রাঙামাটিতে মারমা সংস্কৃতি সংস্থার(মাসস) আওয়ামীলীগপন্থী কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। নব নির্বাচিত কমিটির নেতৃবৃন্দ বিগত আওয়ামীলীগপন্থী কমিটির বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও বরাদ্দের অর্থ লুটপাটের অভিযোগ করেছেন। ওই কমিটির রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী ও কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অংসুশাইন চৌধুরীরাসহ অন্যান্যর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন।
বুধবার রাঙামাটি চেম্বার্স অব কমার্স মিলনায়তনে আয়োজিত মাসসের নব নির্বাচিত কমিটির আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে কমিটির নেতৃবৃন্দ এ অভিযোগ তুলেন।
সংবাদ সন্মেলনে নেতৃবন্দ অভিযোগ করেন, মারমা সম্প্রদায়ের না হয়েও বিগত কমিটিতে রাঙামাটির আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এ লুটপাটের জড়িত ছিলেন। মাসসের নাম দিয়ে গত ১৭ বছরে ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাট করেছেন। ৫আগষ্ট ছাত্র-জনতা আন্দোলনের কারণে আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন। তবে এ অভিযোগের বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী ও অংসুশাইন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ চেষ্টা করেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে।
সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাসসের সহ-সভাপতি মুইথুইঅং মারমা।বলা হয়, রাঙামাটি জেলায় বসবাসরত পশ্চাদপদ মারমা জনগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, ঐক্য,শিক্ষা প্রসার, শান্তি,কৃষ্টি,সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষনসহ ইত্যাদি উন্নয়নের লক্ষে ২০০০সালে মাসস সংগঠনটি গঠন করা হয়। সংস্থাটি ৫ থেকে ৬ বছর ঐক্যমত নিয়ে পরিচালিত হলেও পরবর্তীতে ১৭ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসরা একছত্রভাবে অনিয়ম ও লুটপাটে মেতে উঠেন। আওয়ামী দোসরা ফ্যাসীবাদী ষ্টাইলে কোন দলিলপত্র ছাড়াই সংস্থাটি পরিচালনা করেছেন। এমনকি সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন ব্যক্তি থেকে অনুদান ও সদস্যদের মাসিক চাঁদার কোন অডিট ও হিসাব নিকাশ লিপিদ্ধ করেননি। শহরের আসামবস্তি এলাকায় মাসসের তিন তলা বিশিষ্ট নিজস্ব ভবন থাকলেও কার্যালয়ে কোন সরঞ্জাম নেই। বর্তমানে সংস্থাটির কার্যালয়টি তালাবদ্ধ ও পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। গত বছর এপ্রিল মাসে ঐতিহ্যবাহী জলকেলী(পানি খেলা) অনুষ্ঠানের নাম দিয়েও আওয়ামীলীগপন্থী এ কমিটি ব্যাপক অনিয়মও করেছেন। তবে ৫আগষ্ট ছাত্র-জনতা আন্দোলনের কারণে ফ্যাসীবাদী আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর এসব আওয়ামীলীগপন্থী কমিটির সদস্য ও তাদের দোসদের বিভিন্ন মামলা থাকায় আত্নগোপণে রয়েছেন।
সংবাদ সন্মেলনে আরো বলা হয়, রাঙামাটির দশ উপজেলার মধ্যে আট উপজেলায় মারমা জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। এসব জনগোষ্ঠীর মাসসের দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে। মারমা সম্প্রদায় চাই এ সংস্থাটি অরাজণেতিক ও সবাইয়ের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
সংবাদ সন্মেলনে এসময় উপস্থিত নব নির্বাচিত কমিটির সাধারন সম্পাদক উসানু মারমা, লাকী মারমা, মংথুই প্রæ মারমা, পাইচিমং মারমা, চথোয়াই প্রæ মারমা, সাচিং উ মারমাসহ অন্যান্যরা। সংবাদ সন্মেলনে সংস্থাটির উপদেষ্টা কমিটি, নির্বাহী ও কার্যকরী কমিটির নাম ঘোষনা করা হয়।
--হিলবিডি/সম্পাদনা/সিআর.