সোমবার ভোর রাতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় বঙ্গলতলী বি ব্লক শ্রাবস্তী বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ জ্ঞান জ্যোতি মহাস্থবির(৬৫) নামের এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের পর ওই বৌদ্ধ বিহারে প্রব্রজ্যাধারী শ্রমণ রাজীব চাকমা নামের এক যুবক পলাতক রয়েছে।
এদিকে, হত্যাকান্ডের পর ঘাতক রাজীব চাকমা পালিয়ে গেলেও স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ জনতার গণপিটুনিতে মারা গেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে তার লাশের হদিশ মিলেনি। ধারনা করা হচ্ছে তার লাশ গুম করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়,সপ্তাহ খানেক আগে বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী বি-ব্লকের শ্রাবস্তী বৌদ্ধ বিহারে স্থানীয় যুবক রাজীব চাকমা ওরফে জাম্বু বিহারের অধ্যক্ষ জ্ঞান জ্যোতি মহাস্থবিরের কাছে প্রব্রজ্যা(শ্রমন) গ্রহন করে। সোমবার ভোর রাত ২টার দিকে ঘাতক রাজীব চাকমা বৌদ্ধ ভিক্ষু জ্ঞান জ্যোতি মহাস্থবিরকে দারালো দা দিয়ে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। সোমবার সকালের দিকে স্থানীয় লোকজন বৌদ্ধ বিহারে গেলে বৌদ্ধ ভিক্ষুর মৃতদেহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। তবে বৌদ্ধ ধর্মীয় রীতিনীতি,পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীদের অনাগ্রহের কারণে লাশ ময়নাতদন্ত না করে তার পরিবার ও বৌদ্ধ বিহারের কর্তৃপক্ষের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনা হত্যকন্ডের ঘটনায় নিহত ভিক্ষুর ছোট ভাই অসময় চাকমা বাদী হয়ে বাঘাইছড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অপর একটি অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে, বৌদ্ধ ভিক্ষুকে হত্যার পর ঘাতক রাজীব চাকমা পালিয়ে যায়। তবে স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ জনতা তাকে খোঁজে বের করার পর গণপিটুনি দিলে সে মারা যায়। তবে তার লাশের হদিশ মিলেনি। ধারনা হচ্ছে তার লাশ গুম করা হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, ঘাতক রাজীব চাকমা একজন মানসিক রোগী। মানসিক রোগ সরাতে বন ঔষধির চিকিৎসার জন্য ওই বৌদ্ধ বিহারে অধ্যক্ষের কাছে প্রব্রজ্যা গ্রহন করে। নিহত বৌদ্ধ ভিক্ষুর বাড়ী একই উপজেলার গোলাছড়ি গ্রামের। তার বাবার নাম মণিলাল চাকমা।
বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আজিজুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বঙ্গলতলী বি-ব্লকের শ্রাবস্তী বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষের হত্যার ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করলেও ধর্মীয় রীতি এবং পরিবারের সদস্যদের অনাগ্রহের কারণে নিহত বৌদ্ধ ভিক্ষুর লাশ ময়নাতদন্ত না করে তার বৌদ্ধ বিহারের কর্তৃপক্ষ ও তার আত্বীদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,ঘাতক রাজীব চাকমাকে স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ জনতা আটকের পর গণপিটুনি দেয়ায় মারা গেছে বলে স্থানীয় লোকজনের মুখে শুনেছেন। তবে তার লাশ পুলিশ খুজে পায়নি এখনো।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.