টানা অবরোধ-হরতালের কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যর খ্যাত হিসেবে রাঙামাটি পর্যটন শিল্প বিপর্যস্থ। রাঙামাটি শহরে মোট ৭০টি হোটেল, মোটেল ও রেষ্টুরেন্টে গত দু মাসে এ খাতে কয়েক কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। এছাড়াও লোকসানের কারণে ৪থেকে ৫শ কর্মচারীকে ছাটাই করা হয়েছে ও দু’শতাধিক টুরিষ্ট বোট চালক বেকার হয়ে পড়েছেন। শুধুমাত্র রাঙামাটি সরকারী পর্যটন কর্পোরেশনে গত দুমাসে ৭৫ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে রাঙামাটির অনেক হোটেল, মোটেল ও রেষ্টুরেন্ট শিল্পের মুখ থুবড়ে পড়বে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে,রাঙামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে প্রতি বছর শীত মৌসুমে দেশ-বিদেশের পর্যটকের ভরপুর থাকে। সাধারন সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্ষন্ত এ পর্যটন মৌসুম শুরু হয়। কিন্তু গত ৫ জানুয়ারী থেকে দেশের টানা অবরোধ ও হরতালের কারণে রাঙামাটিতে পর্যটকের আগম নেই বললেই চলে। রাঙামাটি পর্যটন স্পটের মধ্যে রয়েছে, পর্যটনের ঝুলন্ত সেতু, শুভলং ঝর্ণা, রাজ বন বিহার,জেলা প্রশাসনের বাংলো, বালুখালী কৃষি খামার, টুক টুক ইকোভিলেজ, কাপ্তাই হ্রদের মনোরম নৌ ভ্রমন, আদিবাসীদের জীবনযাত্রা, কাপ্তাই জল বিদ্যূৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কর্ণফূলী পেপার মিলস্ ও কাপ্তাই জাতীয় উদ্যোন ইত্যাদি।
হোটেল সুফিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম মুন্না বলেন, টানা অবরোধ-হরতলের কারণে তার হোটেলে গত দু’মাসে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। পর্যটক না আসায় হোটেল বন্ধ করার উপক্রম হয়েছে। ইতোমধ্যে তার হোটেলে অধিকাংশ কর্মচারীকে ছাটাই করা হয়েছে।
রাঙামাটি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও হোটেল প্রিন্সের সত্বাধিকারী নেছার আহমেদ জানান, রাঙামাটি শহরে মোট ৪০টি হোটেল-মোটেল এবং ৩০টি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এ অব্যাহত অবরোধ-হরতালের কারণে গত দুমাসে ৪০ লাখ টাকার উপরে লোকসান হয়েছে। এসব হোটেল-মোটেলের ৪থেকে ৫শ কর্মচারীকে ইতোমধ্যে ছাটাই করতে বাধ্য হয়েছেন মালিকরা। তাছাড়া যেসব কর্মচারী রয়েছেন তাদেরও বেতন চালাতে কষ্ট হচ্ছে। তিনি আরও জানান, পর্যটনের সাথে জড়িত প্রায় দুই শতাধিক টুরিষ্ট বোট রয়েছে। এসব টুরিষ্ট বোট চালকরা বেকার হয়ে পড়েছেন ও তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টের মধ্য দিন কাটাচ্ছেন।
তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে রাঙামাটির পর্যটন শিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে। কোন পৃষ্টাপোষকতা না পেলে ভবিষ্যতে হোটেল-মোটেল মালিকরা এ লোকসান কাটিয়ে উঠা সম্ভব নয়। তিনি দেশের স্বার্থে এবং পর্যটন শিল্পকে বাঁচানোর জন্য এ শিল্পকে অবরোধ-হরতালের আওতামুক্ত রাখার অনুরোধ জানান।
রাঙামাটির সরকারী পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, গত দুমাসে অবরোধ ও হরতালের কারণে রাঙামাটির পর্যটনে ৭৫ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। দুমাসে এ খাত থেকে টার্গেট ছিল ৮০লাখ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে আরও প্রচুর লোকসান গুনতে হবে। তিনি টানা হরতাল-অবরোধের কারণে কোন পর্যটক নেই বলে জানান।--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.