সোমবার রাঙামাটিতে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কর্মাসের শত বর্ষপুর্তি উপলক্ষে দিন ব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম সামিট সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সন্মেলনে নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে বর্হিবিশ্বের কাছে তুলে ধরে পর্যটন শিল্পকে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাঙামাটি শহরের অরণ্যেক পর্যটন কেন্দ্রে আয়োজিত দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম সামিট সন্মেলনের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাসির।
শত বর্ষপুর্তি কমিটির আহবায়ক সাংসদ এম এ লতিফের সভাপতিত্বে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্যে রাখেন মিশরের রাষ্ট্রদূত মোঃ ইজ্জাত, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুবুল আলম,বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্ট্রিজের সভাপতি সুদীপ ঘোষ, মিজোরাম চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্ট্রিজের সভাপতি কে লালহামিং টেংগ্যা প্রমূখ। এসময় চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের নেতৃবৃন্দ, চায়না ও জাপানের ডেলিগেটসসহ অন্যান্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে চ্যানেল টোয়েন্টিফোর সন্মেলনের সরাসরি সম্প্রচার করে।
বিকালে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান এমপি। চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্যে রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি র অ ম ওবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী এমপি, আওয়ামীলীগ নেতা আলাউদ্দীন নাসিম, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরুন নেওয়াজ সেলিম, সহ-সভাপতি শহীদ জামান আহম্মেদ ও চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক দিরুরুল আলম এমপি প্রমুখ।
ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম সামিট সন্মেলনের পাশাপাশি পাহাড়ী শিল্পীদের নিয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাহজাজাহন খান এমপি বলেন,পার্বত্য অঞ্চলের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আর এখানকার বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতিকে বিকশিত করে পর্যটন সম্ভাবনাকে গড়ে তুলতে হবে। এ সুবিধা সৃষ্টি করা গেলে দেশের পর্যটন শিল্পের আরো প্রসার ঘটবে।
তিনি অারও বলেন, সরকার ২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ হিসাবে ঘোষণা করেছে। এর আলোকে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজারের পর্যটনের উন্নয়নে যে কোন উদ্যোগকে সরকার সব রকম সহায়তা দেবেন বলেও উল্লেখ করেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে ভালবেসে, বাংলার মাটিকে ভালবেসে বাংলাদেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। বাংলার হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সকল জাতি ধর্ম-বর্ণ নৃ-গোষ্ঠীসহ সকলকে এক করে তিনি বাংলার স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন।
বাঙালী জাতিকে পাকিস্তানের কাছ থেকে মুক্ত করে পৃথিবীর বুকে একটি উন্নত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁকে হত্যার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার চেষ্টার শুরু হয়। একইভাবে দেশের অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করার চেষ্টাও করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়কে জয় করেছিলেন। কারোর কাছে তিনি মাথানত করেননি। বঙ্গবন্ধু যেমন কারোর কাছে মাথানত না করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। তাঁরই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আজকে দেশের অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নে যা কিছু করেছিলেন তার সামর্থ্য এবং নিজের অর্থে পদ্মা সেতু, পায়রা বন্দরসহ অনেক কিছু উন্নয়ন করেছেন।
তিনি বলেন, দেশের নতুন প্রজন্মকে দেশের ভিন্ন সৌন্দর্য্য না দেখে তাহলে দেশের প্রতি ভালবাসা মমত্ববোধ সৃষ্টি হবে না। বিভিন্ন ধরনের ধর্ম-বর্ণ মানুষের সঙ্গে যদি তারা সম্পৃক্ত না হলে তাদের মনের বিকাশ ঘটবে না। সেই কারণে আজকে পর্যটনের উপর সুযোগ করে দিতে হবে।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার উদ্যোগকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাসির বলেন,পার্বত্য অঞ্চল পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় অঞ্চল। এই অঞ্চলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কৃষ্টি সংস্কৃতিকে ধরে রেখে এই অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো গেলে পার্বত্য অঞ্চলে দেশী বিদেশ পর্যটকের আগমন আরো বেশী ঘটবে।
তিনি বলেন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। বড় বড় ব্যবসায়ীরা যদি পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে এগিয়ে আসেন সরকার অবশ্যই সহযোগিতা প্রদান করবে।
তিনি আরও বলেন, সাত বছরে বাংলাদেশের অনেক আমূল পরিবর্তন হয়েছে, দেশ অনেকদুর এগিয়েছে, দেশ এখন তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, বাংলাদেশ এখন আর কারো অবজ্ঞা করার মত নয়।
তিনি বলেন, ২০১৬ সালকে সরকার পর্যটন বর্ষ ঘোষনা করেছে আমরা যদি আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যগুলোকে বর্হিবিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারি তাহলে আমাদের দেশের জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তা সহায়ক ভুমিকা পালন করবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.