বান্দরবানের পর্যটনের অন্যতম আকর্ষন স্বর্ণজাদী বৌদ্ধ মন্দিরে পর্যটকদের পরিদর্শনের উপর আগামী ২০ফ্রেরুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে ধর্মীয় পুজারীদের জন্য বিশেষ অনুমতির সাপেক্ষে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন।
জানা গেছে, পর্যটন সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি বান্দরবান। প্রতি বছর এই জেলায় হাজারো পর্যটক ছুটে আসেন। ঘুরতে আসা পর্যটকদের মধ্যে আকর্ষণীয় একটি স্বর্ণজাদী। এই স্বর্ণজাদী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ও পূঁজারীদের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। নির্মিত হওয়ার পর থেকে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয় স্বর্ণজাদী। দর্শনীয় স্থান দর্শন করতে এসে স্বর্ণজাদীতে পা পড়বে না এমন পর্যটক নেই। এমন অনেক পর্যটক আছেন যারা স্বর্ণজাদী দেখতে দূর থেকে পাড়ি দিয়ে সেখানে যান।
স্বর্ণজাদীর কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বান্দরবানের বালাঘাটাস্থ পাহাড়ের চূড়াঁয় অবস্থিত স্বর্ণজাদী মন্দিরটি। সোনালী রঙের প্রবেল দিয়ে সুন্দর কারুকার্যে সাজানো হয়েছে এ স্বর্ণজাদীটি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ও পূঁজারীদের জন্য তীর্থস্থান হিসেবেও প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে এ স্বর্ণজাদীটি। শুধু তাই নয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে পর্যটকদের কাছে দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্বর্ণজাদী মন্দিরটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। স্বর্ণজাদীটি নির্মিত করা হয়েছে মূলত ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ও পূঁজারীদের উদ্দেশ্যে। বিভিন্ন সময়ে এই দর্শনীয় স্থানটি দেখতে দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক পা রেখেছেন স্বর্ণজাদীতে।
অপরূপ সৌন্দর্যের জন্য স্বর্ণজাদী দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমান পর্যটকরা। অনেক সময় সৌন্দর্য্য পিপাসুদের ভিড়ে ধর্মপ্রাণ পূঁজারীদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। দেখতে আসা পর্যটকরা বিভিন্ন সামগ্রী যত্রতত্র ফেলে রেখে যান। এমনকি পর্যটকরা স্বর্ণজাদীর মূলস্থানে জুতা পায়ে প্রবেশ করে থাকেন। অথচ স্বর্ণজাদীতে প্রবেশে মূল ফটকে পর্যটকদের উদ্দেশ্যে নির্দেশনা রয়েছে “জুতা পাঁয়ে প্রবেশ নিষেধ, ধর্মীয় পবিত্রতা রক্ষা করুণ”।
স্বর্ণজাদীর কর্তৃপক্ষ আরও জানান, চলতি মাসের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের দিকে একদল পর্যটক বেড়াতে যান স্বর্ণজাদীতে। পর্যটকরা জুতা পাঁয়ে স্বর্ণজাদীতে প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়। বাধা দেওয়ার স্বত্বেও জোর করে প্রবেশ করতে চাইলে পর্যটকদের সঙ্গে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে কিছু পর্যটক কয়েকজন ভিক্ষুকে শারীরিক আঘাতের চেষ্টা চালান।
পরে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সমস্যা সমাধান হয়। এছাড়া স্বর্ণজাদীতে দেখতে যাওয়া পর্যটকরা তাদের সঙ্গে নিয়ে আসা বিভিন্ন সামগ্রী যত্রতত্র ফেলে রেখে যান। ফলে ময়লার কারণে দূর্গন্ধ ভরে উঠে। আর পূঁজা করতে যাওয়া পূাঁজারীদের এই দূর্গন্ধে বিভ্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। যার কারণে র্স্বণজাদী কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে চলতি মাসের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে পর্যটকদের জন্য স্বর্ণজাদীর প্রধান ফটক বন্ধ রাখা হবে। আর এসব কথা বিবেচনা করে স্বর্ণজাদী কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য পর্যটকদের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ও পূঁজারীদের জন্য সব সময় খোলা থাকবে এ স্বর্ণজাদীটি।
স্বর্ণজাদীর প্রতিষ্ঠাতা ও বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু উ: পঞঞা জোত মহাথের জানান, পূঁজারীদের কথা বিবেচনা করে চলতি মাসের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের ভিড়ের কারনে স্বর্ণজাদীর পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন। তবে পূঁজারীদের জন্য সার্বক্ষনিক খোলা থাকবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.