পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহারদুর উশৈসিং এমপি শিক্ষা ছাড়া সমানের দিকে এগুনোর আমাদের কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষায় ছেলে-মেয়েদের শিক্ষায় এগিয়ে নিতে হলে দলমত নির্বিশেষে পার্বত্য এলাকায় কল্যাণের জন্য যারা নেতৃত্ব দেন তাদেরকে অনেক কিছুই রাজনীতি আওতায় না এনে খোলা মন নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে খুবই আন্তরিক বলে আজকে যে উপজেলা ও এলাকায় বিদ্যালয় নেই সেখানে বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন। সর্বোপরি উচ্চতর শিক্ষার জন্য তিন পার্বত্য জেলার জন্য ইতোমধ্যে মেডিকেল কলেজ চালু হয়েছে এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয় স্থাপনের কাজ চলছে। পার্বত্য এলাকায় দেশের বোঝা নয়, দেশের জন্য সম্পদ। এ অঞ্চলের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষায় আলোয় আলোকিত করতে পারলে ভবিষ্যতে তারা দেশ ও জাতির সেবা করবে।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ দুই যুগ ধরে যে সংঘর্ষ,সংঘাত,সন্দেহ অবিশ্বাস চলে আসছিল তা বন্দুক দিয়ে ও সেনা বাহিনী দিয়ে সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হয়নি। সরকার মুল সমস্যাকেকে উপলদ্ধি করতে পেরে তা আস্থায়, বিশ্বাস, একজন আরেকজনের কথা গুরুত্ব দিয়ে তার সমাধান করা যায় তার প্রমাণ হচ্ছে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি। তবে এখানে সমস্যা থাকবে কিন্তু তার সমাধানের পথ খোলা রয়েছে। কঠিন সমস্যা সমাধান আমরা করতে পেরেছি। সামনে দিনগুলোতে সমস্যা থাকলে তার সমাধান করবো। কিন্তু আমরাদের ছেলে-মেয়েদের আন্ধকারে রাখতে পারবো না।
শুক্রবার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রবর্তিত সপ্তম শ্রেনীর বৃত্তিপ্রাপ্তদের বৃত্তি, সনদপত্র ও ক্রেস প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রাঙামাটি সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট মিলায়তনে অনুষ্ঠিত বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জাকির হোসেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চিংকিউ রোয়াজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলজার আহমদ খান। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য অংসুই প্রু চৌধুরী। শিক্ষকদের মধ্যে বক্তব্যে রাখেন রাাণী দযাময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিক ও ককাচালং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভদ্রসেন চাকমা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি ২০১৪ সালের সপ্তম শ্রেনী বৃত্তিপ্রাপ্তদের মাঝে বৃত্তি, সনদপত্র ও ক্রেস প্রদান করেন। এর মধ্যে ১২জন ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্তকে তিন হাজার টাকা করে এবং ২৪ জন সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্তকে দুই হাজার টাকা করে বৃত্তি দেয়া হয়েছে। তবে জেলা পরিষদের প্রবর্তিত সপ্তম শ্রেনী বৃত্তি পরীক্ষায় ১৭০ জনের জন্য বৃত্তি নির্ধারিত থাকলেও অন্যন্য মেধা তালিকায় একজন শিক্ষার্থী বৃত্তি পায়নি। এছাড়া দশ উপজেলার মধ্যে শুধুমাত্র রাঙামাটি সদরে ২১ জন, কাপ্তাইয়ে ১৪ জন এবং লংগদু উপজেলা থেকে মাত্র ১জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জেলা পরিষদের প্রবর্তিত সপ্তম শ্রেনী বৃত্তি পরীক্ষায় ১৭০ জনের জন্য বৃত্তি নির্ধারিত থাকলেও অন্যন্য মেধা তালিকায় একজন শিক্ষার্থী বৃত্তি না পাওয়ায় এবং মাত্র ৩৬ শিক্ষাথী বৃত্তিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সপ্তম শ্রেনী বৃত্তি পরীক্ষায় সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে এরকম খারাপ রেজাল্ট কেন? বেসরকারী বিদ্যালয়গুলো রেজাল্ট ভাল করেছে। সরকারী বিদ্যালয়গুলোতে সমস্ত কিছু সুযোগ-সুবিধা থাকার সত্বেও কেন এ রকম খারাপ রেজাল্ট? তাই ভাল রেজাল্ট করার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আরো বেশী উদ্যোগী হতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আগামীতে সপ্তম শ্রেনী বৃত্তি পরীক্ষার জন্য যারা অন্যন্য মেধা বৃত্তি পাবে তাদের ১৫ হাজার টাকা এবং যেসব বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষায় সবচেয়ে ভাল করবে তার জন্য ২৫ হাজার টাকা পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে দেয়ার ঘোষনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা জলা পরিষদের প্রবর্তিত সপ্তম শ্রেনী বৃত্তি পরীক্ষায় ১৭০ জনের জন্য বৃত্তি নির্ধারিত থাকলেও অন্যন্য মেধা তালিকায় একজন শিক্ষার্থী বৃত্তি না পাওয়ায় এবং মাত্র ৩৬ শিক্ষাথী বৃত্তিতে অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ফলাফলের দিক দিয়ে বেসরকারী বিদ্যালয়গুলো ভাল করেছে। আর সরকারী বিদ্যালয়গুলো সমস্ত কিছু সুযোগ সুবিধা পেয়েও ভাল ফলাফল করতে পারছে না। তাই আজকে যারা বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করনের জন্য দাবী করছে ওইসব বিদ্যালয় সরকারীকরণ করলে ফলাফল একই অবস্থা দাড়াবে। তিনি বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণ না করার পক্ষে মত দেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.