• Hillbd newsletter page
  • Hillbd rss page
  • Hillbd twitter page
  • Hillbd facebook page
সর্বশেষ
রাবিপ্রবি’র ভিসি নিয়োগের দাবীতে শিক্ষাথীদের আড়াই ঘন্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ                    বিলাইছড়িতে তামাকের বদলে চাষ হচ্ছে শিম-বাদাম                    খাগড়াছড়িতে শীত বস্ত্র বিতরণ                    খাগড়াছড়িতে চাঙমা ভাষা শিখন কার্যক্রম শুরু                    লংগদুতে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলিতে নিহত ১                    রাঙামাটিতে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বর্নাঢ্য র‌্যালী ও আলোচনা সভা                    ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে ২০০টি মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ২১ জনকে হত্যা                    খাগড়াছড়িতে কিশোরীদের মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কিট বিতরণ                    মোবাইল ক্যাম্পের মাধ্যমে প্রথম বারের মতো চিকিৎসা সেবা পেলো মহালছড়ির চৌংড়াছড়িবাসী                    পাহাড়ের বাতিঘর মোনঘরের দুদিন ব্যাপী সূবর্ণ জয়ন্তী উৎসব সমাপ্ত                    খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় গর্ভবতী মা ও কিশোরী চিকিৎসা সেবা দিলো গ্রীনহিল                    পাহাড়ের বুকে অনিশ্চিত জীবন ও নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে-সন্তু লারমা                    খাগড়াছড়িতে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদ সদর উপজেলা শাখার ৭ম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত।                    রাঙামাটিতে সরকারী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-গনমাধ্যম কর্মীদের তথ্য অধিকার ও জেন্ডার বিষয়ে প্রশিক্ষন                    রাঙামাটিতে পুষ্টি উন্নয়ন পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা                    পাহাড়ে কলা গাছের শুকনা পাতা থেকে মাশরুম ও আঁশ দিয়ে স্যানিটারি প্যাড তৈরী প্রকল্পের উদ্বোধন                    রাবিপ্রবি’তে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত                    বিলাইছড়িতে আড়ম্বরপূর্ণভাবে মহান বিজয় দিবস উদযাপন                    বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধীতে বিজিবির গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন                    বিলাইছড়িতে দিনব্যাপী পুষ্টি মেলার আয়োজন                    বিলাইছড়িতে হিল ফ্লাওয়ার কর্তৃক নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে নানা কর্মসূচি                    
 
ads

বিলাইছড়িতে তামাকের বদলে চাষ হচ্ছে শিম-বাদাম

অসীম চাকমা, ফারুয়া থেকে ফিরে : হিলবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 04 Jan 2025   Saturday

রাঙামাটির বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নে তামাকের বদলে চাষ হচ্ছে শিম আর বাদাম চাষ। প্রায় ৬০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বানিজ্যিকভাবে করা হয়েছে শিম চাষ। এছাড়া বাদামসহ বিভিন্ন জাতের সবজীও চাষও করা হয়েছে।  এর মধ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার সদর ইউনিয়ন ও বাকী অংশ র‌্যাইখ্যাং নদীর দুই পাড়ে ৫০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে এ চাষ করা হয়েছে।  ফারুয়া এলাকায় এখন সবুজে সবুজে সমারোহ ভরে উঠেছে। 
 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি বছরের মত এ বছরও বিলাইছড়িতে বিশেষ করে ফারুয়া ইউনিয়নে শিম-বাদামসহ বিভিন্ন সবজি বানিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়েছে। যেদিকে চোখ যায় র‌্যাইখ্যাং নদীর দুই পাড়ে শিম চাষের ফলে গড়ে উঠেছে সবুজের সমারোহ। সারি সারি বাঁশের খুঁটি ‘গিল’ (যেখানে শিমের লতাটা বেয়ে উঠে শিম ধরে) হিসেবে দেওয়া হয়।  রাইংখ্যাং নদী যেভাবে এঁকে বেঁকে চলে গেছে, ঠিক সেভাবে দুই পাড়ে বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে চাষ করা শিমের সবুজের সমারোহও বয়ে গেছে।
 
ইতোমধ্যে ফরাস শিম তোলা হচ্ছে। এসব শিম মন প্রতি ৩ হাজার বা তারও অধিক বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশীয় শিমের ফুলও আসা শুরু করেছে। মাসখানেকের পরে ফসল তোলা যাবে। শিমছাড়াও সমন্বিতভাবে চিনাবাদাম, ফরাস সীম, ভূট্টা ও নানা ধরনের সবজী চাষ করা হয়েছে। 
 
এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়. প্রায় এক যুগ আগেও তামাকের চাষ করা হতো এ ফারুয়া ইউনিয়নে। তবে তামাক কোম্পানী থেকে অগ্রীম টাকা নেওয়ার কারণে উত্তোলনের পর সেই কোম্পানীকে দিতে হত। যার কারণে জমিতো ক্ষতি হতো এবং কৃষকরাও আর্থিকভাবে কিছুটা কম লাভবান হতো। তাই প্রশাসনসহ বিভিন্ন সচেতন মহলের প্রচেষ্ঠায় তামাক চাষে যে ক্ষতি হয়, সেটা তারা বুঝতে পেরে আস্তে আস্তে অন্য কিছু করার পরিকল্পনা করে।  বর্তমানে তারা শিম, বাদামসহ বিভিন্ন জাতের  শাক-সবজী বানিজ্যিকভাবে চাষ করছে। তারা এখন আগের থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে এবং সেই টাকা দিয়ে পরিবারের ভরণ পোষনের পাশাপাশি কেউ কেউ ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাচ্ছেন। 
 
