রাঙামাটির পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের পদভারে মূখরিত হয়ে উঠেছে। ঈদের ছুটিতে পর্যটকরা রাঙামাটির পর্যটনের ঝুলন্ত ব্রীজ, শুভলং ঝর্ণা আর কাপ্তাই হ্রদ ঘুরে বেড়িয়ে আনন্দ উপভোগ করছেন।
জানা যায়, পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমন পিপাসু পর্যটকরা ইটপাথুরের শহর ও যান্ত্রিকতার ক্লান্তি দূর করতে পাহাড় কন্যা রাঙামাটির অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন। এবারও পরিবার-পরিজন কিংবা বন্ধু-বান্ধদের নিয়ে ঈদের ছুটি উপভোগ করতে রাঙামাটির বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকরা ভিড় জমিয়েছেন। বর্তমানে দেশের ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি শান্ত থাকায় এবার ঈদের ছুটিতে বিপুল সংখ্যক পর্যটকদের সমাগম ঘটেছে।
রাঙামাটিতে পর্যটনের আকর্যনীয় স্পটের মধ্যে রয়েছে,পর্যটনের ঝুলন্ত সেতু, শুভলং ঝর্ণা,রাজ বন বিহার,জেলা প্রশাসনের বাংলো, বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধি সৌধ, বালুখালী কৃষি খামার, টুক টুক ইকোভিলেজ,সাংপাং রেস্টুরেন্ট এবং আদিবাসী শান্ত সবুজ গ্রাম ও তাদের জীবনযাত্রা। এছাড়াও রাঙামাটি শহরের বাইরে বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকের মনোরম পর্যটন স্পট, কাপ্তাই উপজেলায় কর্ণফুলী নদীর তীরে গড়ে উঠা আকর্যনীয় পর্যটন স্পট, কাপ্তাই জল বিদ্যূৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কর্ণফূলী পেপার মিলস্ ও কাপ্তাই জাতীয় উদ্যোন ইত্যাদি।
রাঙামাটি সরকারী পর্যটন স্পটে সরেজমিনে গিয়ে গেছে, দুই পাহাড়ের মাঝখানে অবস্থিত রাঙামাটি সরকারী পর্যটন স্পটে আকর্ষনীয় ঝুলন্ত সেতুর উপরে ও আশপাশের এলাকায় পর্যটকরা পরিবারের পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করছেন। আবার অনেক পর্যটক ইঞ্জিন চালিত বোটে করে কাপ্তাই হ্রদের নৌ-ভ্রমন এবং বর্ষায় পুরনো রুপ ফিরে পাওয়া শুভলং ঝর্ণার সৌন্দর্য্য দেখতে সেখানে দল বেধে ছূটে যাচ্ছেন। এসব পর্যটন স্পটগুলোতে পুলিশী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
বেড়াতে আসা পর্যটকরা জানিয়েছেন, রাঙামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য তাদের মুগ্ধ করেছে। তবে পর্যটনের স্পটগুলোতে পর্যটকদের তেমন একটা সুযোগ-সুবিধা নেই। বিশেষ করে রাঙামাটির সরকারী পর্যটন স্পটের জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এমনকি পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য বসার কোন ব্যবস্থা নেই। তাদের মতে, পর্যটন স্পটগুলোতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও আকর্ষনীয় করা গেলে প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটতো। এ জন্য সরকারী-বেসরকারীভাবে এগিয়ে আসা দরকার।
সরকারী পর্যটন নৌ ঘাটের ইজারাদার রমজান আলী জানান, এবার ঈদের লম্বা ছুটিতে রাঙামাটিতে প্রচুর সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। রাঙামাটি পর্যটন নৌযান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে শুভলং ঝর্ণা, চাকমা রাজবাড়ি, রাজ বন বিহার বৌদ্ধ মন্দিরসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে বেড়াতে টুরিষ্ট বোর্ট সার্ভিস দিচ্ছি।
রাঙামাটি সরকারী পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্রে ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, ঈদের ছুটিতে রাঙামাটিতে পর্যটকদের পদভারে মূখরিত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে রাঙামাটি সরকারী পর্যটন ঝুলন্ত সেতুতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন। আশা করছি আগামী দুই তিন দিন রাঙামাটিতে প্রচুর সংখ্যক পর্যটকদের ভিড় থাকবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(অপরাধ) শহীদুল্লাহ জানান, ঈদের ছুটিতে রাঙামাটিতে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে ঘুরতে বিভিন্ন পয়েন্টে ও পর্যটন স্পটগুলোতে পুলিশের টহল ছাড়াও পর্যটকরা প্রচুর সংখ্যক গাড়ী নিয়ে আসেন যাতে কোন প্রকার অসুবিধা না হয় সেজন্য ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলের লক্ষে রাঙামাটিতে সাদা পোশাকে পুলিশী ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.