রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানির নিচে বোরো জমি এখনো থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন হাজারো কৃষক। ধীর গতিতে পানি কমায় কৃষকরা ফসল উৎপাদন নিয়ে আশংকা প্রকাশ করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা এটিএম কামাল উদ্দিন জানান, জুরাছড়ি উপজেলায় ৩শ৮০ হেক্টর আবাদি জমিতে বোরো চাষের লক্ষ মাত্রা রয়েছে। তার মধ্যে ২২০ হেক্টর জমি ইতোমধ্যে চাষাবাদ হয়েছে।
এদিকে, কৃষি বিভাগের এ তথ্য মানতে রাজি নন স্থানীয় জনপ্রতিধিনিরা। তাদের দাবী কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ দেওয়া তথ্য কাল্পনিক। কারণ জুরাছড়ি ২০ হেক্টর, বনযোগীছড়া ৫ হেক্টের, মৈদং ৩০ হেক্টর, দুমদুম্যা ইউনিয়নে ৩০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জুরাছড়ি ইউনিয়নের মধ্যে বালুখালী, আমতলী, মধ্যে ভিটা, হাজাভিটা ও বনযোগীছড়া ইউনিয়নের ধামাই পাড়া, বড়ইতলী, হাজ্যামাছড়া, চিত্তিমাছড়া, কতরখাইয়া, চৌধুরী পাড়া, চকপতিঘাট পাড়ার কিছু কিছু চাষাবাদ হলেও অধিকাংশ পানির নিচে রয়েছে।
বনযোগীছড়া ইউনিয়নের ধামাই পাড়ার কৃপাধন চাকমা (৩৪), নাগরী চাকমা(৪০) বলেন, আমরা বর্গা চাষী। গত বছর এ সময় বোরো চাষ শেষ করেছি। অথচ এ বছর এখনো জমি পানির নিচে রয়ে গেছে। বীজ তলার বয়স ক্রমান্নয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে-জানিনা কি হবে ! দ্রুত পানি কমিয়ে দেওয়ার সরকারের কাছে প্রাণের আকুতি জানাচ্ছি।
জুরাছড়ি ইউনিয়নের মধ্য বালুখালী গ্রামের লক্ষিন্দ্র চাকমা (৪৫), সুমনা চাকমা (৩৪) বলেন, আমার ২থেকে ৪ একর জমি এখনো পানির তলে রয়েছে। যথা সময়ে চাষাবাদ না হলে না খেয়ে থাকতে হবে।
হাজা ভিটার মিনা চাকমা(৪৫) বলেন, স্বামী চার বছর আগে মারা গেছে। সংসারের ভার পরো আমার উপর। অথচ আমার চাষ যোগ্য জমি ৩ একর প্রয় এখনো পানির নিচে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা এটিএম কামাল উদ্দিন আরো বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে বোরো চাষের শেষ সময়। এর মধ্যে বীজ তলার বয়স ১শ দিনের অধিক হলে ফলন কমে যাবে।
জুরাছড়ি ও বনযোগীছড়া ইউপি চেয়ারম্যান ক্যানন চাকমা ও সন্তোষ বিকাশ চাকমা বলেন, পানি ধীর গতিতে কমায় অধিকাংশ বোরো চাষ জমি এখনো পানির নিচে রয়েছে। দ্রুত পানি কমানোর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে এলাকায় ফসল উৎপাদন ব্যঘাত সৃষ্টি হতে পারে। অথচ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ৮০ ভাগ বোরো জমিতে চাষ হলে বলে কাল্পনিক তথ্য দিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিটন চাকমা বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ দেওয়া তথ্য সঠিক নয়। অধিকাংশ জমি এখনো পানির নিচে রয়েছে। বোরো জমি চাষের লক্ষে দ্রুত পানি কমিয়ে দেওয়া জরুরী। যথা সময়ে চাষ করা সম্ভব না হলে আগামী বছর খদ্য সংকট দেখা দেওয়ার আশংকা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, কৃষকরা যাতে যথা সময়ে চাষাবাদ করতে পারে সে লক্ষে পানি কমানোর বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে ইতোমধ্যে আলোচনা করা হচ্ছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.