পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে স্বরাষ্টমন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবীতে মঙ্গলবার রাঙামাটিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্বারকলিপি পাঠিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি।
উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের‘শান্তি চুক্তি পরবর্তী পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ক’ এক সভায়দেশী-বিদেশী ব্যক্তি/সংস্থা কর্তৃক পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়িদের সাথে সাক্ষাতের সময় স্থানীয় প্রশাসন এবং সেনাবাহিনী/বিজিবি-এর উপস্থিতি, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রমণে ইচ্ছুক বিদেশী নাগরিকদের ভ্রমণের একমাস আগে অনুমতির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার বিধান, পার্বত্য চট্টগ্রামের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসমূহের দায়িত্ব পালন করা, পার্বত্য জেলাসমূহে পুলিশ/আনসার বাহিনীতে কর্মরত প্রাক্তন শান্তি বাহিনীর সদস্যদের পর্যায়ক্রমে অন্য জেলায় বদলির ব্যবস্থা ইত্যাদি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
মঙ্গলবার সকালের দিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক নীলোৎপল খীসার নেতৃত্বে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইফ উদ্দীনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষে অতি সম্প্রতি যে মুহূর্তে সরকার, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা ও উদ্যোগ শুরু হয়েছে, সেই মুহূর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও দু:খজনক।বিশেষ করেপার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০০১-এর বিরোধাত্মক ধারা সংশোধন এবং চুক্তির অন্যান্য বিষয় বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে, ঠিক সেই মুহূর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পরিপন্থী, বর্ণবাদী ও সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এখনো ডেপুটি কমিশনার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা সংশোধন করা হয়নি। ফলতডেপুটি কমিশনার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন উপেক্ষা করে পূর্বের ন্যায় আইন-শৃঙ্খলাসহ অন্যান্য ক্ষমতা প্রয়োগ করে চলেছে যা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী এবং পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে চলেছে।
স্মারকলিপিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতিসমিতিস্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরউক্ত বর্ণবাদী, বৈষম্যমূলক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পরিপন্থীসিদ্ধান্তাবলীঅনতিবিলম্বে বাতিলকরার দাবি জানানো হয়েছে।
নিচে স্মারকলিপিটি হুবহু দেয়া গেল--
স্মারকলিপি
বরাবরে,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, তেজগাঁও
ঢাকা।
মাধ্যম: ডেপুটি কমিশনার, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।
মহাশয়,
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন।
আপনি নিশ্চয় অবগত হয়েছেন যে, গত ৭ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখেস্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীরসভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের‘শান্তিচুক্তি পরবর্তীপার্বত্য চট্টগ্রামেরপরিস্থিতি ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ক’ একসভায়দেশী-বিদেশী ব্যক্তি/সংস্থা কর্তৃক পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়িদের সাথে সাক্ষাতের সময় স্থানীয় প্রশাসন এবং সেনাবাহিনী/বিজিবি-এর উপস্থিতি, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রমণে ইচ্ছুক বিদেশী নাগরিকদের ভ্রমণের একমাস আগে অনুমতির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার বিধান, পার্বত্য চট্টগ্রামের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসমূহের দায়িত্ব পালন করা, পার্বত্য জেলাসমূহে পুলিশ/আনসার বাহিনীতে কর্মরত প্রাক্তন শান্তিবাহিনীর সদস্যদের পর্যায়ক্রমে অন্য জেলায় বদলির ব্যবস্থা ইত্যাদি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উক্ত সভায় পার্বত্য চট্টগ্রামমন্ত্রণালয়েরসচিব “অধিকাংশ চুক্তি ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হলেও পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র বোধি প্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) স্বীকার করেন না। উপজাতীয় নেতৃবৃন্দের বিরোধিতার কারণে গত ২২ বছরেও তিন পার্বত্য জেলায় স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি”ইত্যাদি বাস্তব-বিবর্জিত ও উস্কানীমূলক বক্তব্য প্রদান করেন। এমনকি জেএসএস-এর কাছেও অবৈধ অস্ত্র রয়েছে বলে তিনি উদ্দেশ্য-প্রণোদিত অভিমত তুলে ধরেন।
বস্তুত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষে অতি সম্প্রতি যে মুহূর্তে সরকার, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা ও উদ্যোগ শুরু হয়েছে, সেই মুহূর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও দু:খজনক।বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০০১-এর বিরোধাত্মক ধারা সংশোধন এবং চুক্তির অন্যান্য বিষয় বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে, ঠিক সেই মুহূর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পরিপন্থী, বর্ণবাদী ও সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে।
