ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ আনতে সরকারের দেওয়া কীটনাশক যুক্ত মশারী দিয়ে মনের খুশিতে মাছ ধরছে বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের পানিশ্যবিলের গ্রামের লোকজন। বর্তমানে সময়ে নদী, খাল, ঝিরি, জলাশয়, বাঁধে পানি কমে যাওয়ায় গ্রামের এসব স্থানে থেকে সহজেই দল বেঁধে কীটনাশক যুক্ত মশারী দিয়ে মাছ ধরতে ব্যস্ত এখন গ্রামের মানুষেরা।
গেল ৬ ও ৭ মে বেলা পৌনে ১১টার কীটনাশক যুক্ত মশারী দিয়ে দল বেঁধে মাছ ধরার চিত্র দেখা গেছে বান্দরবানের লামা পৌরসভা সিমান্তে লাগোয়া কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পানিশ্যাবিল গ্রামের বুরো চাষের বাঁধে।
ম্যালেরিয়া ঝুকিতে থাকা কক্সবাজের জেলার চকরিয়া উপজেলায় এ কীটনাশক মশারী দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছে একলাব নামক একটি এনজিও। একলাব এনজিও`র চকরিয়া উপজেলার প্রজেক্ট ম্যানাজার মোঃ মাহবুবুর রহমান ভূইয়া`র সাথে মুঠোফোণে কীটনাশক যুক্ত মশারী দিয়ে বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের পানিশ্যাবিলসহ আশেপাশের এলাকার লোকজন মাছ ধরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত ২১ এপ্রিল বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে ৫ হাজর পিচ মশারী দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চকরিয়া উপজেলায় মোট ২ লক্ষ ৪০ হজার ৫৭৭ পিচ মশারী দেওয়া হয়েছে। তবে এ কীটনাশক মাশারী দিয়ে মাছ ধরার বিষয়টি আমার জানা নেই। মশারী গুলো সঠিক ভাবে ব্যবহার করছে কিনা তা দেখভাল করার জন্য উক্ত ইউনিয়নে আমাদের(একলাব) স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছে। তবে বমু বিলছড়ি ইউনিয়নটি লামা পৌরসভার সিমান্তে হওয়ায় চকরিয়া উপজেলা সদর থেকে দেখাশুনা করতে প্রায় সময় সমস্যা দেখা দেয় আমাদের। এ রকম ঘটনা ঘটে থাকলে আমি তাদের সাথে(স্বাস্থ্যকর্মী) কথা বলে নিশ্চিত হয়ে বন্ধ করার চেষ্টা করবো।
গত ৬ মে বেলা পৌনে ১১টায় সময় বমু বিল ছড়ির পানিশ্যা বুরো চাষের সেচ প্রকল্পে দল বেঁধে কীটনাশক মশারী দিয়ে মাছ ধরতে নামেন এলাকার জসিম উদ্দিন, শামসুল আলম ও ছালেহা বেগমসহ আরো অনেকে। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পানিশ্যা সেচ প্রকল্পের বাঁধের পানি কমে যাওয়ায় শখের বসতে সরকারের দেওয়া মশারী দিয়ে মাছ ধরতে নেমে পড়ি। এ মশারী দিয়ে মাছ বেশি ধরা যায়। এলাকার প্রায় মানুষ বিল, জলাশয়, ঝিরি, খাল ও নদী থেকে মাছ ধরে থাকে । মাছ ধরা শেষে ধুয়ে শুকিয়ে আবার ব্যবহার করি এ মশারী গুলো। তারা জানায়, গেল ৬ এপ্রিল একলাব এনজিও থেকে তাদের ৭ থেকে ৮ পিচ করে মশারী দেওয়া হয়েছে।
চকরিয়ার বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের একলাব এনজিও`র ৫ ও ৩ ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকর্মী শানু বড়ুয়া`র সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, চলতি বছরের ৬ এপ্রিল ৫ ও ৩ নং ওয়ার্ড ৫৫৮ টি পরিবারে ১২৬৩ পিচ কীটনাশক মশারী দেওয়া হয়েছে। তারা মশারী গুলো সঠিক ব্যবহার করছে কিনা তা দেখে থাকি। তবে তারা পুরান মশারী দিয়ে মাছ ধরে থাকে।
পানিশ্যাবিল বুরো চাষের স্কিম ম্যানাজার মোঃ মোজাফ্ফর বলেন, এলাকার ১৫ থেকে ২০ জন মানুষ কীমাছ ধরার সময় আমি নিষধ করি। তারা আমার কথা শুনেননি।
এ বিষয়ে বমু বিলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতলব বলেন, কীটনাশক মশারী গুলো সঠিক ব্যবহার হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য একলাব এনজিও দায়িত্ব রয়েছে। এলাকার মানুষ এতো সচেতন নয়। তারা এলাকার লোকজনদের সঠিক ভাবে মশারী ব্যবহারের নিয়ম যদি শিখিয়ে দিতো তাহলে মশারী গুলোর গুরুত্ব বুঝতে পারতো। তবে এলাকার এলাকায় এ মশারী দিয়ে মাছ না ধরার জন্য আমি বলে দেবো।
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রনের জন্য ঝুকি পূর্ণ এলাকায় ফ্রিতে কীটনাশক মশারী বিতরন করছে সররকার। এ মশারী মাছ ধরা সম্পূর্ণ অন্যায়। তবে আমি এখনই মশারী বিতরণে দায়িত্বে থাকা একলাব এর প্রজেক্ট ম্যানাজারকে বলে দিচ্ছি। যাতে এ মশারী দিয়ে কেউ মাছ ধরতে না পারে। এলাকার মানুষ মশারী গুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করে মতো আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.