা হয়। পরে দেব মনুুষ্য তথা বিশ্বের সকল প্রাণীর হিতসুখ মঙ্গলার্থে পূজনীয় ভিক্ষু সংঘের নিকট বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। এছাড়াও ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে মহাকাল ভিক্ষুকে মহাস্থবির বরণ ও অথিতি ভিক্ষুদেরও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এ সময় সংঘের প্রধান হিসেবে উপস্থিত থেকে স্ব-ধর্ম দেশনা প্রদান করেন ফুরমোন আন্তর্জাতিক ধ্যান ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ভৃগু মহাস্থবির ভান্তে। এছাড়াও দেশনা প্রদান করেন হিজাছড়ি আর্য়রত্ন বন বিহার এর অধ্যক্ষ বিদর্শন স্থবির ও জিনপ্রিয় মহাস্থবির ভিক্ষু। এর আগে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হিজাছড়ি আর্যরত্ন বনবিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হরিলাল চাকমা । এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অমরজীব চাকমা, শিক্ষক প্রীতিময় চাকমা, ওয়ার্ড মেম্বার জ্ঞান তালুকদার প্রমূখ।
প্রসঙ্গত, প্রবারণা পূর্ণিমার (আশ্বিনী) পরদিন হতে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্য়ন্ত মাসব্যাপী এই কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বৌদ্ধ বিনয় অনুসারে বছরে একটি বিহারে একবার এই অনুষ্ঠান করা যায়। তবে উক্ত বিহারে অবশ্যই ভিক্ষু অথবা সংঘকে তিন মাস বর্য়াব্রত অধিষ্ঠান সুসম্পন্ন করতে হয়। তবেই উক্ত বিহারে কঠিন চীবর দানের মাধ্যমে ভিক্ষুটি চীবর (ভিক্ষু-শ্রামণদের পরিধেয় রঙবস্ত্র) গ্রহণ করতে পারবে। অন্যথায়, সেটি কঠিন চীবর হিসেবে গণ্য হবে না।