বিদ্যুৎ ভোগান্তিতে নাকাল রাঙামাটির বরকলবাসী। ঘন ঘন লোডশেডিং আর বিদ্যুৎ থাকলেও লো-ভল্টেজ থাকে। সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন বিদ্যুৎ থাকে না। তাই বরকলের বিদ্যুৎ গ্রাহকরা ফুসে উঠেছে। এমনই পরিস্থিতিতে রোববার শত শত গ্রাহক নিরবিচ্ছিন্ন বিদূতের দাবীতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে।
উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বরকল বিদ্যুৎ গ্রাহক উন্নয়ন কমিটির সভাপতি আবু বক্কর। বক্তব্য রাখেন, বরকল উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি পুলিন বিহারী চাকমা, সাধারণ সম্পাদক বিহারী চাকমা, বরকল বৌদ্ধ বিহারের সভাপতি মংহ্লাচিং মারমা, উপজেলা হেডম্যান সমিতির সভাপতি নন্দ বিকাশ চাকমা ও শিক্ষক সমর বিকাশ চাকমা প্রমুখ। এ সময় বৃষ্টি উপেক্ষা করে এলাকার অগণিত নারী-পুরুষ সমবেত হন।
এর আগে বরকল উপজেলা মাঠ থেকে মিছিলটি বের করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়ে বরকল বাজার ঘুরে উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৬০ সালে কাপ্তাইয়ে বাঁধ নির্মাণের দীর্ঘ প্রায় ৫৫ বছরের মাথায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বরকলে বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ স্থাপন করা হয়। এরপরও বিদুৎ সুবিধাবঞ্চিত বরকলের মানুষ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয় কাপ্তাই হয়ে বিলাইছড়ি উপজেলা সদর থেকে। সেখানে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিকাশে টাকা পাঠানো হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া হয়। অন্যথায় সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। বরকলে শুধু এক কর্মচারী কর্মরত। কিন্তু তিনি কর্মস্থলে থাকেন না, থাকেন রাঙামাটি শহরে। সেখান থেকে ভুয়া ও গড়বিল তৈরি করে গ্রাহকদের মাঝে বিলি করেন।
সমাবেশ থেকে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা অবিলম্বে উপজেলায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা না হলে আগামী মাস থেকে বিদ্যুৎ বিল প্রদানে বিরত থাকার হুমকি দেন।
এ ব্যাপারে কাপ্তাইয়ে কর্মরত বিদ্যুতের আবাসিক প্রকৌশলী আবদুল মজিদ ও বিলাইছড়ির লাইনম্যান ফয়েজ সাথে যোগাযোগ করা হলে বিকাশে টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এলাকার ভৌগলিক অবস্থানের কারণে সংযোগ লাইনের দূরত্বতা ও যান্ত্রিক সমস্যার ফলে বরকলে নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হয় না। কাপ্তাই থেকে বিলাইছড়ি ৯০ কিলোমিটার, বিলাইছড়ি থেকে জুরাছড়ি ৩০ কিলোমিটার এবং জুরাছড়ি থেকে বরকল ৩০ কিলোমিটার দূরে। এত দূরত্বে কোথাও সাবস্টেশন নেই। ফলে সরবরাহ দেয়া বিদ্যুতের ভল্টেজ লো হয়ে থাকে।
বরকলে দায়িত্বে কর্মরত লাইনম্যান বিনোদ বিহারী চাকমা জানান, বরকলে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া হয় কাপ্তাই থেকে। এখানে তার কোনো হাত নেই। তা ছাড়া বরকলে তেমন কোনো কাজ না থাকায় যখন প্রয়োজন তখন বরকল যান তিনি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.