সাম্প্রতিক বন্যায় বাঘাইছড়ি উপজেলায় বিভিন্ন সেক্টরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে শত কোটি টাকারও অধিক সম্পক্তির ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
এদিকে গেল ১৭ জুন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাঘাইছড়ির বন্যা কবলিত স্থান পরিদর্শন করেছেন।
টানা বর্ষনে ও পাহাড়ী ঢলের কারণে উপজেলার করেঙ্গাতলী, বঙ্গলতলী, বারিবিন্দু ঘাট, বাঘাইছড়ি সদর, দুরছড়ি সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের রাস্তা ঘাট, ব্রীজ কালভার্ট, ফসলী জমি ও বাড়ী ঘরে ভেঙ্গে প্লাবিত হয়। পানিতে ভেসে গিয়ে দু জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গৃহপালিত গরু, ছাগাল, হাঁস মুরগী সহ গবাদী পশু বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
গেল ১৭ জুন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বাঘাইছড়ি উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন এবং বিভিন্ন স্থানে আশ্রিতলোকজনদের খোজ খবর নেন। এসময় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চান।
করেঙ্গাতলী বাজারের মেম্বার জানান, এবারের বন্যায় করেঙ্গাতলী বাজারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত সোমবারে রাতের বেলায় হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকে গেছে। পানির স্রোত এতোই বেশী ছিল যে লোকজন কোন ভাবে নিজের প্রাণ নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্র ছুটে এসেছে। করেঙ্গাতলী বাজার এবারের বন্যায় ব্যাপক ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙ্গণ রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আগামি দিন গুলোতে করেঙ্গাতলী বাজার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয় লোকজন।
বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলী হোসেন জানান, উপজেরার ৭ টি ইউনিয়নে এবারের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হযেছে। রাতের বেলায় পানি বেড়ে যাওয়ায় বোট নিয়ে লোকজনকে উদ্ধার করেছি। অনেক পরিবারকে টিনের চাল খুলে বের করতে হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে আশ্রিত লোকজনদের আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেছি।
বাঘাইছড়ি পৌরসভার মেয়র জাফর আলী জানান, বন্যায় বাঘাইছড়ি উপজেলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে বাঘাইছড়ি পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তা ঘাট নষ্ট হয়ে গেছে। এই রাস্তা ঘাট গুলো ঠিক করতে আমাদের অনেক বড়ো বাজেট দরকার হবে। সরকার যদি দ্রুত এই গ্রুলোব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে বাঘাইছড়ি পৌরসভার মানুষ কষ্টপাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমাবলেন, বাঘাইছড়ি উপজেলায় এবছরের বন্যায় মরাত্মক আকার ধারণ করেছে। গেল কয়েক দিনের অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে উপজেলা প্রত্যেকটি ইউনিয়নের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার প্রায় ২ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
তিনি আরো বলেন, বাঘাইছড়িতে জেলা পরিষদের অর্থায়নে চলমান বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ পানির তোরে ভেসে গেছে। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে আমাদেরকে নতুন করে চিন্তা করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, কাচালং নদী নয় রাঙামাটি জেলার চেঙ্গী, মাইনী, কর্ণফুলীসহ বেশ কয়েকটি নদী খননের প্রয়োজন। নদী ড্রেজিং এর বিষয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে। তিনিও এই নদী গুলো ড্রেজিং করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। তবে কবে না নাগাদ এই নদী ড্রেজিং কাজ শুরু হবে তা সঠিক বলা যাচ্ছে না। নদীগুলো খনন করা না হলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। এরকম বন্যায় বারবার হবে এবং সাধারণ মানুষ কষ্ট পাবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.