দুর থেকে মোবাইল ফোন কলের মাধ্যমে কিভাবে বাড়ীর সিকিউরিটি লাইট, পানির পাম্প অফ-অন এবং দরজা বন্ধ ও খোলা যায় তার চিন্তা করতে করতে এক সময় সেই যন্ত্রটি তৈরী করে ফেললেন আদিবাসী যুবক মংসিং মারমা। বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে নিজের বাড়ীতে নিজের তৈরী করা যন্ত্রটি ব্যবহার করছেন। পৃষ্ঠাপোষকতা ও আর্থিক সহায়তা ফেলে উদ্ভাবিত এ যন্ত্রটি আধুনিকায়ন করে জনগনের সেবায় পৌঁছে দেয়ার স্বপ্ন দেখছেন মং সিং। রাঙামাটি শহরের বনরুপা বাজার এলাকায় বসবাস করেন আদিবাসী যুবক মংসিং মারমা। তিনি পেশায় একজন চিত্রশিল্পী। বাবার মারা যাওয়ার পর পরিবারের বড় ছেলে হওয়াতে পরিবারের হাল ধরতে হয় তাকে। বর্তমানে তিনি স্কুল পড়ুয়া শিশুদের চিত্রাংকন শিখিয়ে প্রতি মাসে যে টাকা পান তা দিয়ে সংসার চালান মংসিং মারমা। একদিন তিনি তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাঙামাটির বাইরে আত্বীয়ের বাড়ীতে বেড়াতে যান। কিন্তু রাতে বেলার জন্য বাড়ীর বাইরে সিকিউরিটি লাইট জ্বালিয়ে যাননি। রাতে সিকিউরিটি লাইট না জ্বালানোর কারণে হয়তো চোরেরা বাড়ীর জিনিসপত্র চুরি করে নেয়ার সুযোগ পাবে। তাই সেই দুশ্চিন্তা থেকে মংসিং মারমার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে কিভাবে দুর থেকে মোবাইল কলের মাধ্যমে বাড়ীর সিকিউরিটি লাইট জ্বালানো যায়। অবশেষে সাহস করে তিনি বাজার থেকে একটি মোবাইল সেট, কিছু সার্কিটসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ক্রয় করে দুর থেকে নিয়ন্ত্রন করা যায় সেই রকম যন্ত্র তৈরীর কাজে নেমে পড়লেন। তিনি সময় ফেলে কাজে বসে যান যন্ত্র তৈরীর কাজে। এভাবে দীর্ঘ এক বছর গবেষনা করে মোবাইল কলের মাধ্যমে দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে বসে সিকিউরিটি লাইট, পানির পাম্প অফ-অন, দরজা বন্ধ ও খোলার যন্ত্র তৈরী করতে সক্ষম হন। তবে তৈরী করা যন্ত্রের জন্য মোবাইল, সার্কিটসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ক্রয় করতে তার ব্যয় হয়েছে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। তার এ তৈরী যন্ত্র দেখতে ইতোমধ্যে তার অনেক বন্ধু-বান্ধব ও শুভকাংখিরা দেখে ক্রয়ের জন্য আগ্রহও প্রকাশ করেছেন। আদিবাসী যুবক মংসিং মারমার কারিগরী কোন প্রশিক্ষন নেই। এমনকি দারিদ্রতার কারনে এসএসসি গন্ডি পর্ষন্ত পেরুতে পারেননি। তবে তিনি হাতের কাজ হিসেবে রাঙামাটি চারুকলা একাডেমী থেকে চিত্রাংকন শিখেছেন। মোবাইল কলের মাধ্যমে বাড়ীর সিকিউরিটি লাইট, পানির পাম্প অফ-অন এবং দরজা বন্ধ ও খোলার যন্ত্র উদ্ভাবনের জন্য তার পেছনে রয়েছে মংসিং তার অদম্য মেধা ও প্রবল ইচ্ছা শক্তি। মংসিং মারমা জানান,দুর থেকে কিভাবে মোবাইল কলের মাধ্যমে বাড়ীর পানির পাম্প অফ-অন এবং দরজা খোলা ও বন্ধ করা যায় তার চিন্তা করতে থাকি। এক সময় মনের শক্তি সঞ্চয় করে বাজার থেকে একটি মোবাইল সেট, সার্কিটসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় করেএ যন্ত্রটি তৈরী করতে বসে গেলাম। প্রতিদিন সময় ফেলে কিভাবে তৈরী করা যায় কাজে নেমে পড়তাম। অবশেষে দীর্ঘ এ বছর পর সত্যি সত্যিই মোবাইল কলের মাধ্যমে বাড়ীর সিকিউরিটি লাইট ও পানির পাম্প অফ-অন এবং দরজা খোলা ও বন্ধ করার যন্ত্রটি তৈরী করতে সক্ষম হই। বর্তমানে তৈরী করা যন্ত্রটি পরীক্ষামুলকভাবে তার নিজের বাড়ীতে ব্যবহার করছেন। তিনি আরও জানান, সরকারী-বেসরকারীভাবে সহযোগিতা ফেলে এ যন্ত্রটি আধুনিকায়ন করে জনগনের সেবায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হবেন।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.