রোববার থেকে সপ্তাহ ব্যাপী খাগড়াছড়িতে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাতৃভাষাভিত্তিক বহুভাষিক শিক্ষা কার্যক্রমের উপর শিক্ষক মৌলিক প্রশিক্ষনের উদ্ধোধন করা হয়েছে।
শহরের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাবারাং কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে ও আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন-এর সহযোগিতায় আয়োজিত প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্ধোধক ও প্রধান অতিথি ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রিটন কুমার বড়ুয়া, খাগড়াছড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট-এর উপ-পরিচালক সুসময় চাকমা, সেভ দ্য চিলড্রেন-ইন্টারন্যাশনাল-এর পরিচালক এমএলই মিজ্ মেহেরুন নাহার স্বপ্না প্রমূখ। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা।
মাতৃভাষাভিত্তিক বহুভাষিক শিক্ষা কর্মসূচী শিশুর ক্ষমতায়ন প্রকল্পের আওতায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে বাংলার পাশাপাশি মাতৃভাষা ব্যবহারের জন্য মহালছড়ি ও দীঘিনালা উপজেলা থেকে নির্বাচিত ১০ টি বিদ্যালয়ের মনোনীত ১৫ জন শিক্ষকরা সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন।
স্বাগত বক্তব্যে জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা বলেন-আজকের দিনটি আমাদের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট। কারণ ২০০৬ সালে শুরু হওয়া মাত্র নয় বছর পার হতে না হতে মাতৃভাষা বহুভাষিক শিক্ষা(এমএলই) আজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অন্য মাত্রায়। এ কর্মসূচী আজ এ দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। সরকারিভাবে মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হতে চলেছে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় পাঠক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)’র উদ্যোগে গত মার্চ মাসে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য পাঁচটি ভাষায় পাঠ্য পুস্তক তৈরী সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমান গতি অব্যাহত থাকলে আগামী ২০১৬ সাল থেকে সরকারিভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাতৃভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা যাবে।
প্রধান অতিথি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, আজকে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম এমন এক সময়ে শুরু হচ্ছে যখন পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা, মারমা এবং ত্রিপুরাদের ভাষা টিকে থাকার ক্ষেত্রে হুমকির সম্মুখীন। আমি মনে করি এই শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে চাকমা, মারমা এবং ত্রিপুরাদের ভাষা আরও সমৃদ্ধ হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ করে খাগড়াছড়িতে এ মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালার পিছনে জাবারাং অবদান অনস্বীকার্য।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.