এ কুল ভাঙ্গে ও কুল গড়ে এই তো নদীর খেলা--চেঙ্গী ও মাইনি নদীর এই খেলার মাঝে বিলিন হয়ে যাচ্ছে খাগড়াছড়ির দুই পাড়ের অনেক এলাকার পাঁচ শতাধিক বাড়ীঘর । বাড়ীঘর হারিয়ে অসহায় হচ্ছে অনেক পরিবার। খাগড়াছড়ির চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ভাঙ্গন দ্রুত রোধ করতে না পারলে অচিরে নদীর গর্ভে বিলিন হবে যাবে অনেক গুলো গ্রাম। বিগত কয়েক বছরের বন্যায় প্রায় দুইশতের অধিক বাড়ী ঘর বিলিন হয়ে গেছে নদীর গর্ভে।
প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে খাগড়াছড়ির চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ভাঙ্গনে নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে যায় অনেক এলাকা ,অনেক বাড়ীঘর। এ সময় আতংকে থাকে নদীর পাড়ের মানুষজন। কারন কখন ভেঙ্গে যায় তাদের বসত ভিটা। অনেক এলাকা ও অনেকের বাড়ীঘর ভেঙ্গে গেলেও নদী ভাঙ্গন রোধে এখনো কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি সরকার। যারা এখনো নদীর পাড়ে কোন রকমে ঠিকে আছে তাদের দাবী অচিরে যেন নদীর পাড় ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নেয় সরকার। যদি সরকার দ্রুত কোন পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে বাড়ীঘর বিলিন হয়ে যাবে নদী গর্ভে। হারাবে তাদের বসতভিটা অসহায় হয়ে পড়বে হাজার হাজার মানুষজন। এ ছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে শ্বশানসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ।
এ রকম চেঙ্গী নদীর ভাঙ্গনের কবলে আছে খাগড়াছড়ি সদরের যুবরাজ পাড়া,খবং পুড়িয়া,গজ্ঞ পাড়া,শব্দ মিয়া, কালাডেবা,বটতলী চাকমা পাড়া,অপর্না চৌধুরী পাড়া,গাছবানসহ শতাধিক গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক পরিবারের প্রায় কয়েক হাজারের অধিক লোক এখন ঝুকিতে বসবাস করছে।
অন্যদিকে দীঘিনালার মাইনি নদীর কবলে আছে নুনছড়ি, উদোল বাগান, তেবাংছড়া,নৌকোছড়া কাতারুং বড়াদাম,নারিকেল বাগানসহ শতাধিক গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক পরিবারের কয়েক হাজারে অধিক লোক। এছাড়া ও খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলা ছোটখাত অনেক খালের কবলে ভেঙ্গে যাচ্ছে অনেক এলাকা।
খাগড়াছড়ির চেঙ্গী ও মাইনি নদীর পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীদের দাবী অচিরে যেন সরকার নদীর পাড় ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা করে তাদের বাড়ীঘর রক্ষা করার ব্যবস্থা করেন। তারাসহ সকলেরই একটাই দাবী আওয়ামীলীগ সরকারের দুই মেয়াদের শেষে যেন চেঙ্গী, মাইনি,ফেনীসহ খাগড়াছড়ির সকল নদী ও খালে যে সমস্ত এলাকা ভেঙ্গে যাচ্ছে তা অচিরেই ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নেয়।
খাগড়াছড়ি সদরের গঞ্জপাড়া গ্রামের লাব্রে মারমা ও মোঃ খলিল মিয়া বলেন তাদের গ্রামের বিগত কয়েক বছরে প্রায় শতাধিক বাড়ীঘর নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়া অনেক বাড়ীঘর এখনো ভাঙ্গনের কবলে আছে। বেশ কয়েক বার বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও টেলিভিশনের প্রচার হলেও সরকার কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
সদর উপজেলা পেরাছড়া ইউনিয়নের যুবরাজ পাড়া গ্রামের জুনেল চাকমা ও রমেল চাকমা বলেন তাদের গ্রামেও প্রায় শতাধিক বাড়ীঘর চলে গেছে নদী গর্ভে।
এদিক পৌরসভা ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও খাগড়াছড়ি মিউনিসিপ্যাল মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক অমরেন্দ্র চাকমা বলেন বটতলী চাকমা পাড়া গ্রামের রাস্তাসহ কয়েকটি বাড়ীঘর নদী ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে গেছে। সরকার যদি ভাঙ্গন রোধ কল্পে কোন ব্যবস্থা না নেনে তাহলে বটতলী এলাকায় দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নদীর গর্ভে বিলিন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
খাগড়াছড়ি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী, নিকেল চাকমা জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড, খাগড়াছড়ি শহর ও অবকাঠামো রক্ষা কল্পে নদী শাসনের আওয়াতায় আনার জন্য চেঙ্গী এবং মাইনি নদীর ৯০ কিলোমিটার ড্রেজিং আওয়াতা ও ২৫টি ঝুকি পূর্ন পয়েন্ট নিধারন করে একটি বিশাল উন্নয়ন মূলক প্রকল্প মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলে, চেঙ্গী ও মাইনি নদীর পাড় ভাঙ্গন রোধে কাজ শুরু করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.