নির্মাণের ৩৪ বছরেও সংস্কার হয়নি খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার মির্জাবিল সেচ প্রকল্পের ড্রেনগুলো। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে সেচ-এর কাজে ব্যবহৃত প্রায় সব ড্রেনগুলো ভেঙ্গে গেছে। এতে কৃসকদের ভোগান্তি চরম আকারে দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনের সময় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার মির্জাবিল এলাকায় ধানের কৃষিজ পণ্যদ্রব্য উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষে বাংলাদেশ এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন(বিএডিসি) অধীনে ১৯৮১-৮২ অর্থ বছরে সেচ প্রকল্প ড্রেনগুলো নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন স্থানীয় মেম্বার ছিলেন জ্যোতিষ চাকমা। বর্তমানে তিনি বয়োবৃদ্ধ। সেচ চাষের সুবিধার্থে তখন তিনটি উয়ংমার মেশিন দেয়া হয়। ১৯৮৬ সালে পানছড়ি উপজেলা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হলে অধিকাংশ পাহাড়ি ভারতে শরনার্থীতে গেলে সেসব মিশিনগুলো চুরি হয়ে যায় এবং সেচ ড্রেনগুলোও ভেঙ্গে যায়। পরবর্তীতে পার্বত্য চুক্তির পর ১৯৯৮ সালে ভারত থেকে ফিরে আসার পর আবারও মির্জাবিল এলাকায় সেচ চাষ শুরু হয়। ভাঙ্গা ড্রেন দিয়ে সেচ চাষ চললেও অদ্যাবধি সেচ ড্রেনগুলো সংস্কার করা হয়নি।
সরেজমিনের সময় দেখা গেছে, সেচ ড্রেনগুলো প্রায় সবগুলো ভেঙ্গে গেছে। অধিকাংশ ড্রেন ড্রেনের চিহ্ন নেই। জমির আইল দিয়ে সেচ ড্রেন করা হয়েছে।
স্থানীয় চাষী শৈলেশ চন্দ্র চাকমা, সমর বিকাশ চাকমা জানান, সেচ ড্রেনগুলো ভেঙ্গে যাওয়ার পর ১২ থেকে ১৩ বছর ধরে আমরা অনেক কষ্ট করে সেচ চাষ করছি। ড্রেনগুলো ভেঙ্গে যাওয়ায় ১ একর জমিতে পানি তুলতে সময় লাগে এক ঘন্টার পরিবর্তে দুই ঘন্টা। এতে আমাদের অর্থ একদিকে অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সময়। এ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যানদের অনেকবার বলেছি।
কলেজ গেইট গ্রামের শেফালি চাকমা জানান,বিগত ৫ থেেক ৬ বছর আগে এডিবি থেকে প্রকল্প নিয়ে খাগড়াছড়ির বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা “তৃণমূল” থেকে ড্রেনের সংস্কার করার কথা ছিল। অজ্ঞাত কারণে তারাও করেনি। ফলে সেচ চাষ করতে গিয়ে কৃষকদের প্রতি বছর অবর্ণনীয় কষ্ট করতে হচ্ছে।
স্থানীয় মহিলা মেম্বার অপরাজিতা খীসা জানান, সেচ চাষের সুবিধার্থে ড্রেনগুলো সংস্কার করা জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যনকে অনেক অনেকবার আবেদন করা হয়েছে। কোনো কাজ হয়নি।
স্থানীয় চেয়াম্যান অসেতু বিকাশ চাকমা বলেন, সংস্কারের জন্য এলাকাবাসী আবেদন করেছে। তাই জনস্বার্থে সংস্কার করা জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
পানছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে তার কাছে কোনো আবেদন আসেনি। আবেদন আসলে অবশ্যই বাস্তবায়ন করা হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.