• Hillbd newsletter page
  • Hillbd rss page
  • Hillbd twitter page
  • Hillbd facebook page
সর্বশেষ
খাগড়াছড়িতে গর্ভবতী নারী ও কিশোরীদের মোবাইল প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা ক্যাম্প                    অবশেষে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্ন্তবর্তীকালীন পরিষদ পূর্নগঠন                    সাংবাদিক প্রদীপ চৌধুরীর মুক্তির দাবীতে রাঙামাটিতে প্রতীকি কর্মবিরতি                    খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আটক                    খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে পার্বত্য উপদেষ্টা                    খাগড়াছড়িতে দোকান ভাংচুর ও লুটপাট মামলায় ৫ জন আটক                    খাগড়াছড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের চিকিৎসা ও ওষুধ বিতরণ                    খাগড়াছড়িতে সংঘাত, নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে সম্প্রীতি সমাবেশ                    খাগড়াছড়িতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে,সাপ্তাহিক হাটে উপস্থিতি কম                    খাগড়াছড়ি পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা চলছে,এখনো থমথমে অবস্থা                    অনাকাংখিত পরিস্থিতি এড়াতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি                    পানছড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নারী ও কিশোরীকে চিকিৎসা ও ওষুধ বিতরণ                    মহালছড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ দুইশত পাহাড়ি-বাঙালিকে চিকিৎসা সেবা ও ঔষুধ বিতরণ                    খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির সহিংস ঘটনার তদন্ড শুরু করেছেন তদন্ড কমিটি                    খাগড়াছড়িতে নিহতদের স্বরনে মোমবাতি প্রজ্জলন                    খাগড়াছড়ির ৭২ ঘন্টা সড়ক অবরোধ পালিত,সাজেকের আটকে পড়া পর্যটকরা ফিরবেন আজ                    সড়ক অবরোধের দ্বিতীয় দিন সাজেকে আটকা পড়েছেন প্রায় ১৪শ পর্যটক                    আগামীতে যেন আর ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি না হয়, সজাগ থাকতে হবে-হাসান আরিফ                    শান্তিপূর্ণভাবে সড়ক অবরোধের প্রথমদিন চলছেনা দুরপাল্লার গাড়ি                    দীঘিনালায় সহিংস ঘটনায় নিহত ৩, আহত ১০                    দীঘিনালায় দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া,বাজারে আগুনে পুড়েছে অর্ধ শতাধিক দোকানপাট                    
 
ads

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের দু’দিন ব্যাপী ৪র্থ জাতীয় সম্মেলনের উদ্ধোধনী বক্তব্যে
নাসিরনগর,গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন ঘটনা সরকারের প্রকৃত মুখোশ উন্মোচিত হয়ে গেছে-সন্তু লারমা

ডেস্ক রিপোর্ট : হিলবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 17 Nov 2016   Thursday

বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকায় বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের দু’দিন ব্যাপী ৪র্থ জাতীয় সম্মেলন শুরু হয়েছে। 

 

উদ্বোধনী বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) বলেছেন, নাসিরনগর, গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন ঘটনা সরকারের প্রকৃত মুখোশ উন্মোচিত হয়ে গেছে। বাংলাদেশের সংবিধান আদিবাসীদের আত্মপরিচয়কে অস্বীকার করে আদিবাসীদের অনেক দূরে ঠেলে দিচ্ছে। নির্মম বাস্তবতা হল বাংলাদেশে প্রগতিশীল রাজনীতি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের নামে স্বৈরশাসন চলছে। এক্ষেত্রে আদিবাসীদের আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে হবে।


ঢাকাস্থ সিবিসিবি সেন্টার মিলনায়তনে । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবীন রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, সাবেক মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রাণা দাস গুপ্ত, পাবত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং। সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন শাখার প্রতিনিধি পর্যবেক্ষক ছাড়াও জাতীয় কমিটির ৭৫ জন সদস্যের মধ্যে ৬৫ জনেরও অধিক জাতীয় কমিটির সদস্য উপস্থিত ছিলেন।


সম্মেলনে প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামে কার্যক্রম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে পাহাড় ও সমতল আদিবাসীদের ঐক্য , লড়াই ও সংগ্রাম জোরদার করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। শুক্রবার আদিবাসী ফোরামে জাতীয় কমিটি, কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচন এবং আদিবাসী ফোরামের কর্মসূচি ঘোষনার মধ্য দিয়ে দুইদিন ব্যাপী ৪র্থ জাতীয় সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটবে।


জাতীয় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জলি মং মারমা। সংগঠনের সামগ্রিক প্রতিবেদন পেশ করেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং। সামগ্রিক প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে আদিবাসী ফোরামের প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষকরা আলোচনায় অংশগ্রহন ও তাদের নিজ নিজ অঞ্চলের সমস্যা তুলে ধরেন।


জাতীয় সম্মেলনে জাতীয় কমিটির মধ্য থেকে সম্মেলন সফলভাবে পরিচালনা করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমাসহ সভাপতি অনিল মারান্ডী, সদস্য মতিলাল হাজং, থোইঅং রাখাইনকে সভাপতি মন্ডলীর সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।


দেশে চলমান সাম্প্রদায়িক হামলা ও আদিবাসী উচ্ছেদের তীব্র নিন্দা জানিয়ে অ্যাডভোকেট রাণা দাস গুপ্ত বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্জিত হলেও আদিবাসীদের ওপরে নিপীড়ন বঞ্চনা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এই বঞ্চনা লাঘবের লক্ষ্যে এম এন লারমা যে পথ দেখিয়ে গেছেন, একমাত্র তাঁর পথ ধরেই আদিবাসীদের অধিকার আদায় সম্ভব।


