অভিজিৎ রায়ের খুনীদের গ্রেফতার ও বিচার এবং দেশব্যাপী খুন, গুম ও দমন-পীড়ন বন্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাঙামাটিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র ফ্রন্টের জেলা শাখার আহ্বায়ক ছাত্রনেতা জয়কুমার চাকমা। বক্তব্য রাখেন, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক কমরেড বোধিসত্ব চাকমা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা শাখার সদস্য চাইথোয়াই মারমা, সংগঠনের রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আশাধন চাকমা, বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্রের সংগঠক নয়ন বিকাশ দেওয়ান প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান বনরূপ প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বাক্তারা বলেন, মুক্ত চিন্তার বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকান্ডের দায় সরকারও এড়াতে পারে না। পুলিশকে পূর্বেই জানানো হয়েছিল অভিজিৎ রায়কে হত্যার হুমকির কথা। তা সত্বেও তারা পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। পুলিশের এই দায়িত্বহীন আচরণের বলি হতে হল অভিজিৎ রায়কে। বক্তারা অবিলমে¦ অভিজিৎ রায় হত্যাকান্ডের বিচার ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারসহ সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জোর দাবী জানান।
বক্তারা আরও বলেন, দেশে মুক্ত চিন্তার লেখক বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঘটনা এর আগেও অনেক ঘটেছে। কিন্তু কোন সরকারই হত্যাকারীদের গ্রেফতার করেনি; বিচার হয়নি কোন ঘটনারই। বরং বুর্জোয়া রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতায় যাবার ও ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে জামাত-শিবিরসহ দেশের সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী শক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে নানা সময়ে। এর ফলে দেশে মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক শক্তি এখন গণতন্ত্র ও মুক্ত চিন্তার বড় হুমকী হয়ে উঠেছে।
বক্তারা বর্তমান জাতীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ক্ষমতায় বসে মহাজোট সরকার জনগণের মৌলিক অধিকার সংকোচনের পাশাপাশি ক্রসফায়ার, গুম-খুনকে রীতিসিদ্ধ ব্যাপারে পরিণত করেছে। জনজীবনকে নিরাপত্তাহীন করে তুলেছে। অন্যদিকে প্রধান বিরোধী জোট আন্দোলনের নামে মানুষ পোড়াচ্ছে। এই দুই বুর্জোয়া রাজনৈতিক দল তাদের ক্ষমতাকেন্দ্রিক হিং¯্র প্রতিযোগিতার মধ্যে মানুষকে ঠেলে দিয়েছে। ক্ষমতা কেন্দ্রিক এই হানাহানির মধে সাধারণ মানুষ দিশেহারা ও অসহায় । সাধারণ মানুষ এই ক্ষমতা কেন্দ্রীক হানাহানি চায় না। অন্যদিকে এই সুযোগে আবারও বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা চলছে।
বক্তারা বলেন, দুই বুর্জোয়া জোটের দিকে তাকিয়ে তাকলে সমস্যার সমাধান আসবে না। এর থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হলো বাম গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে শক্তিশালী করা। একমাত্র বাম গণতান্ত্রিক শক্তিই দেশে দেশপ্রেমিক ও গণতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে অবস্থান করছে। বক্তারা বাম গণতান্ত্রিক শক্তির আন্দোলনকে শক্তিশালী করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.