আদিবাসীদের স্ব-স্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা সুনিশ্চিত করা এবং জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শব্দটি বাতিল করে আদিবাসী ব্যবহারের দাবীতে বুধবার রাঙামাটিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বর সামনে আয়োজিত ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচিতে কলেজের শিক্ষার্থী ও পিসিপি’র নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। এসময় মানববন্ধনে অংশগ্রহকারীরা বিভিন্ন দাবাী-দাওয়া সম্বলিত প্লেকার্ড প্রদর্শন করে। মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে পিসিপি’র রাঙামাটি কলেজ শাখার সভাপতি সুমিত্র চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিতি ছিলেন পিসিপি’র কেন্দ্রীয দপ্তর সম্পাদক অধিরাম চাকমা। বক্তব্যে রাখেন পিসিপি’র জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক রিন্টু চাকমা, পিসিপি’র রাঙামাটি কলেজ শাখার সহ-সভাপতি কমেশ চাকমা, হিল উইমেন্সফেডারেশনের কলেজ শাখার সাধারন সম্পাদক দীপা চাকমা, পিসিপি’র রাঙামাটি শহর শাখার সভাপতি পলাশ চাকমা।
সমাবেশে পিসিপি’র নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতির বৈচিত্র্যপুর্ণ একটি দেশ। এই দেশে ৪৫টির অধিক আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস। এই আদিবাসী জাতিগুলোর ধর্ম,বর্ণ,ভাষা,সংস্কৃতি, সমাজ ব্যবস্থা, ভূমি ব্যবস্থাপনা, জীবন-জীবিকা, ইতিহাস ও ঐতিহ্য দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী থেকে সম্পূর্ন পৃথক। প্রতিনিয়ত আগ্রাসনে স্বীকার হয়ে আজ বিলুপ্ত প্রায়।
পিসিপি’র নেতৃবৃন্দ আরও বলেন,আদিবাসীদের পক্ষ থেকে স্ব-স্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালু করার প্রবল দাবীর সত্বেও আজ অবধি তার প্রতীয়মান উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। মাতৃভাষায় শিক্ষার অভাবে প্রতি বছর হাজার হাজার শিশু প্রাথমিক স্তর থেকে ঝড়ে পড়ছে। তাই যে দেশের জনগণ মাতৃভাষায় স্বীকৃতির জন্য জীবন উৎস্বর্গ করেছেন যা অন্যান্য দেশের উদাহরণ নেই,সেই দেশে আজ আদিবাসী জনগন উপেক্ষিত ও বঞ্ছিত এবং বিলুপ্ত প্রায়। এদেশের আদিবাসী শিক্ষার্থীরা যদি শিক্ষাই শিক্ষিত হয় তাহলে জাতির জন্য তথা দেশের জন্য সম্পদ ও মঙ্গল দায়ক হবে। তাই আদিবাসীদের মাতৃভাষা রক্ষার জন্য এবং দেশের বৈচিত্র্যতা ও অবদান রাখার জন্য প্রয়োজন স্ব-স্ব মাতুভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন সুনিশ্চিত করা।
বক্তারা পার্বত্য চুক্তির দীর্ঘ ১৮ বছরেও বাস্তবায়িত না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা যেমনি সুষ্ঠুভাবে সমাধান হয়নি তেমনি শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশও সৃষ্টি হয়নি বলে অভিযোগ করে অবিলম্বে আদিবাসীদের স্ব-স্ব মাতৃভাষার মাধ্যামে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন সুনিশ্চিত করা, জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শব্দটি বাতিল করে আদিবাসী ব্যবহার ও পার্বত্য চুক্তির পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবী জানান।
অন্যথায় পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসাধারণকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.