রাঙামাটিতে ভারী বর্ষনে পাহাড় ধসের ঘটনায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ির শালবন এলাকায় বিধস্ত হওয়া সড়ক বুধবার হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। তবে ভারী যানবাহন চলাচলে এক সময় লাগতে পাওে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে।
গেল ১৩ জুন ভারী বর্ষনে রাঙামাটি শহরের ভেদভেদীর যুব উন্নয়ন বোর্ড এলাকা,মুসলিম পাড়া.শিমুলতলী এলাকা,সাপছড়ি,মগবান,বালুখালী এলাকায় এবং জুরাছড়ি,কাপ্তাই,কাউখালী ও বিলাইছড়ি এলাকায় ৫ সেনা সদস্যসহ ১১৮ জনের মৃত্যূ হয়। এতে জেলায় ১৬শ থেকে ১৭ শ ঘরবাড়ি সম্পূর্ন ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাহাড় ধসের কারণে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক বিধস্ত হয়ে পড়ে। বিকল্প হিসেবে যাতায়াত ব্যবস্থা হিসেবে কাপ্তাইয়ে নৌপথে লঞ্চ চলাচল ব্যবস্থা চালু করেছিল স্থানীয় প্রশাসন। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ির শালবাগান এলাকায় দেড়শ ফুট এলাকা জুড়ে বিধস্ত হওয়ার কারণে অবশেষে দীর্ঘ এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর বুধবার হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সেনা বাহিনীর ইঞ্জিয়ারিং কোর এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন চেষ্টা চালিয়ে বিধস্ত হওয়া সড়কের পুনঃস্থাপন করেন।
দুপুর আড়াইটার দিকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ির শালবাগান এলাকায় বিধস্ত হওয়া সড়কে হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য অনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধোধন করেন সেনা বাহিনীর চট্টগ্রাম ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার। এসময় দেড়শ ফুট এলাকা জুড়ে বিধস্ত হওয়া পুনঃস্থাপন করা সড়কে গাড়ী চালিয়ে উদ্ধোধন করেন তিনি। এসময় সেনাবাহিনীর স্পেশিয়াল ওয়ার্ক ওর্গোনাইজেশনের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল একেএম মজিদ,রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফারুখসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সেনা বাহিনীর চট্টগ্রাম ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, সেনা বাহিনী এবং সড়ক জনপথ বিভাগের লোকজন অনেক পরিশ্রম করে এ কাজটি করতে পেরেছে। তবে এ কাজটি চলমান। একমাস আগে এ সড়কে স্বাভাবিক যান চলাচল করার কোন উপায় নেই। এ কাজ করা হয়েছে সাময়িক যাতে এ সড়ক দিয়ে ছোটখাতো যানবাহন চলাচল করতে পারে। বড় গাড়ী চলাচলের ঝুকি নেয়া যাবে না।
তিনি আরো জানান, এ সড়কে অপদকালীন সময়ে যে স্থানে সমস্যা ছিল অপাতত সেখানে কাজ করা হয়েছে। আরও কাজ করা হবে। তবে এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ পিপিপি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেমে। এখন থেকে ছোটখাতো যানবাহন চলাচল করবে যদি অতি বৃষ্টিপাত না হয়।
অপরদিকে, বুধবার সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের সচিব এমএনএ সিদ্দিক পাহাড় ধসে বিধস্ত হওয়া সড়ক ও আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। এসময় চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগী কমিশনার মোঃ রুহুল আমীন, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, জেলা পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসানসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন। তিনি আশ্রিত আশ্রয় কেন্দ্রে পরিদর্শনকালে তিনি ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা যা যা প্রয়োজন তা বিতরণের নিদের্শন দেন।
পরে সাংবাদিকদের সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের সচিব বলেন, এ দুর্যোগ থেকে উত্তোরণের জন্য ইতোমধ্যে সরকার কাজ শুরু করে দিয়েছে। এখানে দুই পেইছে করা হবে। এর মধ্যে প্রথম পেইজে স্থানীভাবে যে ফসল উৎপাদন হয় সেগুলো যাতে নিয়ে যেতে পারে সেজন্য সড়কে যে স্থানে ভেঙ্গে গেছে সেগুলোর প্রতিরোধকরণ ব্যবস্থা গ্রহন। দ্বিতীয় পেইজে স্থায়ীভাবে সড়ক ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ গ্রহন করা হবে। যাতে করে এ সড়কগুলোর স্থায়ীত্ব হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের জায়গাহুলো আর কোন পাহাড় বা ভেঙ্গে পড়ে ঘটনা না ঘটে। এ জন্য একটি স্টিমেড তৈরী করে বর্ষা মৌসুমে টেন্ডার প্রক্রিয়া করে শুকনো মৌসুমে কাজ শুরু করা হবে।
তিনি আরো জানান,বর্তমানে এ সড়ক দিয়ে হালকা যানবাহন চলাচল করবে। পুরো ভারী যানবাহন চলাচল করতে একমাস সময় লাগবে। তবে এ জন্য ভেঙ্গে যাওয়া স্থানে একটি বেইলি ব্রিজ তৈরী করা হবে। যাকে বড় বড় ট্রাক চলাচল করতে পারে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.