• Hillbd newsletter page
  • Hillbd rss page
  • Hillbd twitter page
  • Hillbd facebook page
সর্বশেষ
খাগড়াছড়িতে গর্ভবতী নারী ও কিশোরীদের মোবাইল প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা ক্যাম্প                    অবশেষে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্ন্তবর্তীকালীন পরিষদ পূর্নগঠন                    সাংবাদিক প্রদীপ চৌধুরীর মুক্তির দাবীতে রাঙামাটিতে প্রতীকি কর্মবিরতি                    খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আটক                    খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে পার্বত্য উপদেষ্টা                    খাগড়াছড়িতে দোকান ভাংচুর ও লুটপাট মামলায় ৫ জন আটক                    খাগড়াছড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের চিকিৎসা ও ওষুধ বিতরণ                    খাগড়াছড়িতে সংঘাত, নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে সম্প্রীতি সমাবেশ                    খাগড়াছড়িতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে,সাপ্তাহিক হাটে উপস্থিতি কম                    খাগড়াছড়ি পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা চলছে,এখনো থমথমে অবস্থা                    অনাকাংখিত পরিস্থিতি এড়াতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি                    পানছড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নারী ও কিশোরীকে চিকিৎসা ও ওষুধ বিতরণ                    মহালছড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ দুইশত পাহাড়ি-বাঙালিকে চিকিৎসা সেবা ও ঔষুধ বিতরণ                    খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির সহিংস ঘটনার তদন্ড শুরু করেছেন তদন্ড কমিটি                    খাগড়াছড়িতে নিহতদের স্বরনে মোমবাতি প্রজ্জলন                    খাগড়াছড়ির ৭২ ঘন্টা সড়ক অবরোধ পালিত,সাজেকের আটকে পড়া পর্যটকরা ফিরবেন আজ                    সড়ক অবরোধের দ্বিতীয় দিন সাজেকে আটকা পড়েছেন প্রায় ১৪শ পর্যটক                    আগামীতে যেন আর ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি না হয়, সজাগ থাকতে হবে-হাসান আরিফ                    শান্তিপূর্ণভাবে সড়ক অবরোধের প্রথমদিন চলছেনা দুরপাল্লার গাড়ি                    দীঘিনালায় সহিংস ঘটনায় নিহত ৩, আহত ১০                    দীঘিনালায় দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া,বাজারে আগুনে পুড়েছে অর্ধ শতাধিক দোকানপাট                    
 
ads

খাগড়াছড়ির ৭২ ঘন্টা সড়ক অবরোধ পালিত,সাজেকের আটকে পড়া পর্যটকরা ফিরবেন আজ

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : হিলবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 23 Sep 2024   Monday

খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সহিংস ঘটনায় উদ্ভুত পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শান্ত। ভয় আর আতংক কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে এখানকার জনজীবন। গতকাল সোমবার খাগড়াছড়ি বাজারের সাপ্তাহিক হাটে মিলিত হন সাধারণ পাহাড়ি ও বাঙ্গালী ক্রেতা-বিক্রেতারা। অনেক পাহাড়ি জুমিয়া তাদের জুমে উৎপাদিত শাক-সবজির পসরা বসিয়েছেন। এখানে নির্ভয়ে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে দেখা গেছে।

দীঘিনালা সড়কের ৫ মাইল নামক এলাকার ভুবন ত্রিপুরা জুমের ভূট্টা নিয়ে ভোরে বাজারে আসেন। তার কাছে ভয়ভীতির চিহৃ দেখা যায়নি। ভূট্টা বিক্রি করে গ্রামে ফিরতেই ব্যস্ততা তার। একইভাবে গাছবান   এলাকার চাইহ্রাপ্রু মারমা জানান, ‘কিছুটা আতংক নিয়েই বাঁশ কোড়ল আর শাক নিয়ে বাজারে এসেছি। আমরা গরীব মানুষ; মারামারি চাইনা।’ জেলার অন্যতম ক্রীড়া সংগঠক ধুমকেতু মারমা বললেন, ‘এত দ্বন্ধ সংঘাত করে লাভ কী। যে ভূল বুঝাবুজি হয়েছে, আসুন তা নিরসন করে এক কাতারে সমবেত হই।’ তিনি গুজবে কান না দিয়ে মিলেমিশে থাকার আহবান জানান।

সুজনের জেলা সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নির্মল কান্তি দাশ বলেন, পাহাড়ে অনাকাংখিত ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়। সুবিধাবাদী গোষ্ঠি স্বার্থ হাসিলের জন্যই নিজেদের মধ্যে দ্বন্ধ সংঘাত জিইয়ে রাখতে চায়। তিনি অপচেষ্টাকারীদের বিষয়ে প্রত্যেককে সজাগ থাকার অনুরোধ জানান।

জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান জানান, ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে চলে এসেছে। বৃহস্পতিবারের পর এ জেলার কোথাও অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি। তবুও সেনাবাহিনী টহলের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। সবখানেই সম্প্রীতি বৈঠক করে পারস্পরিক আস্থা বিশ্বাস বাড়ানোর কাজ চলছে। ভবিষ্যতে এমন অনাকাংখিত ঘটনা ঘটবেনা বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এদিকে জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা ৭২ ঘন্টার সড়ক অবরোধের শেষ দিনও খাগড়াছড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে কেটেছে।  যথারীতি দুরপাল্লাসহ অভ্যন্তরিন সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। শহর ও শহরতলী কেন্দ্রীক অটো-রিক্সা, ইজিবাইক ও মটর সাইকেল চলাচল স্বাভাবিক ছিল। অবরোধকে কেন্দ্র করে জেলার কোথায় উল্লেখযোগ্য ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে, জেলার মানিকছড়ি কলেজ এলাকায় দুপুর পর্যন্ত অবরোধের সমর্থনে খাগড়াছড়ি -চট্টগ্রাম সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। কিছু স্থানে সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করা হয়। পানছড়ি সড়কেও রাস্তায় ব্যরিকেট ছিল।

এদিকে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রতিক ঘটনার জেরে জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুব কম ছিল। সোমবারও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফটক বন্ধ দেখা গেছে। খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ লে: কর্নেল রুবায়েত জানান, বিশেষ পরিস্থিতির কারণে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। মঙ্গলবার থেকে যথারীতি ক্লাস ও অন্যান্য পরীক্ষা কার্যক্রম চলবে।

অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থন দেয়া পাহাড়ের আঞ্চলিক দল ‘ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট’ (ইউপিডিএফ) এর জেলা সংগঠক ও মূখপাত্র অংগ্য মারমা জানান, বাহাত্তর ঘন্টার সড়ক অবরোধ বড় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়েছে। এজন্য তিনি তিন পার্বত্য জেলাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। একই সাথে বলেন, বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা ঘটিয়েছে। অতীতে সৃষ্ট ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়ায় এই ধরণের ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটছে। তিনি একটি আন্তর্জাতিকমানের তদন্ত করে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি সহিংসায় জড়িতদের বিচার করার দাবী জানান।

দীঘিনালা প্রতিনিধি জানান, সোমবার সন্ধা ৬টায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শেষ হলেও সাজেকে আটকে পড়া পর্যটকদের খাগড়াছড়িতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছেনা। কারণ, রাঙ্গামাটির বাঘাইহাট থেকে সাজেক পর্যন্ত সড়কে তিনটি বেইলি ব্রিজের পাটাতন তুলে ফেলে দিয়েছে অবরোধকারীরা। এছাড়া সড়কে একাধিক স্থানে গাছ কেটে সড়কে ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়। অবরোধ শেষে এসব পরিস্কার করতেও অনেক সময় লেগে যাবে। সেক্ষেত্রে পরদিন (মঙ্গলবার) আটকে পড়া পর্যটকরা ফিরবেন।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার জানিয়েছেন, সোমবার সাজেক থেকে বেসরকারি হেলিকপ্টারযোগে ২০জনের মত পর্যটক ঢাকায় ফিরেছেন। সড়ক চলাচল নির্বিঘ্ন করে বাকি পর্যটকদের মঙ্গলবার ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কটেজ মালিক সমিতি অব সাজেক এর সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জন জানান, পর্যটকদের রিসোর্ট ও কটেজে অবস্থানের জন্য ৭৫ ভাগ ডিসকাউন্ট দিয়েছে সমিতি। এর বাইরে সোমবার রাতে ১৫০০ পর্যটকের জন্য খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। টুরিজম এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও কটেজ মালিক সমিতি অব সাজেক এর অর্থায়ন করছে।

এদিকে দূর্বৃত্তের আগুনে দীঘিনালা বাস টার্মিনাল সংলগ্ন লারমা স্কোয়ার বাজারে ১০৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পড়েছে বলে জানিয়েছে বাজার পরিচালনা কমিটি। তাতে প্রায়  ৬ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়।

লারমা স্কোয়ার বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিপুন চাকমা (নিপু) জানান, শতাধিক ব্যবসায়িক দোকান পুড়ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়িরা। আবার অনেক ব্যবসায়িরা দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করতেন। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ির পাশাপাশি দোকান ঘরের মালিকরাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এর বাহিরে কিছু ভাসমান ঘর ছিল, যেখানে অস্থায়ীভাবে কিছু লোক ব্যবসা করতেন। অগ্নিকান্ডে তাদেরও ক্ষতি হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে জেলা সদরের শালবন এলাকার বাসিন্দা মো: মামুনকে চুরির অভিযোগ পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনার জেরে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সহিংসতায় ৪জন নিহত ও বহু লোক আহত হন।

---হিলবিডি/সম্পদনা/এ,ই

ads
ads
আর্কাইভ