আগামী ১০ মার্চ থেকে তিন দিন ব্যাপী দীঘিনালা উপজেলার বোয়ালখালী দশবল বৌদ্ধ রাজ বিহারের শতবর্ষ পূর্তি ও পার্বত্য চট্টল বৌদ্ধ অনাথ আশ্রমের সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত হচ্ছে।
শত বার্ষিকী ও সূবর্ণ জয়ন্ত উদযাপন কমিটির সূত্রে জানা যায়, বোয়ালখালী দশবল বৌদ্ধ রাজ বিহারের শতবর্ষ পূর্তি ও পার্বত্য চট্টল বৌদ্ধ অনাথ আশ্রমের সূবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আগামী ১০ মার্চ থেকে তিন দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা, নব নির্মিত বৌদ্ধ মন্দির ভবন উদ্ধোধন, বুদ্ধ মূর্তি ও বোধিবৃক্ষের আসনে বুদ্ধ মূর্তি স্থাপন, সন্মানা ও সংবর্ধনা এবং ২৮ বুদ্ধ পূজা সিবলী পূজা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সূত্র জানায়, ১৯১৬ সালের বুদ্ধ পূর্নিমার পূণ্য তিথিতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মাইনী উপত্যকার সুপ্রাচীন পূণ্য তীর্থ বোয়ালখালী দশবল রাজ বৌদ্ধ বিহারের প্রতিষ্ঠান করেন বৌদ্ধ সমাজের কিংবদন্তী তুল্য চাকমা রাজা ভূবন মোহন রায়। প্রখ্যাত সংঘ মনীষা প্রিয়রত্ন মহাথেরো(পালক ধন) ও আনন্দ মোহন মহাথেরোর স্মৃতি তীর্থ এ বোয়ালখালী দশবল রাজ বৌদ্ধ বিহারের বিগত এক শতাব্দী ধরে মাইনী উপত্যাকার বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীসহ অবিভক্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের তাবৎ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর বৌদ্ধিক চিন্তা চেতনা ও শাসন-সদ্ধর্ম প্রচার-প্রসারের অন্য অবদান রেখে চলেছে।
১৯৬০ সালে ভদন্ত জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির প্রধান অধ্যক্ষ হিসেবে আগমন করে এ বিহারকে কেন্দ্র করে মানবিক কর্মযজ্ঞে বাতাবরণ খুলে দেন। বুদ্ধের শাসন-স্বধর্মের সুস্থিতি, প্রচার-প্রসারের পাশাপাশি অনাথ অসহায় ছিন্নমূল ও হতদরিদ্র ছাত্রদের খাদ্য বস্ত্র শিক্ষা স্বাস্থ্য ও আবাসন প্রদানের মধ্য দিয়ে আধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষাদানের অনন্য সাধারণ বিদ্যায়তন বা অনাথ আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবিক কর্মযজ্ঞের একটি নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন করেছেন।
জানা যায়, এ অনুষ্ঠানে সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নূরুজ্জামান আহমেদ এমপি, পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা), পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, চাকমা সার্কে চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, মং ও বোমাং চীফ, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের সরকারী উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও বিশিষ্টজনরা উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
শত বার্ষিকী ও সূবর্ণ জয়ন্ত উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব এবং দশবল বৌদ্ধ রাজ বিহার অধ্যক্ষ শ্রীমৎ প্রজ্ঞাজ্যোতি মহাস্থবির জানান, বোয়ালখালী দশবল রাজ বৌদ্ধ বিহার শতবর্ষ পূর্তি ও পার্বত্য চট্টল বৌদ্ধ অনাথ আশ্রমের সূবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানটি আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে না হলেও জাতীয় পর্যায়ে আয়োজনের জোর প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ দুটি প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ৩০ লাখ টাকার একটি সম্ভাব্য বাজেটও প্রনয়ন করা হয়েছে।
তিনি এ অনুষ্ঠানকে স্বার্থক, সফল ও স্মরনীয় করে রাখতে কায়িক,বাচনিক ও আর্থিক সাহায্যের ডালি সাজিয়ে বোয়ালখালী দশবল বৌদ্ধ রাজ বিহারের শত বর্ষ পূর্তি ও পার্বত্য চট্টল বৌদ্ধ অনাথ আশ্রমের সূবর্ণ জয়ন্তী মহাসাড়ম্বে উদযাপনের জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.
*** কমিটির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন-০১৫৫৬৫৯২৪৭৬/০১৫৫৮৪৮৬৭৫৩.