দেশে টানা অবরোধ ও হরতালের কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যর রাণী রাঙামাটির পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটক শুন্য। পর্যটনের ভরা মৌসুমে পর্যটকের পদাভারে মূখরিত হয়ে উঠলেও এ বছর ভিন্ন চিত্র। এভাবে দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করলে রাঙামাটির পর্যটনের ব্যবসায় ধ্বস নামার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মনে করছেন।
এদিকে, দেশের চলমান অস্থিরতার কারণে পর্যটক না আসায় রাঙামাটি সরকারী পর্যটনে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা লোকসানী গুনতে হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে প্রতিমাসে এ খাতকে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়ে থাকে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, রাঙামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে প্রতি বছর শীত মৌসুমে দেশ-বিদেশের ভ্রমন পিপাসু পর্যটকদের পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকের পদাভারে মুখরিত হয়। কিন্তু ৫ জানুয়ারী থেকে দেশের টানা অবরোধ ও হরতালের কারণে রাঙামাটির পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটন শুন্য রয়েছে। এতামধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যারা অগ্রিম রুম বুকড করেছেন তারাও দেশের চলমান অস্থিরতার কারণে বুকিং বাতিল করেছেন। সাধারন সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্ষন্ত এ পর্যটন মৌসুম ধরা হয়ে থাকে।
সূত্র আরও জানায়, রাঙামাটি পর্যটন স্পটের মধ্যে রয়েছে, পর্যটনের ঝুলন্ত সেতু, শুভলং ঝর্ণা, রাজ বন বিহার,জেলা প্রশাসনের বাংলো, বালুখালী কৃষি খামার, টুক টুক ইকোভিলেজ, কাপ্তাই হ্রদের মনোরম নৌভ্রমন, আদিবাসীদের জীবনযাত্রা, কাপ্তাই জল বিদ্যূৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কর্ণফূলী পেপার মিলস্ ও কাপ্তাই জাতীয় উদ্যোন ইত্যাদি।
সম্প্রতি রাঙামাটির সরকারী পর্যটন স্পট এলাকায় সরেজমিনের সময় কোন পর্যটকের দেখা মিলেনি। দুএকজনের দেখা মিললেও তারা স্থানীয় লোকজন। পর্যটন মৌসুমকে কেন্দ্র করে রাঙামাটি সরকারী পর্যটন কর্তৃপক্ষ পর্যটন স্পটগুলো সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিসহ সংস্কারের কাজ করেছিল। কিন্তু দেশের চলমান অস্থিরতার কারণে পর্যটন ভরা মৌসুমে পর্যটক শুন্য। পর্যটক না আসায় এ ব্যবসার সাথে সংশি¬ষ্টরা হাতগুটিয়ে বসে রয়েছেন।
সরকারী পর্যটন স্পট এলাকার ভ্রাম্যমান ব্যাগ ও ফল বিক্রেতা রহিমা, বেবী চাকমা জানান, পর্যটক আসলে দুএকটা আয়-রোজগার হয়। কিন্তু কয়েক দিন ধরে পর্যটক না আসায় সেই আয় হচ্ছে না। তারপরই পর্যটক আসবে আশায় দোকান খুলে বসে রয়েছি। সরকারী পর্যটন ঘাটের বোট ইজাদার রমজান জানান, গত ৫ জানুয়ারী থেকে অবরোধের কারণে পর্যটক না আসায় লোকসানি গুনতে হচ্ছে এবং কর্মচারীরা হাতগুটিয়ে বসে রয়েছে।
জজ মোটেলের ব্যবস্থাপক মোঃ বিল্লা জানান, অবরোধ শুরু আগে প্রচুর পর্যটকের এসেছিল। অবরোধ শুরুর পর তার মোটেলে পর্যটক শুন্য রয়েছে।
হোটেল সুফিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম মুন্না বলেন, টানা অবরোধের কারণে তার হোটেলে সব রুম খালী। পর্যটন মৌসুমের জন্য পর্যটকরদের রুমের ডিসকাউন্টের ঘোষনা দেয়ার পরও কোন পর্যটকের দেখা মিলছে না।
রাঙামাটি সরকারী পর্যটন হলিডে কমপে¬ক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, চলমান অবরোধ ও হরতালের কারণে রাঙামাটিতে একেবারেই পর্যটক শুন্য। অবরোধ শুরুর অগে তার মোটেলে যারা অগ্রিম রুম বুকড করেছিলেন তারাও রুম বাতিল করেছেন। তিনি আরও জানান, পর্যটন মৌসুমকে সামনে রেখে রাঙামাটি সরকারী পর্যটন স্পট সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিসহ সংস্কার কাজ করা হয়েছে। কিন্তু পর্যটক শুন্য। তার মতে, গত ৫ জানুয়ারী থেকে এ পর্ষন্ত অবরোধের কারণে তার মোটেলে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা লোককাসানী গুনতে হচ্ছে। তবে দেশের স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করলে প্রতিমাসে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকার রাজস্ব আয় হয়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.