সম্মেলনের সফলতা কামনা করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের আদিবাসীদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকার করা একটি রাষ্ট্রের মহান দায়িত্ব। রাষ্ট্র যদি তা পালনে ব্যর্থ হয় ইতিহাস তা ক্ষমা করবে না।


আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের সাথে একাত্বতা জানিয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, এ দেশের আদিবাসীদের ওপরে যে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চলছে তাঁর অবসান না হলে দেশের অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবেনা। সাম্প্রতিক গাইবান্ধায় সাওতাল আদিবাসীদের উপর হামলা-হত্যা-অগ্নিসংযোগ-উচ্ছেদ-লুটপাটের ঘটনা চরম মানবাধিকার লংঘন। বিগত সময়েও আদিবাসীদের উপর এই ধরনের হামলার ঘটনার একটারও বিচার হয়নি। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও বলা হয় সরকার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করবে, প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং আন্তরিক কিন্ত সর্বশেষে দেখা যায় পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন হয় না।


আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং সামগ্রিক প্রতিবেদনে বলেন, আদিবাসীদের মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো নয়। আদিবাসীদের উপর মানবাধিকার লংঘন, আদিবাসীদের ভূমি দখল, আদিবাসী গ্রামে আক্রমণ, হত্যা, হুমকি ও হয়রানি চরম আকার ধারণ করেছে। অতি সম্প্রতি গাইবান্ধা জেলার বাগদা ফার্ম অঞ্চলে, মাদারপুর ও জয়পুর আদিবাসী গ্রামে সাঁওতালদের উপর স্মরণকালের বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে। প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী ও সন্ত্রাসীরা একযোগে দরিদ্র অসহায় সাঁওতালদের উপর গুলি বর্ষণ করেছে, তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে ছারখার করেছে, কমপক্ষে তিন জন সাঁওতালকে হত্যা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সাঁওতাল বাড়িঘরের কোনো চিহ্ন যাতে না থাকে, তার জন্য ট্রাক্টর দিয়ে সাঁওতালদের ভিটামাটির চিহ্ন ধ্বংস করা হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ প্রকাশ্যে দিনের বেলা এই মানবাধিকার লংঘন ও নিষ্ঠুরতা দেখেছে।

 

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে ৫০টিরও বেশি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী স্মরণাতীতকাল থেকে বসবাস করে আসছে। অত্যন্ত দু:খের সাথে বলতে হয় স্বাধীনতার ৪৫ বছরে দেশের ৩০ লক্ষাধিক আদিবাসী জনগণ মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। সম্পূর্ণ এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে আদিবাসী ভাষা, সংস্কৃতি ও জীবনধারাকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ক্রমাগতভাবে আদিবাসীদের ভূমি অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন জাতিসত্তা, ভাষা, সংস্কৃতির এসব আদিবাসী জাতিসমূহের সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি এখনো মেলেনি। ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে আদিবাসীদেরকে “উপজাতি, জাতিসত্তা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়” হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

 

তিনি বলেন, প্রভাবশালী ভূমিগ্রাসী চক্র নানা কৌশলে আদিবাসীদের জমিজমা কেড়ে নিয়েছে। জাল দলিল, হুমকি, আইনের ফাঁক ফোকর ও সর্বোপরি দুর্নীতিবাজ সরকরি কর্মকর্তাদের কারণে আদিবাসী সর্বশান্ত হচ্ছে। এক সময় যেসব অঞ্চলে আদিবাসীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল, সেখানে পপুলেশন ট্রান্সফারের ফলে আদিবাসী জনগণ নিজভূমিতে সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম, গারো পাহাড়, উত্তরবঙ্গ, গাজীপুর, মধুপুর বনাঞ্চল, পটুয়াখালী-বরগুনা, খাসিয়া অঞ্চল সর্বত্র আদিবাসীরা তাদের ঐতিহ্যগত ভূমি হারিয়েছে।


প্রতিবেদনে বলা হয়,পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর ১৮ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এখনো চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলোর মধ্যে বিশেষত: পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম (উপজাতীয়) অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ; পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতাধীন বিষয় ও কার্যাবলী কার্যকরকরণ এবং এসব পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিতকরণ; পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিকরণ; আভ্যন্তরীণ জুম্ম উদ্বাস্তু ও প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থীদের জায়গা-জমি প্রত্যর্পণ ও পুনর্বাসন; সেনা শাসন ‘অপারেশন উত্তরণ’সহ সকল অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার; অস্থানীয়দের নিকট প্রদত্ত ভূমি ইজারা বাতিলকরণ; পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল চাকুরীতে জুম্মদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তিন পার্বত্য জেলার স্থায়ী অধিবাসীদের নিয়োগ; চুক্তির সাথে সামঞ্জস্য বিধানের জন্য অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ সংশোধন; সেটেলার বাঙালিদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনকভাবে পুনর্বাসন ইত্যাদি বিষয়গুলো বাস্তবায়িত না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধান এখনো কাক্সিক্ষত পর্যায়ে অগ্রগতি লাভ করেনি।


প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে অনিশ্চয়তার মধ্যে রেখে, পক্ষান্তরে সরকার একের পর এক চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম-স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ও আইন মোতাবেক জুম্ম জনগণের ভূমি অধিকার নিশ্চিত না করে বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনের নামে, পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের নামে, রিজার্ভ ফরেষ্ট ঘোষণার নামে, ব্যবসায়ী এবং প্রভাবশালী আমলা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে হর্টিকালচার ও রাবার চাষের নামে ইজারা প্রদান করে হাজার হাজার একর জুম্মদের সামাজিক মালিকানাধীন জুমভূমি ও মৌজাভূমি জবরদখল করা হচ্ছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

ads
ads
এই বিভাগের সর্বশেষ
আর্কাইভ