আগামী ১২মে মধ্যরাত থেকে তিন মাসের জন্য রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ হচ্ছে। হ্রদে মাছের সুষ্ঠু প্রাকৃতিক প্রজনন, বংশ বিস্তার ও উৎপাদন বাড়াতে প্রতি বছরের মতো এবারও আদেশটি জারি করছে জেলা প্রশাসন। মাছ ধরা বন্ধকালীন জেলেদের মাঝে ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে বিনামূল্যে চাল বিতরণ করা হবে।
সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) রাঙ্গামাটির ব্যবস্থাপক কমান্ডার মাইনুল ইসলাম, কাপ্তাই হ্রদে দায়িত্বপ্রাপ্ত নৌপুলিশ কর্মকর্তা মো. তাজউদ্দিনসহ মৎস্য ব্যবসায়ী, জেলে প্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন বলেন, কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা চলাকালে হ্রদের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সহায়তা করবেন। ওই সময়ে কোনো জাল আটক করা হলে সেগুলো নিলামে না দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, বন্ধ সময়ে হ্রদে কারেন্ট জাল, কাথা জাল, বেড়া জাল, মশারি জাল এবং ফাঁস জালসহ কোনো কিছু দিয়ে মাছ ধরা যাবে না। হ্রদে মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে রাঙ্গামাটি ফিশারিঘাট, জেলা পরিষদঘাট, লংগদু, বাঘাইছড়ি, কাপ্তাই, ডিসি বাংলোঘাটসহ সুবিধাজনক জায়গায় মাছের পোনা অবমুক্তকরণ করা হবে। হ্রদ এলাকার ছয়টি মৎস্য অভয়াশ্রমে সব মৌসুমে মাছ শিকার ও আহরণ বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি হ্রদে মাছ শিকার বন্ধকালে জেলে পরিবারদের সহায়তায় ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে চাল বিতরণ করা হবে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১২মে মধ্যরাত থেকে তিন মাসের জন্য কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের মাছ শিকার, আহরণ, পরিবহন ও বাজারজাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। শিগগিরই গেজেটে আদেশটি জারি করবে জেলা প্রশাসন।
সভায় বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম জলরাশি রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বিশাল কাপ্তাই হ্রদে চলতি মৌসুমে মাছের সুষ্ঠু ও প্রাকৃতিক প্রজনন, বংশ বিস্তার, মজুদ এবং ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সব ধরনের মৎস্য আহরণ, পরিবহন ও বিপণন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। আদেশটি কার্যকর করতে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ মৎস্য কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) পাশাপাশি নৌপুলিশসহ আইনশৃংখলা বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকবে। এছাড়া সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তি সমন্বয়ে ১০ সদস্যের একটি ভিজিল্যান্স টীম গঠন করা হয়েছে।
নৌপুলিশ কর্মকর্তা মো. তাজউদ্দিন বলেন, বন্ধকালীন হ্রদে অবৈধ মাছ শিকার রোধে প্রশাসন ও বিএফডিসির সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্বে থাকবে ১৫০ নৌপুলিশ সদস্য। তারা ছয়টি পয়েন্টে ক্যাম্প করে সার্বক্ষণিক টহলে নিয়োজিত থাকবে। পয়েন্টগুলো হল- বালুখালী, সুবলং, ফোরের মুখ, বুড়িঘাট, বড়ইছড়ি ও গোদারপাড়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.