বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের নাজিরাম ত্রিপুরা পাড়ায় ধর্ষণের ফলে ১৯ বছর বয়সী এক অবিবাহিত ত্রিপুরা প্রতিবন্ধী এক কিশোরী সন্তান প্রসব করেছে। এ কারণে কিশোরীর পরিবার বিপাকে পড়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী কিশোরী জানান, আজ থেকে ১০ মাস পূর্বে নাজিরাম ত্রিপুরা পাড়ার পাশে বে-সরকারি একটি বিদ্যালয়ের রাতের বেলার অনুষ্ঠানে গেলে পাড়ার নিচে অবস্থিত যাত্রী ছাউনীতে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেশী জুয়েল ত্রিপুরা ও গোদাইচন্দ্র ত্রিপুরা জানান, মেয়েটি খুবই অসহায়। ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া সন্তানটির পিতৃ পরিচয়ের স্বীকারোক্তি মেলেনি। সন্তানটির বয়স বর্তমানে ৪ সপ্তাহ চলছে। সন্দেহভাজন ধর্ষক হিসাবে আজিজনগর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের হরিণমারা গ্রামের মৃত শামসুল হকের শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে সিএনজি চালক মোঃ লিটনকে সনাক্ত করেছে এই প্রতিবন্ধী কিশোরী।
প্রতিবন্ধী কিশোরীর মা জানান, প্রতিবন্ধী হওয়ায় মেয়েটি ঘটনার সাথে সাথে বিষয়টি আমাদেরকে জানাতে পারেনি। ধর্ষণের ফলে অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়লে পাড়াবাসী এবং গন্যমান্য ব্যক্তিদেরকে বিষয়টি অবগত করানো হয়। আমরা গরীব ও অসহায়।আজ থেকে আনুমানিক ৩ মাস পূর্বে আমাদের ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার ও কারবারি সহ ১০-১২ জন উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত থেকে এই ঘটনার বিচার করেছে। বিচারের জরিমানার টাকার মাধ্যমে আমরা ৫ হাজার পেয়েছি।
অভিযুক্ত সিএনজি চালক লিটন নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন, আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী। আমার বাম পা নেই। ষড়যন্ত্রমূলক আমাকে এই ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে।
নাজিরাম পাড়ার কারবারি নাজিরাম ত্রিপুরা জানান, ধর্ষিতার পরিবার খুব অসহায় বিধায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রথাগত নিয়ম অনুযায়ী গ্রাম্য শালিশে সন্দেহভাজন অভিযুক্ত ধর্ষক লিটন (৩২) থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে শুকর ক্রয় করে জবাই করে পাড়া শুদ্ধিকরণ করা হয়েছে। আর অভিযুক্তকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকী টাকা দেয়নি।
গজালিয়া ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার ও একই পাড়ার অধিবাসী সইততি ত্রিপুরা জানান, প্রতিবন্ধী কিশোরী অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়লে বিষয়টি তার পরিবার সহ পাড়াবাসীর নজরে আসে। পরবর্তীতে পাড়ার কারবারি ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদেরকে নিয়ে ত্রিপুরা প্রথা অনুযায়ী আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদে বসে ঘটনাটি সমাধান করা হয়েছে।
গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা জানান, মহিলা মেম্বার কর্তৃক ঘটনাটি জানার পর সাথে সাথে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।
আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, ধর্ষিতা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকর তাদের ত্রিপুরা প্রথাগত নিয়ম অনুসারে সমাধান করে দিয়েছি।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান জানান, এ বিষয়ে কেউ থানায় মামলা করতে আসে নাই। মামলা করলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
-- হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.