পার্বত্যাঞ্চলের দশ ভাষাভাষি ১৩টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বার অবহেলিত শিশুদের শিক্ষায় এগিয়ে নিতে শনিবার রাঙামাটিতে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে ঐতিহ্যবাহী মোনঘর আবাসিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্ধোধন করা হয়েছে।
ডগলাস এ ক্যাম্পবেল ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে দুই কোটি ১৫ লাখ টাকার ব্যয়ে এ তিন তলা বিশিষ্ট ভবনের নির্মাণ করা হয়।
বিদ্যালয় ভবন প্রাঙ্গনে মোনঘর বিদ্যালয় নতুন ভবন উদ্ধোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্ধোধক ছিলেন ডগলাস এ ক্যাম্পবেল ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ভেনাঃ মুজিন সুনিম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আবু সাঈদ চৌধুরী। মোনঘর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রীমৎ শ্রদ্ধালংকার মহাস্থবিরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা। বক্তব্যে রাখেন মোনঘর আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝিমিত ঝিমিত চাকমা।
মোনঘরের কার্যক্রম ও নতুন বিদ্যালয় ভবন সম্পর্কে বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্যে রাখেন মোনঘর কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক কীর্তি নিশান চাকমা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মোনঘর শিশু সদনের নির্বাহী পরিচালক আশোক কুমার চাকমা। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয় প্রকৌশলী প্রতিপদ দেওয়ান, রুপন কুমার চাকমা ও পুষ্পধন চাকমাকে। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, মোনঘরের কর্মকর্তা,এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সংগীত ও মোনঘর সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু করা হয়। এর আগে বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে ফলক উন্মোচন করেন ডগলাস এ ক্যাম্পবেল ফাউন্ডেশনের সভাপতি ভেনাঃ মুজিন সুনিম। এরপর তিনিসহ অন্যান্য অতিথির বিদ্যালয় ভবন ঘুরে ঘুরে দেখেন। পরে বিদ্যালয়ের পাশে ভেনাঃ মুজিন সুনিম একটি বৃক্ষ রোপণ করেন।
এছাড়া বিকালে মোনঘর আবাসিক ক্যাম্পাস এলাকায় এলইডি লাইট উদ্ধোধন করেন এমেলি ওয়ালটার। এসময় মোনঘর কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি সুকুমার দেওয়ানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যায় মোনঘর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালের দিকে রাঙামাটি শহরের রাঙ্গাপানি এলাকায় পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৩টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তৃণমূল পর্যায়ের অনাথ, অসহায়, অবহেলিত ও ছিন্নমূল শিশুদের শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়ে নিতে এ মোনঘর শিশু সদন প্রতিষ্ঠিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার ক্ষেত্রে অবদান রাখায় এ ঐতিহ্যবাহী মোনঘর শিশু সদনটি পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি নিকেতন হিসেবেও পরিচিত।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.