নৌবাহিনীর প্রশিণ, দেশ গঠন ও পার্বত্য এলাকায় মানবিক সহায়তায় প্রদানের অনন্য স্বীকৃতি স্বরূপ রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জম ঘাঁটিকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করলেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গভবন থেকে ভিডিও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জম ঘাঁটিকে এই ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করেন।
১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই ঘাঁটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকদের পেশাগত প্রশিণ এবং পার্বত্য এলাকায় বিভিন্ন দূর্যোগে উদ্ধারকার্য, মানবিক সহায়তা, পাহাড়ি জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সকল স্তরের কর্মকর্তা ও নাবিকদের প্রযুক্তিগত প্রশিণ প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। পাশাপাশি এই ঘাঁটি সেনা ও বিমান বাহিনীর জন্যে স্বল্পমেয়াদী কোর্স যেমন-ফ্রগম্যানশিপ কোর্স, স্কুবা ডাইভিং কোর্স, ওয়াটারম্যান শিপ কোর্স ইত্যাদি পরিচালনা করে থাকে। বাংলাদেশী নৌ-সদস্যদের পাশাপাশি নাইজেরিয়া, ফিলিস্তিন, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, কাতার এবং কুয়েতসহ বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তা ও নাবিকরাও এই ঘাঁটিতে প্রশিণ গ্রহণ করে আসছেন।
ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি আধুনিক নৌবাহিনী গড়ে তোলার সূদুর প্রসারী স্বপ্ন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ একটি মর্যাদাশীল ত্রি-মাত্রিক নৌবাহিনীতে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরা মিশনসহ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনী দেশ গঠন, উন্নয়ন ও যেকোন দূর্যোগ মোকাবেলায় সর্বদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ বিশাল সমুদ্রের নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি মানব পাচার ও চোরাচালান রোধ, জেলেদের নিরাপত্তা বিধান, বাণিজ্যিক জাহাজের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করণসহ দেশের ভূু-ইকনোমি’র বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে নৌবাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। পাশাপাশি তিনি দেশের যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলা ও মানবিক সহায়তায় নৌবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন। কোভিড-১৯ মহামারি সত্ত্বেও বানৌজা`র প্রশিণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং নৌবহরকে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে সবধরনের প্রশাসনিক ও লজিস্টিক্স সহায়তা প্রদানের জন্য তিনি বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জমের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও নৌ-সদস্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের এই শুভণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জ্বীবিত হয়ে দেশের জনগণের পবিত্র আমানত নৌ স্থাপনা, যুদ্ধজাহাজ ও সামরিক সরঞ্জামকে কাজে লাগিয়ে সকল নৌসদস্যগণ তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠা এবং পেশাগত দতার সাথে পালন করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির পে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল, এনবিপি, এনইউপি, এনডিসি, এএফডবি-উসি, পিএসসি, বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জম ঘাঁটির অধিনায়ক কমডোর এম মনির উদ্দিন মল্লিকের নিকট ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড তুলে দেন। এ সময় ন্যাশনাল স্টান্ডার্ন্ড প্রদান অনুষ্ঠানে এসম অন্যান্যের মধ্যে নৌ সদর দপ্তরের পিএসওগণ, চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডাররা, মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী নৌ-কমান্ডোগণ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.