বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে নির্বাচন পেছানো হবে। এখনো সময় রয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার(ইসি) মোঃ আনিছুর রহমান।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে ৪৬টি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন রয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি দল নির্বাচনে এসেছে। বাকীগুলো ১৮টি দল আসেনি। যারা আসবে না তাদের আনার কোন উপায় আমাদের কোন হাত নেই। নির্বাচন করা না করা তাদের সিদ্ধান্ত। তবে নির্বাচন কমিশন তাদের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে আহবান জানাচ্ছে। কোন অভাব অভিযোগ থাকলে নির্বাচন কমিশনকে বলুক। এমনকি আলোচনায়ও অংশ নেননি। তবে অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ, পক্ষপাতহীন নির্বাচনের জন্য যা যা করনীয় তা করা হবে। যদি কেউ তার ব্যতয় ঘটায় তাকে সেই দায়দায়িত্ব বহন করতে হবে। এ ব্যাপারে কমিশন সামান্যতম ছাড় ও পিছপা হবে না বলে তিনি হুশিয়ারী করেন।
তিনি আরো বলেন, পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জনপ্রশাসন থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। যাতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি বৈধ অস্ত্রও যেনো অবৈধভাবে ব্যবহার করা না হয় ব্যবস্থা নিতে। তবে এ অঞ্চলের এটি নিয়মিত কর্মসূচি হিসেবে শুধু একটা না বিভিন্ন বাহিনী এ কাজ করে থাকে। সরকারের ষ্ট্যান্ডিং অর্ডারও রয়েছে।
সোমবার আয়োজিত রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান এসব কথা বলেন।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভা শুরু সকাল ১১টার দিকে। এতে শেষ হয় দুপুর ২টায়। এ মতবিনিময় সভায় এসময় উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান, রাঙামাটি পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর, রাঙামাটি বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সাহিদুর রহমান ওসমানসহ দুই জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, দুই জেলার সকল থানার ওসি, আনসার গোয়েন্দা সংস্থার জেলার শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান দুই জেলার প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নির্বাচন ব্যাপরে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান আরো বলেন,কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ করবে কিনা সেটা তারা সিদ্ধান্ত নেবে। তবে কাউকে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে না দেওয়া কিংবা নির্বাচন বানচাল করা তাদের কোন অধিকার নেই। প্রত্যেক নাগরিকের নির্বাচন করার অধিকার রয়েছে, সে অধিকারের পরিপন্থী কোন কিছু করার সমাসীন হবে না। আসন্ন নির্বাচনে নির্বাচন বিধি যেন লংঘন করা না হয় সেজন্য রির্টানিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তারা স্ব স্ব আসনে লেভেল প্লেয়িং পরিবেশ বজায় রাখতে কাজ করবেন। সে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, অতীতের সকল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। এবারও সারাদেশে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে বিশেষ অঞ্চল হিসেবে আগে থেকে সেনাবাহিনী রয়েছে সেহেতু এ অঞ্চলে নতুন করে কৌশগত পরিকল্পনা নিতে হবে না।
বিদেশী মহলের কোন চাপ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আর্ন্তজাতিক মহলের কাছে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটা গ্রহণযোগ্য হয় তার জন্য বিদেশী পর্যবেক্ষদের বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষনে আসার আবেদনের ২৬ নভেম্বর সময়সীমা শেষ হলেও তা আরো ৭ ডিসেম্বর পর্ষন্ত বাড়ানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আরো ৫০টি দেশ থেকে বিদেশী পর্যবেক্ষক বাংলাদেশে আসার জন্য আবেদন করেছেন।
তিনি অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নির্বাচন কমিশনের সংবিধান অনুযায়ী দুটি নির্বাচন করে থাকে। একটা হল রাষ্ট্রপতির নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তবে যদি সংসদের আইন দ্বারা আইন প্রনয়ন করে তাহলে নির্বাচন কমিশন তা করবে। সরকার যদি অনুরোধ করে থাকে তাহলে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম স্থানীয় পরিষদ নির্বাচন করবে। এতে নির্বাচন কমিশন সব ধরনের নির্বাচন করতে প্রস্তুুত।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষন করতে সাংবাদিকদের জন্য নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা দেওয়া হয়েছে। এখানে সববিধিমালা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারকে বলে দেওয়া রয়েছে তারা ব্রিফ করবেন। নির্বাচন কমিশন সাংবাদিকদের চোখে ভালো মন্দ নির্বাচন দেখতে চাই। অনেক ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের প্রকাশিত প্রতিবেদন পেয়ে থাকি এবং গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই আপনারা বিধিমালা সঠিকভাবে পড়ে নিয়ে আপনাদের দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন প্রস্তুতির জন্য দুই জেলা প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সাথে আলোচনা করেছি। কারণ সমতলের থেকে এ অঞ্চলটি বিশেষ অঞ্চল। এখানকার কি কি সুবিধা অসিুবিধার রয়েছে তা সভায় উঠে এসেছে। এসব অসুবিধাগুলো নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরা হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.