খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনোনয়ন নিয়ে চলছে জোর লবিং। তবে এ পরিষদে কে হবেন চেয়ারম্যান তা নিয়ে তিন নেতার মধ্যে দ্বৈরথের দোদুল্যমানতায় সরকার গঠনের এক বছর পরও পূর্নগঠন করা সম্ভব হয়নি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ। উল্লেখ্য, আর্ন্তবর্তীকালীন তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদ বিল সংশোধনের লক্ষে গত ১ জুলাই জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। গত ১৬ নভেম্বর ১জন চেয়ারম্যান ও ১৪ জন সদস্য করে আর্ন্তবর্তীকালীন পরিষদ গঠনে বিধান রেখে তিনটি বিল সংশোধিত আকারে জাতীয় সংসদে পাস হয়। বিলগুলো হল রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পষিদ(সংশোধন) বিল-২০১৪, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ(সংশোধন) বিল ২০১৪ ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ(সংশোধন) বিল-২০১৪। পার্বত্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অপর দুই পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার পরিষদ পূর্নগঠন সংক্রান্ত দুই এমপি’র ডিও (ডেমি অফিসিয়াল) জমা পড়েছে। কিন্তু খাগড়াছড়ি’র সাংসদের স্বাক্ষরিত ডিও জমা না পড়ায় ঘোষণা করা যাচ্ছে না তিনটি জেলা পরিষদের নতুন পরিষদ। খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ জানান, পরিষদের সদস্য মনোনয়নের বিষয়টি চুড়ান্ত হলেও চেয়ারম্যান পদ প্রত্যাশী তিন শীর্ষ নেতার দ্বৈরথে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জেলা আওয়ামীলীগের তিন সহ-সভাপতি রণ বিক্রম ত্রিপুরা, বর্তমান অস্থায়ী চেয়ারম্যান চাইথোঅং মারমা এবং অপর সহ-সভাপতি কংজরী চৌধুরী’র সেয়ানে সেয়ানে লবিংয়ে এখন অনেকটা কাবু হয়ে পড়েছে জেলা আওয়ামীলীগ। নিয়ম অনুযায়ী স্থানীয় সাংসদের ডিও’র কপি পেলেই বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ার কথা। কিন্তু সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, একই সাথে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হওয়ার সুবাদে তিনি বিষয়টি এককভাবে সুরাহা করতে চাচ্ছেন না বলে সূত্র জানায়। এদিকে, সময় যতই গড়াচ্ছে এ তিন নেতা নানাভাবে দলের কেন্দ্রীয় নেতা, সামরিক-বেসামরিক আমলা, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের মাধ্যমে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা’র উপর অব্যাহত চাপ প্রয়োগ করে চলেছেন। এই নিয়ে সংসদ সদস্য গত একমাসে জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বেশ কয়েকবার নীতি-নির্ধারণী সভা করলেও চেয়ারম্যান পদের মনোনয়নের বিষয়ে একমত হতে পারেননি। ফলে দলটির জেলা থেকে তৃণমুল পর্যায়ে পরিষদ পূর্নগঠন নিয়ে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। অপরদিকে সদস্য পদে মনোনয়ন নিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের তরুণ নেতারাও বেশ আগ্রহী। তাঁদের দাবী দলের সাংগঠনিক শক্তিমত্তা এবং সামর্থ্য বিবেচনায় পরিষদ মনোনয়নে নবীন-প্রবীনের সমন্বয় হওয়া খুবই জরুরী। এসব বিষয় নিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ জাহেদুল আলম জানান, বিষয়টি নিতান্তই দলীয় এবং গোপনীয়। তবে দলের বর্তমান-ভবিষ্যত বিবেচনায় আমরা একটি গ্রহনযোগ্য প্যানেল মনোনয়নে আশাবাদী। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, আওয়ামীলীগ একটি বৃহৎ ও পুরনো দল। তাছাড়া পার্বত্যাঞ্চলে নানা ধর্ম ও জাতির নেতাকর্মীর সংমিশ্রনে দল এগিয়ে যাচ্ছে। সে সব বাস্তবতা মাথায় রেখে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কাছাকাছি আমরা এসেছি। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, দলের বৃহত্তর ঐক্য এবং নেতাকর্মীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়াটাই জরুরী।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.