মারমা সংস্কৃতি ও ঐহিত্য রক্ষার্থে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে নতুন বছরের প্রথম দিন মারমা নববর্ষ পালন করলো কাউখালী উপজেলার মারমা জনগোষ্ঠি। ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাইয়ে জলকেলিতে (পানি খেলা) শুক্রবার উপজেলার কচুখালীতে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মারমা সংস্কৃতিক সংস্থা-মাসস’র উপদেষ্টা চিংকিউ রোয়াজা। বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ও কাউখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অংসুই প্রু চৌধুরী, কাউখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌচা মং চৌধুরী, কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া আকতার, স্থানীয় শিক্ষক চিংকিউ চৌধুরী ও উক্যজাই কার্বারী, সাংগ্রাই উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব পাইসুইচিং মারমা প্রমূখ। এতে সভাপতিত্ব করেন ঘাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও সাংগ্রাই উদযাপন কমিটির সভাপতি থুইমং মারমা।
অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলমপতি ইউপি চেয়ারম্যান ক্যজাই মারমা, বেতবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সামশুদোহা চৌধুরী, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য উষাহলা রোয়াজা, কাউখালী থানার ওসি নীলু কান্তি বড়–য়া, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক প্রমূখ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ফিতা কেটে জলকেলির উদ্বোধন করে মারমা যুবক যুবতিদের গায়ে পানি ছিটিয়ে জলকেলির শুভ সুচনা করেন। জলকেলির পর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মারমা শিল্পিদের পরিবেশনায় মণোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিথ হয়। কড়া রোদের তীব্রতা উপেক্ষা করে উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি পল্লি থেকে এ উৎসবে কয়েক হাজার মারমা জনগোষ্ঠির নারি পুরুষ ছাড়াও বিপুল পরিমান বাঙালী সম্প্রদায়ও এ উৎসবে যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এখানে বসবাসরত মুসলমান, হিন্দু, চাকমা, মারমাসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যে সকল জাতি সত্ত্বা রয়েছে তারা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক এক কথায় আমরা সবাই বাংলাদেশি। আমাদের মাঝে কোন ভেদাভেদ নাই। এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠির ভাষা, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ আর্থ সামাজিক উন্নয়নে যা যা করা প্রয়োজন তা করতে বর্তমান সরকার সব ধরণের সহযোগীতা করে যাচ্ছে। বক্তারা বলেছেন যার যার যে ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে আমাদেরকে সে গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চিংকিউ রোয়াজা বলেন, সাংগ্রাই উৎসব শুধু মারমা সম্প্রদায়ের নয় এ উৎসব এ এলাকায় বসবাসরত সকল সম্প্রদায়ের উৎসবে পরিনত করতে হবে। এ ধরনের অনুষ্ঠান এ এলাকায় বসবাসরত সকল সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীকে ভ্রাতৃত্বের সর্ম্পককে আরো সুদঢ় করে তুলবে। এখন সময় এসেছে তা সকলের মধ্যে পৌছে দেওয়ার।
উল্লেখ্য,পুরাতন বছরের সকল গ্লানি মুছে ফেলে নতুন বছরের শুভ কামনার জন্য বৃহত্তম এ আয়োজন করা হয় প্রতিবছর। পার্বত্য জনপদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠির নিজ নিজ ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কাউখালী উপজেলা সদরে কচুখালী যুব সমাজ আয়োজন করে এ বর্ণিল অনুষ্ঠানের।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.