করোনা ভাইরাসে সৃষ্টি বির্পয় কর্মহীন হত দরিদ্রদের জন্য মানবিক সহায়তা কর্মসূচী থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছে জুরাছড়ি উপজেলার মৈদং ও দুমদুম্যা ইউনিয়ন বাসী। শুধুমাত্র মোবাইল নাম্বার না থাকায় এ ইউনিয়নের প্রায় ৯০০ পরিবার এ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস জনিত দুর্যোগে মানবিক সহায়তা কর্মসূচী চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন সরকার। এ কর্মসূচীর অন্তরভুক্তির প্রধান শর্ত হচ্ছে সুবিধাভোগীর মোবাইল নাম্বার থাকতে হবে। কিন্ত এই দুটি ইউনিয়নে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কয়েকশত মানুষ।
দুমদুম্যা ইউনিয়নের বগাখালীর এলাকার জলছড়ি পাংখোয়া,৫৫ বলেন,মোবাইল কি জিনিস তা দেখিনি ! নাম্বার কোথা থেকে দেবো?
একই ইউনিয়নের অমুল্য সেন চাকমা, বলেন,এখন জুমের বীজ বোনার সময় । এসময়ে এক বেলা ভাত খেয়ে আরও এক বেলা জংগলের আলু খেয়ে জুমে কাজ করতে হচ্ছে । শুনেছে সরকারি চাল দেবে, কিন্ত আক্ষেপ করে বলেছেন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বলা হয়েছে মোবাইল ফোন নেই তারা পাবেনা ।
দুমদুম্যা ইউনিয়নের চাম্পাই পাড়া গ্রামের সোনা রতন চাকমা বলেন,সরকারের উচিত আমাদের মত গরীবদের নগদ টাকা দেয়া । যেখানে একবেলা ভাত খেতে পাচ্ছিনা , সেখানে বোবাইল কোথায় পাবো ? শুধু তারা নয় নয়,এ দুই ইউনিয়নের কঞ্চন মালা চাকমা, ধনবী চাকমা, রূপসী চাকমাসহ অনেকে বাদ পড়াই হতাশ।
অর্পন দেওয়ান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) জুড়াছড়ি উপজেলা বলেন, মানবিক সহায়তা প্রাপ্তি সরকারী নির্দেশিকা অনুযায়ী করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্থের নামের সাথে অবশ্যই মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। মোবাইল নাম্বার না থাকলে মানবিক সহায়তা সফটওয়ারে কারও নাম অন্তরভুক্ত করা যায়না । সফটওয়ারটি সেভাবে বানানো হয়েছে।
দুমদুম্যা ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাধন কুমার চাকমা জানান, ইউনিয়নে মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারনে জন্য সরকারের কাছে অনেকবার দাবী জানালেও কোল ফলপ্রসূ হয়নি। অথচ শুধু মাত্র মোবাইল নাম্বার না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা থেকে ইউনিয়নবাসী বঞ্চিত হতে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে মোবাইল নাম্বার ব্যতিত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার জন্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের অন্তরভুক্ত করা আবেদন জানাচ্ছি।
উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা বলেন,দুমদুম্যা ইউনিয়ন সম্পূর্ন নেটওয়ার্ক নেই,সুতরাং সেখানকার অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর মোবাইল ব্যবহার করেনা। যারা উপজেলা সদরে আসা-যাওয়া করে বিশেষ করে ওয়ার্ড সদস্যদের মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করে এ র্দুসময়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের এ কর্মসূচীর সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরী।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃমাহফুজুর রহমান, বলেন, উপজেলার দুই ইউনিয়নের মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে এবং এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একে এম মামুনুর রশিদ বলেন,দুই ইউনিয়নে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও দুর্গম হওয়ায় তারা সেখানখার মানুষ কম সুযোগ সুবিধা পায় তা ঠিক । তবে বিকল্পভাবে তাদের কিভাবে সহায়তা কর্মসূচীতে অন্তরভুক্ত করা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে। জেলায় দুর্গম এলাকায় কেউ যাতে বঞ্চিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখছি ।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.