উক্ত সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেছেন, “অধিকাংশ চুক্তি ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হলেও পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) স্বীকার করেন না। উপজাতীয় নেতৃবৃন্দের বিরোধিতার কারণে গত ২২ বছরেও তিন পার্বত্য জেলায় স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি।...” ইত্যাদি। পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের সচিবের উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত ও বাস্তব-বিবর্জিত। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে মাত্র ২৫টি বাস্তবায়িত হয়েছে এবং অবশিষ্ট দুই-তৃতীয়াংশ ধারা এখনো অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মৌলিক বিষয় সমূহের মধ্যে বিশেষত উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ; আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের আইন কার্যকর করণ এবং এসব পরিষদগুলোর আইন মোতাবেক নির্বাচন বিধিমালা এবং স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়নের লক্ষে ভোটার তালিকা বিধিমালা প্রণয়ন পূর্বক এসব পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা;পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০০১-এর বিরোধাত্মক ধারা সংশোধন পূর্বক ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিকরণ; আভ্যন্তরীণ জুম্ম উদ্বাস্তু ও প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থীদের পুনর্বাসন; সেনাশাসন‘অপারেশন উত্তরণ’সহ সকল অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার; অস্থানীয়দের নিকট প্রদত্ত ভূমি ইজারা বাতিল করণ; পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল চাকরিতে জুম্মদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তিন পার্বত্য জেলার স্থায়ী অধিবাসীদের নিয়োগ; পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনের সাথে সঙ্গতি রেখে তিন পার্বত্য জেলার ডেপুটি কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা নির্ধারণ করাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রযোজ্য অন্যান্য আইনসমূহ সংশোধন করা ইত্যাদি বিষয়গুলো এখনো অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে।
উক্ত সভায়“কোন দেশী-বিদেশী ব্যক্তি/সংস্থা কর্তৃক পার্বত্য অঞ্চলে উপজাতীয়দের সাথে সাক্ষাত কিংবা বৈঠক করতে চাইলে স্থানীয় প্রশাসন এবং সেনাবাহিনী/বিজিবিএর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে”এবং সাধারণ বিদেশী নাগরিকদের পার্বত্য চট্টগ্রাম ভ্রমণ করতে চাইলে অন্তত একমাস পূর্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে অনুমতি নিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরএ ধরনের সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক, জাতি বিদ্বেষী এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পরিপন্থী।বাংলাদেশের অন্য কোন অঞ্চলে স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে সাক্ষাতের সময় প্রশাসন বা নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতির নিশ্চিত করার প্রয়োজন হয় না কিংবা বিদেশী নাগরিকদের ভ্রমণে অনুমতি নিতে হয় না সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামের বেলায় প্রশাসন বা নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি এবং অনুমতি নেয়ার বিধানজারী করা বৈষম্যমূলক, অগণতান্ত্রিক ও পাহাড়িদের উপর দমনমূলক নীতি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এছাড়া কোন দেশী-বিদেশী ব্যক্তি বাসংস্থা কর্তৃক পাহাড়িদের সাথে সাক্ষাত করার সময় স্থানীয় প্রশাসন এবং সেনাবাহিনী/বিজিবিএর উপস্থিতি নিশ্চিত করার বিষয়টি সম্পূর্ণ বর্ণবাদী ও সাম্প্রদায়িক নীতিরই বহি:প্রকাশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত সংবিধানের ২৮(১) অনুচ্ছেদের “কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না” এর সাথে সাংঘর্ষিক ও সরাসরি লঙ্ঘন বলে বিবেচনা করা যায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উক্ত সিদ্ধান্তে বিদেশীদের নিয়ন্ত্রণ করার অজুহাত হলেও মূল টার্গেট হচ্ছে পাহাড়ি জনগণ এবং তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা বলে প্রতীয়মান হয়।
উক্ত সভায় “পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত ২৪ পদাতিক ভিডিশনের সাথে পারষ্পরিক সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহ দায়িত্ব পালন করবে” এবং “পার্বত্য জেলা সমূহে পুলিশ/আনসার বাহিনীতে কর্মরত প্রাক্তন শান্তি বাহিনীর সদস্যদের পর্যায়ক্রমে অন্য জেলায় বদলির ব্যবস্থা করতে হবে” বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বস্তুত: পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে পুলিশ (স্থানীয়) এবং আইন-শৃঙ্খলা বিষয়টি পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তরের বিধান করা হয়েছে। কিন্তু এখনো উক্ত বিষয়টি এসব পরিষদে হস্তান্তরিত হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে মিশ্র পুলিশ বাহিনী গঠনের লক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত পাহাড়ি পুলিশ সদস্যদের তিন পার্বত্য জেলায় বদলির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়নের উক্ত প্রক্রিয়ার বিপরীতে উক্ত সভায় পার্বত্য জেলায় বদলিকৃত উপজাতীয়/প্রাক্তন শান্তিবাহিনীর পুলিশ সদস্যদের পুনরায় সমতল জেলায় বদলিকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে যা সরাসরি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের সাথে বিরোধাত্মক ওজাতিগতভাবে বৈষম্যমূলক। এমনকি আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট আইন-শৃঙ্খলা বিষয়টি হস্তান্তর না করে সেনাবাহিনীর উপর আইন-শৃঙ্খলার পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান করার সিদ্ধান্তও আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের সমন্বয়ে প্রবর্তিত পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ শাসন ব্যবস্থার পরিপন্থী।
আরো উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এখনো ডেপুটি কমিশনার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা সংশোধন করা হয়নি। ফলত ডেপুটি কমিশনার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন উপেক্ষা করে পূর্বের ন্যায় আইন-শৃঙ্খলাসহ অন্যান্য ক্ষমতা প্রয়োগ করে চলেছে যা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী এবং পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে চলেছে।
এমতাবস্থায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উক্ত বর্ণবাদী, বৈষম্যমূলক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পরিপন্থী সিদ্ধান্তাবলী অনতিবিলম্বে বাতিল করার দাবি জানাচ্ছে।
তারিখ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
(প্রণতি বিকাশ চাকমা)
সাধারণ সম্পাদক
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি।