বাগদাফার্মের আদিবাসী-বাঙ্গালিদের হত্যা, লুট, নির্যাতন, উচ্ছেদের হোতাদের বিচার ও শাস্তি এবং ভূমি অধিকারের দাবিতে সচেতন নাগরিক সমাজের উদ্যোগে মঙ্গলবার ঢাকায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সচেতন নাগরিক সমাজের মূখপাত্র মানিক সরেনের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে উদ্যোগে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক ঐক্য ন্যাপের সভাপতি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য্য। বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ; বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যারয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নূর মুহাম্মদ তালুকদার; আইইডির নির্বাহী পরিচালক নুমান আহম্মদ খান; এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস; জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন; বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং; মুক্তিযোদ্ধা কোরবান আলী শরীফ; পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা দীপায়ন খীসা; সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সহ-সভাপতি ডা.ফিলিমন বাস্কে প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিভূতি ভূষণ মাহাতো।
সমাবেশ থেকে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মে হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত কররা,সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মে সংঘঠিত সকল মানবাধিকার লংঘনের ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে ঘটনার সাথে জড়িত স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, সাংসদ, প্রশাসন ও চিনিকল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার করা, সমতলের আদিবাসীদের ভূমি সংকট নিরসনে স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠন করাসহ আট দফা দাবী জানানো হয়।
সমাবেশে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের উপর সাম্প্রতিক সময়ে বারবার নির্যাতন-নিপীড়ণ চললেও সরকার এখনো এসব বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চুপ। সংবিধানিকভাবে এ দেশের সকল মানুষের সমানাধিকারের কথা বলা হলেও বাস্তবতা ভিন্নরকম। তিনি এই ঘটনার এতদিন পরেও বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন এবং অবিলম্বে নাগরিক সমাজসহ সকলকে নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিশন গঠন করার দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, সাঁওতালসহ বাংলাদেশের সকল আদিবাসীরা এখনো আত্মসম্মানবোধ নিয়ে বেঁচে আছেন এবং থাকতে চান। সরকারী ত্রাণ ফিরিয়ে দিয়ে তারা এটা প্রমাণ করেছেন। তারা অর্থ চাননা মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে চান। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্র তাদের সম্মান সমুন্নত রাখতে ব্যার্থ হয়েছে। পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের জনগণের সাথে যে বেঈমানি করেছিল বর্তমান সরকারও আদিবাসী ও গরীব কৃষক মেহনতি মানুষের সাথে করছে।
রবীন্দ্রনাথ সরেন অনতিবিলম্বে এ ঘটনার বিচারবিভাগীয় সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে বাগদাফার্মের ঘটনার প্রতিবাদ ও ভূমির অধিকারের দাবিতে আগামী ৬ জানুয়ারি রংপুরে আদিবাসী-বাঙ্গালিদের বিভাগীয় সমাবেশের ঘোষনা দেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.