পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিষ্ঠান মোনঘর শিশু সদনের দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সাহায্যার্থে তহবিল সংগ্রহের লক্ষে রাঙামাটিতে কনসার্ট ফর এডুকেশনের আয়োজন করেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শিক্ষায় সমাজের আলো ছড়িয়ে দিতে পারে-শ্লোগানকে সামনে রেখে মোনঘর এবং দি মোনঘরীয়ান্স সাপোর্ট গ্রুপের উদ্যোগে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনষ্টিটিউট মিলনায়তনে এ মনোজ্ঞ কনসার্টের আয়োজন করা হয়। এ কনসার্টে মোনঘর সাংস্কৃতিক দলের মনোজ্ঞ নৃত্য ও ১৪টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্বাদের নিয়ে মনকাড়ানো ফ্যাশন শো পরিবেশিত হয়।
এছাড়া রাঙামাটির গুনী শিল্পী রুপায়ন দেওয়ান রাঙা, কোয়েল চাকমা, সুজনা চাকমা কেকা, পার্কি চাকমা, দীপ্ত দেওয়ান বাপ্পী একে একে তারা জনপ্রিয় সংগীত পরিবেশন করে দর্শদের মাতিয়ে রাখেন। এছাড়া নৃত্য পরিবশেন করেন টিটু দেওয়ান ও ফিফা চাকমা। আয়োজিত এ কনসার্টে প্রচুর দর্শকেরও সমাগম ঘটে।
আয়োজিত এ কনসার্ট অনুষ্ঠানে চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়, সাবেক যুগ্ন জজ দীপেন দেওয়ান,মোনঘর পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক কীর্তি নিশান চাকমা, মোনঘরের নির্বাহী পরিচালক আশোক চাকমা,মোনঘর আবাসিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝিমিত ঝিমিত চাকমা,বিশিষ্ট নারী নেত্রী টুকু তালুকদার,প্রতুল দেওয়ান,ঝুমা দেওয়ান,ডাঃ পরশ খীসা, ডাঃ বিনোদ শেখর চাকমা,রাঙামাটি পৌর কমিশনার কালায়ন চাকমা, মক্তাশ্রী চাকমা সাথীসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মোনঘর শিশু সদনের ব্যবস্থাপক নন্দ কিশোর চাকমা জানান, দেশের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে পলিটেনিক্যালসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২ জন গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মোনঘর উচ্চ শিক্ষা ঋণ কার্যক্রম(হেলপ) থেকে উচ্চ শিক্ষার ঋণ দেওয়া হচ্ছে। তবে এর মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী পড়াশুনাও শেষ করেছে। বাকী শিক্ষার্থীদের হেলপ থেকে শিক্ষা ঋণ দিতে অর্থের সংকুলান হচ্ছে না। তাই তহবিল সংগ্রহের লক্ষে এই কনসার্ট ফর এডুকেশনের আয়োজন।
উল্লেখ্য, রাঙামাটিতে অবস্থিত মোনঘর শিশু সদন পার্বত্য চট্টগ্রামের ১১ ভাষাভাষি ১৪টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্বা ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছে। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে আবাসিক শিক্ষার্থী রয়েছে ৮শ শিক্ষার্থী। প্রথম থেকে এসএসসি পর্ষন্ত লেখাপড়ার সুযোগ থাকলেও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ নেই। তবে ভাল ফলাফল অজর্নকারী শিক্ষার্থীদের ঢাকা,চট্টগ্রামসহ দেশের নামকরা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেকাপড়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
এসব শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করা তথা দক্ষ মানব সম্পদে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মোনঘর কর্তৃপক্ষ আশি’র দশকের মাঝামাঝি সময়ে মোনঘর উচ্চ শিক্ষা ঋণ কার্যক্রম(হেলপ) চালু করে। তবে মাঝখানে আর্থিক সংকটের কারণে এ ঋণ কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে ২০১১ সাল থেকে দি মোনঘরীয়ান্স-এর পক্ষ থেকে পুনরায় চালু করা হয়।
বর্তমানে এ দি মোনঘরীয়ান্স এবং মোনঘরের পরিচালনায় উচ্চ শিক্ষা ঋণ কার্যক্রম কর্মসূচি আওতায় দেশের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৭২ গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.