অবশেষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর চাকমা ও মারমা সম্প্রদায়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষায় পাঠ্য-পুস্তক হাতে পেলো। রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে মাতৃভাষার পাঠ্য-পুস্তক বিতরণ করা হয়।
এদিকে, প্রথম পর্যায়ে পৌরসভার ভেতরে মারমা ও চাকমা ভাষার কিছু শিক্ষার্থীদের কাছে মাতৃভাষার পাঠ্য বই বিতরণ হলেও পর্যায়ক্রমে পুরো জেলায় মাতৃভাষার পাঠ্য বই বিতরণ করা হবে বলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানিয়েছে।
শহরের বঙ্গবন্ধু মুক্ত মঞ্চে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ যৌথভাবে আয়োজিত মাতৃভাষায় পাঠ্য-পুস্তক বিতরণ অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই মাতৃভাষায় বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ।
অনুষ্ঠানে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ণিবান চাকমা, পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল আবছার। এসময় জেলার প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং ছাত্র-ছাত্রীসহ অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের তথ্যমতে, এবারে বান্দরবান জেলায় এক হাজার ১২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মারমা ভাষায় ৭৫৯ সেট টিচার গাইড, ৫টি এক্সাসাইজ বুক, ২০টি বাফার সেম্পল এবং চাকমা ভাষায় ৭৫৯ সেট টিচার গাইড, ৫টি এক্সাসাইজ বুক ও ১০টি বাফার সেম্পল বই পাওয়া গেছে। এখনো ত্রিপুরা মাতৃভাষার বই না পৌছায় বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। তবে চলতি মাসের মধ্যে বিতরণ করা হবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে। বান্দরবান জেলার জন্য ৫ হাজার ১২১জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির শিক্ষার্থীদের জন্য বইয়ের চাহিদা দেয়া হয়েছে। পাওয়া গেছে এক হাজার ৫৫৮ জনের জন্য।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, প্রাক প্রাথমিক পর্যায়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিশুদের নিজ নিজ মাতৃভাষায় পাঠ্য পুস্তকে শিক্ষাদানের জন্য প্রথমবারের মতো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির মাতৃভাষায় পাঠ্য-পুস্তক বিতরণ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে পৌরসভার ভেতরে মারমা ও চাকমা ভাষার কিছু শিক্ষার্থীদের কাছে মাতৃভাষার পাঠ্য বই বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পুরো জেলায় মাতৃভাষার পাঠ্য বই বিতরণ করা হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ কিশোর সাহা জানান,একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে ১২৫টি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাতৃভাষায় প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পড়ানোর জন্য নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে প্রাক প্রাথমিক পর্যন্ত শিক্ষা দেওয়া হবে।
উল্লে্খ্য, নতুন বছরের প্রথম দিনে নতুন পাঠ্য বইয়ের সাথে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষার পাঠ্য বই বিতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু সময়মত মাতৃভাষায় পাঠ্য পুস্তক না পৌছায় রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে বিতরণ করা হলো।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.