পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা) বলেছেন, পার্বত্যাঞ্চলের সমস্যা সমাধানের জন্য পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এ চুক্তির ফলে পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের আইন হয়েছে। পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় গঠিত হয়েছে। কিন্তু এসব পরিষদের আইন অদ্যাবধি কার্যকর হতে পারেনি। চুক্তি অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলো হস্তান্তর করার কথা থাকলেও তা হস্তান্তর করা হয়নি। ফলে এ অঞ্চলের সাধারণ আইন-শৃংখলার মধ্যে নানাবিধ প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো বহুমূখী শাসন ব্যবস্থা চলছে। সেই বহুমূখী শাসন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা এগিয়ে যেতে পারে না।
শুক্রবার জুরাছড়ি উপজেলায় বনযোগীছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী ও পূর্নমিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বনযোগী ছড়া বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে আয়োজিত সূবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুরেশ কুমার চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জুরাছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উদয় জয় চাকমা, জুরাছড়ি সেনা জোন অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল কেএম ওবায়দুল হক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ হারুন রশিদ, শিক্ষাবিদ বিকাশ দেওয়ান ও বিদ্যালয়ের ট্রাষ্টির আহ্বায়ক শান্তশীল দেওয়ান। অন্যন্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেঘবর্ণ চাকমা, প্রাক্তন শিক্ষার্থী কৃষ্ণা চাকমা, প্রিয় কুমার চাকমা ও শ্রীলা তালুকদার প্রমূখ।
এর আগে বনযোগীছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বর্নাঢ্য র্যালী বের করা হয়। র্যালীটি চৌমুহনী প্রদক্ষিণ করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়। পরে জাতীয় সংগীত ও উদ্বোধনী সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান উদ্ধোধন করা হয়।
সন্তু লারমা আরো বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ শিক্ষা চাই, শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে চাই। আধুনিক বিজ্ঞান সম্মত শিক্ষা পেতে চাই। কিন্তু বাস্তবতা হল যে, শিক্ষার সাথে জড়িয়ে রয়েছে অর্থনীতি, যুক্ত রয়েছে শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা, যুক্ত রয়েছে সামাজিক তার বাস্তবতা।
আজকের পার্বত্যাঞ্চলের বুকে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক শাসনতান্ত্রিক, অর্থনৈতিকসহ তথা গোটা জীবন ধারায় দেখতে পাওয়া যায় অনেক হতাশা, নিরাশা, ভয়ভীতিসহ অনেক অনেক কিছুই দেখতে পায়। তাই পার্বত্যাঞ্চলের সেই শাসন ব্যবস্থায় যথাযথ শিক্ষা পাওয়া যায় না। পার্বত্য অঞ্চলের যে বাস্তবতা পাহাড়ে জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যারা বসবাস করছি সেই বাস্তবতা বিভিন্ন প্রশ্নের মূখোমুখি করে।
তিনি বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউএনডিপি`র পরিচালিত প্রকল্পর ২শ ২৭টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় অনেক দেরীতে হলেও সরকার জাতীয় করেণর জন্য ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে কিছু সংখ্যক বিদ্যালয়ের জাতীয় করনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাকীগুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.