বিলাইছড়ি কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমান মৌসুমে বিলাইছড়িতে প্রায় ৭৫ হেক্টর শীম, ৬৫ হেক্টর চিনাবাদাম, ৩০ হেক্টর ফরাস শীম , ২৬ হেক্টর ভূট্টা  ও অন্যান্য সবজী ২২৬ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
 
গোয়াইনছড়ি পাড়ার শিম চাষী বিশ্বান্ত তঞ্চঙ্গ্যা জানান, এ বছর রাইংখ্যাং নদীর পাড়ে প্রায় ৬০ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে শিম চাষ করেছেন। বর্ষার মৌসুমে জমিগুলোতে পলি জমার কারণে জমি অনেকটা উর্বর থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ভিটামিনও রোগের আক্রমন থেকে বাঁচতে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে তিনি ভালো ফলনের আশা করেছেন। 
 
তক্তানালা গ্রামের রাঙাবী তঞ্চঙ্গ্যা জানান, তিনি এ বছর প্রায় ৩ একরের বেশি জমিতে এই শিম চাষ করেছেন।  ঠিকমত পরিচর্যা করতে পারলে এবং প্রয়োজন মত কীটনাশক দিলে পারলে ভালো ফলন পাওয়া  যাবে। তবে এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে  গেল বছরের চাইতে ভালো ফলন পাওয়ার আশা  রয়েছে।  তিনি আরও জানান,, তার দুই ছেলের মধ্যে একজন তার সাথে কাজ করে। অন্য ছেলে রাঙামাটিতে পড়াশোনা করে।  ছেলের পড়াশোনার খরচ তিনি এ শিম চাষ করে যোগান দিয়ে থাকেন।
 
গোয়াইনছড়ি পাড়ার হেডম্যান বিমল তঞ্চঙ্গ্যা জানান, তার এলাকায় প্রায় ১০০ পরিবারের মত এ শিম এবং বাদাম চাষ করেছেন। তিনি নিজেও প্রায় ২ একরের মত জায়গায় শিম চাষ করেছেন।  মনপ্রতি ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার পর্যন্ত শিম  বিক্রয় করা হয়।
 
ফারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিদ্যালাল তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ফারুয়া এলাকা একটি কৃষি নির্ভর ইউনিয়ন। এখানকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। এক সময় এখানে প্রচুর তামাক চাষ হতো।  তামাক কোম্পানিগুলো কৃষকদেরকে  বিনা সূদে ঋণ দিয়ে তামাক চাষ করাতো। প্রায় ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে আর এখানে তামাক চাষ হচ্ছে না। বর্তমানে এখানে শিম এবং চিনা বাদাম প্রচুর চাষ হচ্ছে।
 
তিনি আরো বলেন, এ ইউনিয়নে বিশেষ করে ১,২,৩,৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে ব্যাপকহারে এ শিম ও বাদামের চাষ করা হয়। পাশাপাশি অন্যান্য শাক- সবজীরও চাষ করা হয়। তিনি বলেন, এক- থেকে দেড় মাস পরই শিমের ফলন আসা শুরু করবে। এখনো পর্যন্ত শিমের ফলন ভালো দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়া যদি অনুকুলে থাকে এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগ যদি না আসে তাহলে শিমের ফলন ভালো হবে। 
 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলীমুজ্জামান খান জানান, বিলাইছড়ি উপজেলায় ১২ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ৬ জন। তার মধ্যে ফারুয়া ইউনিয়নে ২ জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দূর্গম এলাকা হিসেবে কম জনবল দিয়ে কাজ করা খুবই কঠিন। তারপরও সাধ্যমত মাঠে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সঠিকভাবে কাজ করতে হলে পর্যাপ্ত জনবল প্রয়োজন।
 
রাঙামাটি কৃষি  সম্প্রসারণ অধিপ্তরের সদ্য বিদায়ী  অতিরিক্ত পরিচালক তপন কুমার পাল বলেন,ফারুয়ার রেংখ্যং নদীর দুই পাশ  যখনবর্ষাকালে  পানিবৃদ্ধি পায় তখন প্রচুর পলি মাটি জমে। কৃসকরা পানি  কমে যাওয়ার সাথে সাথে  এসব চর বা  জেগে উঠা জমিতে শিম ও বাদাম ব্যাপকভাবে চাষ  থাকেন।  তাই এ শিম চাষ  ফরুয়া এলাকার জন্য বিশেষ খ্যাতি রয়েছে।  এক সময় এ ইউনিয়নে ব্যাপক তামাক  চাষ করা হতো। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিম ও বাদাম চাষে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতা রয়েছে। 
--হিলবিডি৪/সম্পাদনা/সিআর.
 

 

 

 

সংশ্লিষ্ট খবর:
ads
ads
আর্কাইভ