“জেএসএস সন্ত্রাসীদের এ কেমন নৃশংসতা” শিরোনামে জেলা আওয়ামীলীগের রাঙামাটি শহরে পোষ্টারিং এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(জেএসএস)।
রোববার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় এ প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
প্রেস বার্তায় বলা হয়, গত ৫ ডিসেম্বর বিলাইছড়িতে ‘রাসেল মারমাকে পাশবিক ও নিষ্ঠুর নির্যাতন’ ও জুরাছড়িতে ‘অরবিন্দু চাকমাকে খুন’ এবং ৬ ডিসেম্বর ‘ঝর্ণা চাকমাকে পাশবিক হামলার’ ঘটনায় জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করে পোষ্টারিং করা হয়। যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ এনে জনমতকে বিভ্রান্ত ও জেএসএস’র ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে জেলা আওয়ামীলীগ কর্তৃক এ ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক পোস্টার প্রচার ও প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রেস বার্তায় আরো বলা হয়,জেলা আওয়ামীলীগের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার, চরম দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন, টে-ারবাজি-চাঁদাবাজি, দলীয় কোন্দল, দলাদলি ও হানাহানি, জঘন্য দলীয়করণ ইত্যাদির ফলে জেলা আওয়ামীলীগ নেতৃত্বের উপর রাঙামাটি জেলা তথা পার্বত্যবাসী ক্ষুব্ধ ও অতিষ্ঠ। সর্বোপরি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর দীর্ঘ ১২ বছর ব্যাপী বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার পরও চুক্তি বাস্তবায়নে নির্লজ্জ গড়িমসি এবং জেলা আওয়ামীলীগের চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী ভূমিকার ফলে অনেক আগে থেকেই পার্বত্যবাসী জেলা আওয়ামীলীগ নেতৃত্বকে পরিত্যাজ্য করেছে। এই ব্যর্থতা ধামাচাপা দিতে ও জনমতকে বিভ্রান্ত করতে সম্প্রতি আওয়ামীলীগ কর্মীদের উপর কে বা কারা হামলা করেছে কিংবা কি কারণে হামলা করা হয়েছে তার কোন যথাযথ তদন্ত এবং তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই এসব ঘটনা ঘটতে না ঘটাতে জেলা আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জেএসএসকে দায়ী করে আসছে। এসব ঘটনাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে জেএসএস’র নেতৃত্বকে হয়রানি ও নাজেহাল করতে এবং চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্তের হীনউদ্দেশ্যে জেলা আওয়ামীলীগ জেএসএস’র সদস্য ও নিরীহ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে চলেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রেস বার্তায় বলা হয়,জেলা আওয়ামীলীগের যোগসাজশে আইন-শৃংখলা বাহিনী কর্তৃক অন্তত ২৫ জন নিরীহ গ্রামবাসী ও জনসংহতি সমিতির সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরো ২৬ জনকে সাময়িক আটক করে নানাভাবে হয়রানি ও নির্যাতন করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে সর্বশেষ এ ধরনের মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ এনে পোস্টার ছাপিয়ে অপপ্রচারে অবতীর্ণ হয়েছে, যা রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ নেতৃত্বের রাজনৈতিক অবিমৃষ্যকারিতা ও সাংগঠনিক দেউলিয়াপনারই বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছে।
প্রেস বার্তায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি পার্বত্য চট্টগ্রামের আপামর জুম্ম জনগণ তথা স্থায়ী অধিবাসীদের অধিকারকামী একটি রাজনৈতিক দল এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে লিপ্ত রয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, জেলা আওয়ামীলীগের ভুলে গেলে চলবে না যে, পূর্বে জনসংহতি সমিতিকে উদ্দেশ্য-প্রণোদিতভাবে ‘অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী’ হিসেবে অপবাদ দিয়ে কেউ তাদের ষড়যন্ত্রমূলক নীল-নক্সা সফল করতে পারেনি। বরঞ্চ জনসংহতি সমিতি বরাবরই পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে প্রতিনিধিত্বশীল ও নির্ভরযোগ্য একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রেস বার্তায় এ ধরনের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার থেকে বিরত থাকতে এবং রাজনৈতিক হীনউদ্দেশ্যে প্রকাশিত এ ষড়যন্ত্রমূলক পোস্টার প্রত্যাহারের জন্য জেলা আওয়ামীলীগ প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.